আমার বড় পরিচয় ডাক্তার, গুজব নিয়ে ভাবতেও চাই না

  © টিডিসি ফটো

গত এক দশক ধরে দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থাকে মানুষের কাছে সহজ করার কাজ করছিলেন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী ডা. ফেরদৌস খন্দকার। কখনও অনলাইনে, কখনও অফলাইনে। চিকিৎসা পরামর্শ দিয়েছেন ইউটিউবেও। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের বাঙালি কমিউনিটিতে করোনা প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন তিনি। তার অংশ হিসেবে তিনি বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে আসতে চাইলে তাকে নিয়ে শুরু হয় নতুন বিতর্ক। এরপর দেশে এসেছেন কোয়ারেন্টিনে ছিলেন। কোয়ারেন্টিন শেষে তার নির্দিষ্ট সময় শেষ হয়ে যাওয়ার পর তিনি যখন যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্যে পাড়ি দেবেন; ঠিক তার আগে দেশের বেসরকারি টিভি চ্যানেল নাগরিক টিভির মুখোমুখি হয়েছেন। জানিয়েছেন তার অজানা অনেক কথা। দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের পাঠকদের জন্য তা তুলে ধর হলো—

প্রশ্ন: সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে, চায়ের টেবিলের আড্ডায়, ১৭ কোটি বাঙালি ছাপিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী বাঙালিদের মাঝে সর্বত্র ডা. ফেরদৌস খন্দকার একটি নাম যেটি আলোচিত হয়েছে। কেন আপনাকে নিয়ে এত তর্ক-বিতর্ক?
ফেরদৌস খন্দকার: আমি আসলে প্রথম থেকে ইতিবাচক উত্তর দিতে চেয়েছি। আমি বরাবরই একজন মানুষ হতে চেয়েছি। চিকিৎসক কিনা সেবক কিনা অন্যান্য সব জিনিস হচ্ছে পরে। তাই আমি মানুষ হিসাবে নিজেকে পরিচিত করতেই বেশি পছন্দ করি।
আমি যখন প্রথম যুক্তরাষ্ট্রে যাই, সেখানে যে প্রথম বেতন পাই আমি সেই বেতনের অংশ বাংলাদেশকে দান করেছি। আমার দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে দেশ মাতৃকার জন্যই আমি এটি করেছি। প্রথম দিন থেকেই আমি আমার গ্রামে গর্ভবতী মায়েদের কীভাবে সাহায্য করা যায়; এগুলোর ব্যাপারে অনেক চিন্তা করেছি। গত ২০ বছরে আমি প্রতি বছর প্রায় ৩-৪ বার নিজে দেশে এসেছি। দেশে এসে এক সপ্তাহ থেকে কাজ করে চলে গিয়েছি। কাউকে দেখানোর প্রয়োজন মনে করিনি। পাশাপাশি গত ৪-৫ বছর কীভাবে বাংলাদেশের মানুষ স্বাস্থ্য সংরক্ষণ করতে পারে সে ব্যাপারে ফেসবুক-ইউটিউবে শত শত ভিডিও বানিয়েছি। এটির মাধ্যমে আমি চেয়েছি, যাতে করে মানুষ তাদের স্বাস্থ্যের একটুখানি হলেও উন্নতি করতে পারে।
আমি পরিচিত মুখ প্রথম থেকেই। কি একটি কারণে যেন মানুষ এ করোনার সময়ে আমাকে একটু বেশি করে দেখতে পেল। আসলে আমি করোনার প্রথম দিক থেকেই মানুষের মধ্যে যে একটা হাহাকার দেখতে পেয়েছি এটি মেনে নিতে পারিনি। যে কারণে আমি নিউইয়র্কে বাংলাদেশি কমিউনিটির কল্যাণে প্রথম দিন থেকেই ঝাঁপিয়ে পড়ি।

