প্রমোশনের সংবাদটা অনেক বেশি আবেগি করে তুলেছিল

  © টিডিসি ফটো

বৃহত্তম মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীণফোনের নতুন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হয়েছেন ইয়াসির আজমান। গ্রামীণফোনের পরিচালনা পর্ষদে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ইয়াসির আজমান গত ১ ফেব্রয়ারি থেকে সিইও হিসেবে যোগদান করেন। বেসরকারি মোবাইল ফোন অপারেটর হিসেবে রবি’র পর গ্রামীণফোনে প্রথম দেশীয় সিইও নিয়োগ পেলেন। নিয়োগের পর ‘লাইফ এট জিপি’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সিইও আজমানের বাইরে ব্যক্তি আজমান সম্পর্কে জানিয়েছেন তিনি। দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসে’র পাঠকদের জন্য ‍তা তুলে ধরা হল—

প্রশ্ন: দেখা হয়নাই চক্ষু মেলিয়া ঘর হতে শুধু দুই পা ফেলিয়া— আপনি কি সেই চরিত্রটি?
ইয়াসির আজমান: আমি যতটুকু জানি আমার জানার এবং দেখার আগ্রহ অনেক বেশি। আর যেহেতু সেলস এন্ড ডিস্ট্রিবিউশন নিয়ে কাজ করেছি। এ কাজে দেশে এবং দেশের বাহিরে অনেক যায়গায় ঘুরেছি। এ ঘুরাঘুরিতে জানা এবং দেখার আগ্রহটা চলতেই থাকবে।

প্রশ্ন: সম্প্রতি কেঁদেছেন বা কাঁদিয়েছেন?
ইয়াসির আজমান: কেঁদেছি বা কাঁদিয়েছি বলতে আসলে অনেক বেশি ইমোশনাল হয়েছি বলতে হবে। যখন আমার প্রমোশনের সংবাদটা মিডিয়ায় আসে তখন দেশ-বিদেশ, বন্ধুবান্ধব, পরিবার এবং পরিবার থেকে যে পরিমাণ উৎসাহ উদ্দীপনা পেয়েছি- এটায় আসলে আমি আলাদা একটা অনুভূতি পেয়েছি। যেটা আমাকে অনেক বেশি আবেগি করে তুলেছে।

প্রশ্ন: সবার জন্য ইন্টারনেট নাকি নিরাপদ ইন্টারনেট?
ইয়াসির আজমান: আমরা আসলে সবার জন্য ইন্টারনেট চাই। সবার হাতে ইন্টারনেটটা পৌঁছে দিতে পারলে আমাদের ব্যক্তিগত এবং গ্রাহকদের জীবনে অনেক সাফল্য আসবে। কিন্তু একই সাথে এটাও নিশ্চিত করতে হবে যে ইন্টারনেট যেন নিরাপদ হয়। বিশেষ করে আমাদের শিশু সন্তানদের জন্য যাতে করে ইন্টারনেটের খারাপ দিকগুলো তাদের কাছে চলে না যায়।

প্রশ্ন: ট্রেন, নৌকা, রিক্সা এবং লঞ্চ কোনটি পছন্দ?
ইয়াসির আজমান: নদীমাতৃক দেশ বাংলাদেশে নৌকা। বিশেষ করে ট্রলারে করে ঘুরতে ভালো লাগে। তবে সম্প্রতি আমাদের জেলে এবং মাঝি ভাইদের সাথে একটা কাজ করেছি সেটা আমাকে অনেক কিছু শিখিয়েছে।

প্রশ্ন: তুষার, বৃষ্টি নাকি রোদ কোনটি পছন্দ?
ইয়াসির আজমান: যখন আমি অসলোতে পোস্টেড ছিলাম তখন তুষার অনেক অনেক সুন্দর লাগতো। যখন ইন্ডিয়ার বেঙ্গালুরুতে ছিলাম ওখানকার বৃষ্টিগুলো দেখতে অনেক সুন্দর। আর আমাদের প্রাণের শহর ঢাকাকে রৌদ্রজ্জ্বল দেখতে ভালো লাগে।

