কবিতা: অর্থনৈতিক পেঁয়াজের রাজনীতি

  © টিডিসি ফটো

গিন্নি আমার সেই চটেছে বেজায় আগুন মনে,
প্রেসার বেড়ে হাই হয়েছে পেঁয়াজের দাম শুনে।
বাজার চড়া,ভাষণ কড়া, রান্না ঘরের তাপ
ব্যবসায়ীদের বংশ তুলে দিচ্ছে অভিশাপ।

আমি কেবল যাচ্ছি শুনে নিরেট ভদ্রলোক
কী করে যে এই অবেলায় সারাবো এই রোগ।
খাবার বসে তালিকাতে চোখ যে ছানাবড়া
ডাল রেঁধেছে, শাক ভেজেছে সব যে পেঁয়াজ ছাড়া।

ওমা! একি ডিম ভাজিতেও পেঁয়াজ কোথায় গেলো
খাবারের এই তালিকাতে চোখ যে ছলছল।
গিন্নি আমার পাশে বসে মিষ্টি হাসি হেসে
শুধালো সে ঠাণ্ডা মাথায় একটু ঝেড়ে কেশে।

শোন তবে বলছি তোমায় পেয়াজ খাওয়া ছাড়ো
তালিকাতে আছে অনেক মশলাপাতি আরো।
এক পেঁয়াজে কী আসে যায়, খাবার আগে পরে
এসব শোনে মন আর মেজাজ যাচ্ছে সবই চড়ে।

শুধালো সে বলছি শোন, পেঁয়াজের যা দাম
এই কটা দিন মনের ভুলেও নিও না এই নাম।
তার চেয়ে বরং এ কয়দিনে পেঁয়াজ খাওয়া ছেড়ে
আগামী বার ছাড়বো রসুন দাম যদি যায় বেড়ে।

তারপরে সব একে একে ছাড়বো মরিচ লবণ
ভাবতে পারো কত্ত সহজ হয়ে যাবে জীবন।
হাসবো নাকি কাঁদবো আমি খাবার মুখে তুলে
রান্নাবান্নার বিচ্ছিরি স্বাদ সব যে গেছে জ্বলে।

ভাবছি তবু বউয়ের কথা নয়তো খুবই মিছে
আমারই তো বাঁচবে খরচ ঠেকায় আমায় কিসে।
আমার মত দেশ ও জাতি পেঁয়াজ খাওয়া ছাড়ো
সংসারের আয় উন্নতি বেড়ে যাবে আরো।

মধ্য আয়ের দেশে বসে ইলিশ দেবো বেচে
ফারাক্কার সব পানি নেবো বন্যায় ভেসে ভেসে।
কৃষি পণ্যের দিচ্ছি না দাম, তাই ফলে না চাষী
দাদার দেয়ার ভরসা করে থাকি বারো মাসি।

দাদারা তাই ইচ্ছেমত যা খুশি যায় কয়ে
আমাদের ও এতদিনে যাচ্ছে সবই সয়ে।
পাট গেছে, চামড়া গেছে ধান চাষীদের ফাঁসি
এবার বাঙাল ভারত থেকে কিনবে কান্না হাসি।

সেটাও যেদিন বন্ধ হবে চেতনা খাবো কিনে
সকল কিছুই সয়ে যাবো একাত্তরের ঋণে।

 

লেখক: নাট্যাভিনেতা ও কবি
ই-মেইল: kabilsadi@gmail.com


সর্বশেষ সংবাদ