প্রশ্ন: বলা হচ্ছে আপনি মাউন্ট সিনাই হাসপাতালে কোন কাজই করেন না। আপনি ওখানকার কোন চিকিৎসকই নন। কথাটা কি সত্য?
ফেরদৌস খন্দকার: এটা ওপেন সিক্রেট। আপনি মাউন্ট সিনাই হাসপাতালে যোগাযোগ করেন। আমার আইডি আছে আইডি দেখেন, আমি কখন গিয়েছি সেটি দেখেন। যুক্তরাষ্ট্রে কোন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজ করতে হলে হাসপাতালের অধিভুক্ত হয়ে কাজ করতে হয়। এটিই নিয়ম। যারা এ প্রশ্নগুলো করছেন এসব অবান্তর করছেন।

প্রশ্ন: আপনাকে বলা হচ্ছে খন্দকার মোশতাকের ভাগ্নে। আপনি কর্নেল ফারুক রশীদের খালাতো ভাই। আমরা জানি আপনার ছয়জন মামা। কেন আপনাকে নিয়ে এ তর্কটা উঠলো?
ফেরদৌস খন্দকার: খন্দকার মানেই যে খন্দকার মোশতাকের আত্মীয় হবে সেটি তো ঠিক নয়। মানুষ কেন এগুলোকে পাত্তা দেবে আমি বুঝতে পারছি না। হ্যাঁ, খন্দকার মোশতাক কুমিল্লার। আমার থেকে প্রায় ৫০ মাইল দূরে। আমি তার এলাকায় জীবনেও যাইনি। আমার পরিবারের কোন সদস্যও তাকে চেনে না। খামাখা এগুলো বলে মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি করার কোন প্রয়োজন নেই।

প্রশ্ন: আপনার একজন মামার নাম মোশতাক আমরা এরকমটি শুনেছি। বিষয়টি কি সত্য?
ফেরদৌস খন্দকার: আমার পঞ্চম মামা মোশতাক আহমেদ। উনি এখনো জীবিত আছেন। উনি পেশায় একজন ইঞ্জিনিয়ার। বস্টনে থাকেন। ভালো মানুষ উনি।

প্রশ্ন: শোনা যাচ্ছে, নিউইয়র্কে বাঙালি কমিউনিটিতে রাজনীতির কোন বিষয় নিয়ে ঝামেলা রয়েছে। সেখানেও আপনার কিছু শত্রু তৈরি হয়েছে। তারাই আপনার বিরুদ্ধে এসব গুজব ছড়িয়েছে। বিষয়টি কি ঠিক?
ফেরদৌস খন্দকার: সত্য। এইযে ধরেন যে অভিযোগগুলো করা হচ্ছে এগুলো বানানো অভিযোগ। গত দেড় বছর ধরে এগুলো চলছে। মানুষ আমাকে নিয়ে রাজনীতি করতে চায়। কেউ আমাকে এ দল বলে, কেউ সেদল বলে। হয়তো এগুলো নিয়ে যতবেশি উনারা আলোচনা রাখতে পারবেন ততবেশি উপকারী হবেন। আমি যদি বলিও যে আমি নিউইর্য়ের রাজনীতির প্রতি আগ্রহী না তারপরেও তারা ছাড়বে না।
তাদের এসব নিয়ে আলোচনার একটা কারণ আছে। ধরুন, আমি কোন মিটিংয়ে গেলাম। সমস্ত আলো আমার দিকে আসে। স্বাভাবিকভাবে আমার অনেক শুভাকাঙ্ক্ষী থাকায় সেখানে আমি অনেক বেশি সাপোর্ট পাই। দেখা যায় যে, এখানে যারা আলো বঞ্চিত মানুষ থাকে তারাই আমার শত্রু হয়ে যায়। আমি এরকম ২-৩ টি রাজনৈতিক মিটিংয়ে গিয়েছি; তাতেই তাদের এতো কষ্ট হচ্ছে। আমি তো বলছি না আমি নেতা হতে এসেছি। আমি একজন সাধারণ কর্মী হিসেবে আমার মত করে কাজ করতে চাই। আমাকে এটিই করতে দেন। আমি ক্ষমাপ্রার্থী। আপনারা কেন এগুলো নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা করছেন? আমি ডাক্তার, আমি হেলথ প্রমোটর, আমি একজন মানুষ।