প্রশ্ন: সামাজিকমাধ্যম পছন্দ করেন নাকি অপছন্দ করেন?
ইয়াসির আজমান: সামাজিকমাধ্যম অপছন্দ করার প্রশ্নই আসে না। আমি অনেক সময় কাটাই সামাজিকমাধ্যমে। বিশেষ করে মানুষ যখন তাদের সুখকর এবং সুন্দর মূহুর্তগুলো প্রকাশ করে তখন খুবই ভালো লাগে। তবে সম্প্রতি সামাজিকমাধ্যমে অনেক গুজব এবং মিথ্যা তথ্য আসছে। যেগুলো থেকে আমাদের দূরে থাকতে হবে এবং আমি সবাইকে এ বিষয়ে রিকোয়েস্ট করি তারা যেন এসব থেকে দূরে থাকে।

প্রশ্ন: তরুণেরা আগে গ্রামীণফোন ফোনে চাকরি করতে চাইতো আর এখন সিইও হতে চায়- বিষয়টা কিভাবে দেখছেন?
ইয়াসির আজমান: আমি তরুণদেরকে বলবো কঠোর পরিশ্রমের কোন বিকল্প নেই। যারা অনেক দূর যেতে চায় এবং ভালো কিছু করতে চায় তাদের তাদের জন্য সত্যবাদিতা, সঠিক চিন্তা এবং সততা এসবকে গুরুত্ব দিতে হবে।

প্রশ্ন: তিন ছেলেমেয়ের জনক- কে সবচাইতে প্রিয়?
ইয়াসির আজমান: সবাই মনে করে মেয়েই সম্ভবত অনেক বেশি প্রিয়। কিন্তু আসলে সবাই সমানে সমান।

প্রশ্ন: সারাদিন প্রচণ্ড কর্মব্যস্ত থাকেন- এতো শক্তির উৎস কি?
ইয়াসির আজমান: আসলে আমরা এমন একটা প্রতিষ্ঠানে আছি যার অবদান সমাজ এবং সমাজের অর্থনীতির উন্নয়নে গভীর ভূমিকা রাখে। আমাদের প্রতিষ্ঠানের সাথে সমাজের মানুষের এ সম্পর্ক তাদের জীবন পরিবর্তন করতে সহায়ক হিসেবে কাজ করে। আমাদের একটা সংযোগের সাথে একটা জেনারেশনের উন্নতি জড়িত। যেটা ওই জেনারেশনের পরিবর্তনের সাথে জড়িত। আমরা যখন এসব চিন্তা করি তখন অনেক বেশী অনুপ্রাণিত হই।

প্রশ্ন: গ্রামীণফোনের ডেপুটি সিইও অথবা সিইও না হলে গ্রামীণফোনের সেবা ব্যবহার করতেন?
ইয়াসির আজমান: আমি তো আসলে গ্রামীণফোনে জয়েন্ট করেছি ২০০৫ সালে। ওইসময় যেহেতু আমি সারা বাংলাদেশে বিক্রয় এবং বন্টনকারীর দায়িত্বে ছিলাম তখন গ্রামীণফোন ছাড়া কোন বিকল্প ছিলো না। সুতরাং আমি বলবো, অবশ্যই গ্রামীণফোন ব্যবহার করতাম।

প্রশ্ন: পথে নাকি পথের সৃষ্টি করে, এর আগে তো বাংলাদেশের কোন সিইও ছিলো না। কিভাবে অনুপ্রাণিত হলে?
ইয়াসির আজমান: আমার মনে হয় আজকের কাজটা যদি সুন্দরভাবে করতে পারি তাহলে সামনে এগিয়ে যাওয়া অনেক সহজ হয়ে যায়।

প্রশ্ন: ৭ কোটি ৬৫ লাখ মানুষের পরিবার গ্রামীণফোন, চাপ নাকি আনন্দ?
ইয়াসির আজমান: দায়িত্ব। আমাদের যে ভিশন শক্তিশালী সামাজিক ক্ষমতার কথা বলছি এবং ডিজিটাল বাংলাদেশ- এ দুইটা আসলে একসঙ্গে যায়। আমি এটা সত্যিকারে বিশ্বাস করি আমাদের করার মতো বিস্ময়কর জিনিস রয়েছে এবং আমরা সত্যই একসাথে ডিজিটাল বাংলাদেশের সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছি।


সর্বশেষ সংবাদ