নার্স হওয়া হলো না দুই বান্ধবী সানজিদা ও ইভার

স্বপ্ন ছিল মানুষের সেবা করার। সেজন্য নার্সিং কলেজেও ভর্তি হয়েছিলেন। কিন্তু সেই স্বপ্ন মেলে ধরা হলো না। আচমকাই হারিয়ে গেল সব, গেল প্রাণটাও। মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে দুজন সিলেট নার্সিং কলেজের ছাত্রী। তাদের নাম ইয়াসমিন ইভা (২০) ও সানজিদা (২০)। দু’জনই তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী। ঢাকায় একটি প্রশিক্ষণে অংশ নিতে যাচ্ছিলেন ইভা-সানজিদা।

সিলেট দক্ষিণ সুরমার আব্দুল্লাহপুর গ্রামের বাসিন্দা ইয়াসমিন ইভা। তার বাবার নাম আব্দুল বারী। অন্যদিকে সানজিদার বাড়ি বাগেরহাট জেলায়। ইভা ও সানজিদা খুব ভালো বান্ধবী ছিলো বলে জানা গেছে। তাদের মরদেহ সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।

সূত্রের তথ্য, রাত তখন প্রায় পৌনে ১২ টা। যথা নিয়মেই শোনা যাচ্ছিল ট্রেন চলার শব্দ। স্থানীয় ইসলামাবাদ, নন্দনগর, মহলালসহ আশপাশের গ্রামবাসী অনেকেই তখন ঘুমে। আবার কেউ কেউ নিচ্ছিলেন ঘুমের প্রস্তুতি। বরমচাল রেলস্টশন সংলগ্ন কালামিয়া (ফুলেরতল) বাজারের অধিকাংশ ব্যবসায়ী দোকানপাট বন্ধ করে ফিরছিলেন নিজ বাড়িতে। ওই ব্যবসায়ীদের অনেকেই প্রত্যক্ষ করছিলেন তাদের চিরচেনা ওই ট্রেনটির অচেনা দ্রুতগতি আর সাইরেন। হঠাৎ এমন দ্রুতগতি আর বিদঘুটে শব্দ শোনে তখন অনেকেরই সন্দেহ জাগে। কিছু দূর যেতে না যেতেই হঠাৎ ট্রেনের বিকট শব্দ।

সাথে সাথেই পেছনের বগিতে অগ্নিস্ফুলিঙ্গ আর ধোয়ার কুন্ডলি। এমন বিকট শব্দ আর দৃশ্যে অজানা শঙ্কা জাগায়। বাতাশেই ভেসে আসে যাত্রীদের গগণ বিদারী চিৎকার। এমনটিই জানাছিলেন ঘটনাস্থলে উদ্ধার কাজে আসা স্থানীয় লোকজন। দূর্ঘটনার পর আহতদের চিৎকারে আশপাশের গ্রামবাসী দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে এসে উদ্ধার তৎপরতা চালায় এবং ফায়ারসার্ভিস ও পুলিশকে দুর্ঘটনার খবর জানায়।

দুর্ঘটনার ফলে সিলেটের সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ফায়ার সার্ভিসের ১৩টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে। স্থানীয় জনতাও উদ্ধারকাজে যোগ দিয়েছে। ঘটনা তদন্তে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আজ বিকেল ৫টা নাগাদ রেল চলাচল স্বাভাবিক হবে বলে জানিয়েছেন রেল সচিব।


সর্বশেষ সংবাদ