এমপিওর আওতায় আসছেন মাদ্রাসার ২১ হাজার শিক্ষক

  © ফাইল ফটো

সদ্য ঘোষিত প্রস্তাবিত বাজেটে বেসরকারি স্কুল ও কলেজের পাশাপাশি মাদরাসার শিক্ষকরাও সুখবর পাচ্ছেন।  এমপিওভুক্ত হচ্ছেন। এবার ৪৩১২টি ইবতেদায়ি মাদরাসার সাড়ে ২১ হাজার শিক্ষক এমপিও সুবিধা পেতে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে। এছাড়া বেসরকারি শিক্ষকরা বৈশাখী ভাতা এবং পাঁচ শতাংশ ইনক্রিমেন্টও পেতে যাচ্ছে। এ দাবি আদায়ে দীর্ঘদিন ধরেই আন্দোলন করে আসছিলেন বেসরকারি শিক্ষকরা।

জানা গেছে, ১৯৮৪ সালে প্রাথমিক শিক্ষা বিস্তারে বেসরকারি বিদ্যালয় ও ইবতেদায়ি মাদরাসা প্রতিষ্ঠা শুরু হয়। এর মধ্যে ২৬ হাজার ১৯৩ প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ হয়। কিন্তু অভিন্ন আইনে প্রতিষ্ঠা হলেও বঞ্চিত থাকে ইবতেদায়ি (পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত) মাদরাসা। তারা মাত্র ৫শ’ টাকা করে মাসোহারা পেয়ে আসছেন। তবে ২০১০ সালে মাসোহারা এক হাজার টাকা করা হয়। পরে তা বাড়িয়ে দেড় হাজার টাকা করা হয়। তৃতীয় দফায় বাড়িয়ে সহকারী শিক্ষকদের (মৌলভী) সম্মানী দুই হাজার ৩০০ আর প্রধান শিক্ষকদের আড়াই হাজার টাকা করা হয়।

সূত্র জানিয়েছে, নতুন তিন হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির বিষয়টি অনুমোদন করেছেন প্রধানমন্ত্রী। সেগুলোর সঙ্গে চার হাজার ৩১২টি ইবতেদায়ি মাদরাসা এমপিওভুক্ত করার সারসংক্ষেপও অনুমোদন করেছেন প্রধানমন্ত্রী। এতে বলা হয়েছে, স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা আলাদা নীতিমালা-২০১৮ তৈরি করা হয়েছে। অবশ্য এমপিও নীতিমালায় স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা অন্তর্ভুক্ত নেই। এ এ ধরনের প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করতে বছরে ৩১০ কোটি ৯৭ লাখ ৭১ হাজার ২৮০ টাকা  প্রয়োজন হবে।

এক মাস আগে গত ৮ মে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এ প্রস্তাব চূড়ান্ত করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠায়। প্রধানমন্ত্রী এ প্রস্তাব ১২ জুন অনুমোদন করেন। এর ফলে এসব প্রতিষ্ঠানের ৫ জন করে শিক্ষকসহ মোট ২১ হাজার ৫৬০ এমপিওভুক্ত হওয়ার পথ সুগম হয়েছে। প্রস্তাব অনুযায়ী শিক্ষকরা মাসিক মাসোহারার পরিবর্তে জাতীয় বেতন স্কেলের বিভিন্ন গ্রেডে বেতন পাবেন। সেই অনুযায়ী মাদরাসা প্রধানরা ১১ কোডে ১২ হাজার ৫০০ টাকা করে পাবেন।

এ ছাড়া দেড় হাজার টাকা বাড়িভাড়া ও চিকিৎসা ভাতা এবং আড়াই হাজার টাকা বৈশাখী ও ছয় হাজার ২৫০ টাকা উৎসব-ভাতা পাবেন। আর মৌলভীরা পাবেন ১৬ কোডে ৯ হাজার ৩শ’ টাকা করে। এ ছাড়া মাসে বেতনের সঙ্গে দেড় হাজার টাকা করে বাড়িভাড়া ও চিকিৎসা এবং ১৮৬০ টাকা করে বৈশাখী ও ৪৬৫০ টাকা উৎসব-ভাতা পাবেন।

যদিও এবারের বাজেটে শিক্ষা খাতে বরাদ্দ গত বছরের তুলনায় সার্বিকভাবে কমেছে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে এ বরাদ্দের পরিমাণ বাজেটের মাত্র ১০ দশমিক ২৬ শতাংশ। অথচ  শিক্ষার দুই মন্ত্রণালয়ে চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের ১০ দশমিক ৪৯ শতাংশ ব্যয় হয়েছে।

শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেছেন, ‘তথা সার্বিক উন্নতির মাধ্যমে দেশকে মধ্যম আয়ে পৌঁছানো আমাদের মূল লক্ষ্য। সে অনুযায়ী সরকার এবারের বাজেটে শিক্ষার জন্য বরাদ্দ করেছে। এ জন্য মানসম্মত ও কারিগরি শিক্ষার প্রতি জোর দেয়া হয়েছে। শিক্ষা নিয়ে কাজ করা সব মন্ত্রণালয়ের বাজেটের দিকে নজর দিলে দেখা যাবে বরাদ্দ শতাংশের হিসাবে গত বছরের চেয়ে অনেক বেড়েছে।’


সর্বশেষ সংবাদ