প্রশ্ন: অনেককে বলতে শুনি, আপনি আলোচনায় থাকতে পছন্দ করেন। আপনি আপনার প্রচার করতে অনেক ভালোবাসেন। যার কারণে বিষয়গুলো নিয়ে বিতর্ক তৈরি হচ্ছে। কথাটা আসলে কেমন ছিল?
ফেরদৌস খন্দকার: অবশ্যই। যিনি প্রশ্ন করেছেন তাকে বলি, আমি গত ২০ বছর ধরে বাংলাদেশে ৩-৪ মাসে একবার আসি। আমাকে কেউ দেখেছেন? তাদের এ প্রশ্নটি করার কোন অধিকার নেই। অবশ্যই আমি ভিডিও মাধ্যমে হেলথ প্রমোট করি। গত ৪ বছর ধরে এটি করে আসছি। যার মাধ্যমে আমার এত লক্ষ লক্ষ অনুসারী। এটিকে আপনি যদি লাইমলাইটে আসতে চাই বলেন, তাহলে বলবো আপনি চোখে দেখছেন না। মানুষের কাছে স্বাস্থ্য বার্তা নিয়ে যাওয়ার অধিকার আমার আছে। এটিকে আমি লাইমলাইট বলব না।

প্রশ্ন: আপনি ৭ জুন দেশে এসেছিলেন। তারপর ২১ তারিখ পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে ছিলেন। এরপর মুক্ত থাকলেন দু’দিন। এখন আপনি যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে যাচ্ছেন। কি পরিকল্পনা নিয়ে দেশে এসছিলেন?
ফেরদৌস খন্দকার: দেখুন, আমি খুব বড় মাপের ডাক্তার সেটি বলবো না। যুক্তরাষ্ট্রের মাঠেঘাটে আমি যেভাবে রোগী দেখেছি, ঠিক একই আইডিয়া নিয়ে আমি বাংলাদেশের মানুষের পাশে এসেছি। আমি মাঠেঘাটে সাধারণ রোগী দেখতে এসেছি। আমি কখনো করোনা বিশেষজ্ঞ হিসেবে নিজেকে দাবিও করিনি।
আমি বলে এসেছি, আড়াই থেকে তিন সপ্তাহ বাংলাদেশে থাকবো। আমি জানি এতে আমি বাংলাদেশে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার কোন উন্নতি করতে পারব না। কিন্তু মাঠে আমার ছোট্ট একটা সেটআপ করে যাব। সেখানে বাংলাদেশি ১০ জন তরুণ চিকিৎসক সেবা দেবে। আমি এ সেট-আপটা দেখে গেলে পরে যুক্তরাষ্ট্র থেকে এটি পরিচালনা করতে পারতাম। পরে প্রয়োজনে আবার দেশে আসতাম। কিন্তু আমাকে সেটা করতে দেওয়া হয়নি। উল্টো আমাকে নিয়ে এতো তর্ক-বিতর্ক।

প্রশ্ন: আপনার কি মনে হয় যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে দেশের কোন মহল থেকে আপনার বিরুদ্ধে এসব গুজব ছড়ানো হয়েছে? আপনি কি মনে করেন আপনার দেশে আসাটা অন্য কারো জন্য হুমকি ছিল বা আপনি আসলে অন্যকেউ লাইমলাইট থেকে সরে যেত- কী মনে করেন আপনি?
ফেরদৌস খন্দকার: দেখুন আমি একজন চিকিৎসক, সেবক। এটাই আমার বড় পরিচয়। আমি গুজব নিয়ে ভাবতেও চাই না।

