নামাজে থাকায় বেঁচে গেল হাফেজিয়া মাদ্রাসার অর্ধশত শিক্ষার্থী

অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে গেছে বই-খাতাসহ প্রয়োজনীয় সবকিছু
অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে গেছে বই-খাতাসহ প্রয়োজনীয় সবকিছু  © সংগৃহীত

খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা উপজেলায় অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে গেছে হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানার আবাসিক শিক্ষার্থীদের বই-খাতা ও পোশাকসহ প্রয়োজনীয় সবকিছুই। বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলা সদরের নতুনপাড়া ক্বেরাতুল কোরআন ক্বারিমিয়া হাফেজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানায় এ ঘটনা ঘটে। তবে ঘটনার সময় শিক্ষার্থীরা মসজিদে আসরের নামাজরত থাকায় কোনো ধরনের হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

মাদরাসা ও এতিমখানার পরিচালক হাফেজ মো. নেছার উদ্দিন জানান, শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা আসরের নামাজ পড়তে মসজিদে গেলে হঠাৎ করে আবাসিক ভবনে আগুনের সূত্রপাত হয়। কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই মুহূর্তের মধ্যেই আগুনের লেলিহান শিখা ভবনজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। কিছুক্ষণের মধ্যেই পুরো কক্ষ আগুনের ধোঁয়ায় অন্ধকার হয়ে যায়। এসময় শিক্ষার্থীদের বই, পোশাক, খাবারসহ সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে যায়। তিনি জানান, আবাসিক ভবনে ৫০ জনেরও বেশি শিক্ষার্থী থাকত।

আগুন লাগার পরপরই ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর সহায়তায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। ততক্ষণে পুড়ে ছাই হয়ে যায় ছাত্রদের বই-খাতা, কাপড়, বেডিং, ট্রাংক ও আসবাবপত্রসহ সবকিছু। বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে জানিয়েছে মাটিরাঙ্গা ফায়ার সার্ভিস ইউনিটের স্টেশন অফিসার মো. সাদেকুর রহমান।

অগ্নিকাণ্ডে প্রাথমিকভাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করা না গেলেও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ পাঁচ লাখ টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন মাটিরাঙ্গা পৌরসভার ২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোহাম্মদ আলী।তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের বেশির ভাগই গরিব ও অসহায়। যে পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে, সরকারিভাবে সাহায্য পাওয়া না গেলে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবন এখানেই থেমে যাবে। হাফেজিয়া মাদরাসা ও এতিমখানার পাশে দাঁড়ানোর জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

এদিকে, অগ্নিকাণ্ডের পরপরই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) বিভীষণ কান্তি দাশ, মাটিরাঙ্গা পৌরসভার মেয়র মো. শামছুল হক ও মাটিরাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সুবাস চাকমা। এছাড়াও উপসহকারী প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. রুহুল আমিন উপস্থিত ছিলেন।

এসময় শিক্ষার্থীদের পাঠ্য বইয়ের ব্যবস্থা করার আশ্বাস প্রদান করে মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) বিভীষণ কান্তি দাশ শিক্ষার্থীদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে বরাদ্দ পাওয়া ৬০টি কম্বল প্রদান করেন। এছাড়াও খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক নগদ টাকা ও অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে যাওয়া ঘর মেরামতে প্রয়োজনীয় বরাদ্ধ প্রদানের আশ্বাস দিয়েছেন বলে জানান মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) বিভীষণ কান্তি দাশ।


সর্বশেষ সংবাদ