প্রশ্ন: আমরা জেনেছি, দেশে আসার পর আপনি কোয়ারেন্টিনে ছিলেন। আপনার এন্টিবডি সার্টিফিকেট থাকার পরও আপনাকে সেখানে রাখা হয়েছে। সেখানে কোয়ারেন্টিনে আপনি কিভাবে সময়গুলো কাটিয়েছেন? এর মাধ্যমে দেশে আসা নিয়ে আপনার সে পরিকল্পনা সেটা তো ভেস্তে গেলো।
ফেরদৌস খন্দকার: আসলে আমি মনে করিনা আমার পরিকল্পনা ভেস্তে গিয়েছে। আমি এসেছি দেশ মাতৃকার টানে। হয়তো এখানে এসে কিছু চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছি। কিন্তু কোন সমস্যা নাই। আপনি ভালোবাসবেন চ্যালেঞ্জ নেবেন না, এটাতো হয় না। তাহলে আপনার ভালোবাসাই ভুল ছিল।
বিমানবন্দরে সাধারণ মানুষের মতই ছিলাম। নতুন অভিজ্ঞতা হয়েছে, তবে সেখানকার লোকজন খুবই দায়িত্বশীল। এরপর কোয়ারেন্টিনে এখানের লোকজন আমাকে সর্বোচ্চ সহায়তার চেষ্টা করেছে। তাদের বিরুদ্ধে আমার কোন অভিযোগ নেই। তবে নতুন জায়গা এবং আরও কিছু কারণে সেখানে আমার প্রথম ২-৩ দিন ঘুম হয়নি, আমি গোসলও করিনি। আমি বুঝতেই পারিনি বাইরে রাত না দিন।
প্রথমে কয়েকদিনে কিছুই খেতে পারছিলাম না। কিন্তু ওখানে কিছু তরুণ সৈনিক ছোট ভাই ছিল, তাদের চোখগুলো দেখে আমি আশা পেলাম। এরপর আমি আস্তে আস্তে উঠে দাড়াতে শুরু করি।

প্রশ্ন: আপনার এন্টিবডি থাকার পরও কোয়ারেন্টিনে ছিলেন। কোয়ারেন্টিন শেষ হওয়ার পর আপনি প্লাজমা দিয়েছেন। অনেকে বলছে, যদি আপনার করোনা না হয়ে থাকে তাহলে কীভাবে প্লাজমা দিলেন?
ফেরদৌস খন্দকার: সেটিই সত্য কথা। এটি যারা ম্যানেজ করছেন তাদের কাছেও আমার প্রশ্ন। হতে পারে তারা বাইরের এন্টিবডি গ্রহণ করেননি। তাদের হয়তো সন্দেহ থাকা সত্ত্বেও কোন কারণে প্লাজমা দেওয়ার জন্য আমাকে বিশ্বাসযোগ্য হিসাবে মনে হয়েছে।

প্রশ্ন: আপনি যখন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে চিকিৎসা শাস্ত্র পড়তে যান সেখানে ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। ছাত্র জীবনে যে সংগঠনের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে আপনি দাবি করছেন মানুষ বলছে তার উল্টো। এ পুরো সময়জুড়ে আপনার সঙ্গে অন্য একটি সংগঠনের সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে প্রচার হয়ে আসছিল। একইসঙ্গে আপনি ওই সংগঠনে অর্থসহায়তাও করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। কী বলবেন আপনি?
ফেরদৌস খন্দকার: দেখুন ১৯৯১ সালে আমি তখনো মেডিকেল শুরু করিনি। সেসময় বাংলাদেশে একটি জাতীয় নির্বাচন হয়। এডভোকেট সাহারা খাতুন পারিবারিক সূত্রে আমাদের খালা হন। আমার এখনো মনে আছে, আমি তখন উনার পোলিং এজেন্ট হয়েছিলাম। সুতরাং আমার রাজনীতির হাতেখড়ি তো শুরু বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকেই। আর এ আদর্শ যে একবার আত্মস্থ করে; সে এখান থেকে বিচ্যুত হয় না।
আমি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে ভর্তি হওয়ার পর সেখানে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়ি। সাতটি বছর রাজনীতির সাথে ছিলাম। মাসের পর মাস ক্যাম্পাসে ডুকতে পরিনি শুধু এ কারণে কেন রাজনীতির অংশ হলাম। আমরা রাজনীতি করেছি যখন জামায়াত-বিএনপি রোল করেছিল সেই সময়ে। তারপরও এসব অবান্তর প্রশ্ন কেন মানুষ করে বুঝে আসছে না।

প্রশ্ন: আপনি বলছিলেন আগে দেশে আসলে কেউ জানত না। এখন আপনি ডাক্তার ফেরদৌস খন্দকার হয়েছেন। এবার আপনার দেশে আসা নিয়ে অনেক কথা হলো। কীভাবে আপনি ডাক্তার ফেরদৌস খন্দকার হয়ে উঠলেন?
ফেরদৌস খন্দকার: ১৮ বছর আমি এভাবে কাজ করে যাচ্ছি। দিনে দিনে নিজেকে এভাবে তৈরি করে নিয়েছি। কীভাবে তৈরি করেছি? এইযে বললাম গ্রামে গ্রামে যেভাবে কাজ করি। ২৫টি জেলায় আমাদের একটি এনজিও আছে। যেটির ভাইস প্রেসিডেন্ট আমি। আমার ভেতরে আমি অন্য ডাক্তারদের থেকে নিজেকে একটু ভিন্নবোধ করি। মানবিক দিকগুলো আমার মধ্যে বেশি। যে কারণে আমি বারবার নাড়ির টানে ফিরে আসি। প্রতিবার দেশে আসলে আমার একটা এজেন্ডা থাকে নতুন একটি জায়গা আমি ঘুরে দেখবো, যেখানে আমি দেশকে নতুনভাবে অনুভব করতে পারবো। এভাবে আসলে ডাক্তার ফেরদৌস খন্দকার হয়ে উঠা।

প্রশ্ন: আপনার এসব কার্যক্রমে পরিবার থেকে কী ধরনের কতটুকু সাপোর্ট পান?
ফেরদৌস খন্দকার: আমার পরিবার আমার কাজে বাধা দেয় না। সত্যি কথা, আমি অবাক হই। এই যে এভাবে আসছি একবারও পরিবার জিজ্ঞেস করেনি- আমাদের কথা ভাবো কিনা। যে কারণে আমি সাহস পাই। মাকে ভালোবাসার জন্য আরও দুঃসাহসিক হয়ে যাই।

প্রশ্ন: করোনাভাইরাসের সময়ে দেশের সাধারণ মানুষ কীভাবে সুরক্ষিত থাকতে পারে তাদের জন্য কিছু বলার আছে কিনা? বা আপনার দেশের মানুষের উদ্দেশ্যে যদি কিছু বলার থাকে, বলুন
ফেরদৌস খন্দকার: আমি মায়ের টানে এসছিলাম, আমি এখনো আছি। আমি তো যাওয়া জন্য আসিনি। ২ বা ৩ হাজার স্কয়ার ফিট জায়গাতে ছোট্ট একটি আয়োজন করে চলে যাবো। যেটিকে কেন্দ্র করে বারবার আমি আসবো। আমার তো এটিই উদ্দেশ্য ছিল, এখনো আছে।
আমাকে নিয়ে বিতর্ক তৈরি করে কার লাভ হলো। এটি সে সময় নয়, বরং আমরা চলুন যার যার জায়গা থেকে আমাদের কাজটুকু করি। এ পরিস্থিতিতে আমাদের সবার একটা ভুমিকা আছে। শুধু ডাক্তার বা স্বাস্থ্যকর্মীদের এ যুদ্ধ নয়, এটি একটি মানবিক যুদ্ধ। আপনি যেই হোন না কেন সবার একটি ভুমিকা আছে। আসুন না এ সময়টুকুতে কাদা ছোড়াছুড়ি না করি।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আপনারা যে যেখানে আছেন আপনার জায়য়গা থেকে এগিয়ে আসুন। আমি তো তার ডাকে আমার মতো করে এসেছি। দেখুন সচেতনতাই আসল কথা। বাংলাদেশে এসেছি, আমি এখানে দেখলাম সবাই মোটামুটি চেষ্টা করছে। শুধু আরও একটু সচেতন হতে হবে। নিয়মিত মাস্ক পরুন, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখুন।

প্রশ্ন: দেশে আবার কবে ফিরে আসবেন?
ফেরদৌস খন্দকার: পরিস্থিতি ভালো হলে অর্থাৎ যদি ফিরে আসার মতো পরিস্থিতি থাকে। যদি প্রয়োজন হয় আগামী ৩ সপ্তাহের মধ্যে আবারো আসবো এবং যদি দেশের মানুষ আমাকে ভালোভাবে নেয়।


সর্বশেষ সংবাদ