বিসিএসের আবেদন ফি পিএসসি নয়, রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা হয়

পিএসসি চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ সাদিক
পিএসসি চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ সাদিক

বিসিএস ক্যাডার পদের চাকরিগুলোকেই সবচেয়ে ‘এলিট’ চাকরি হিসেবে বিবেচনা করে থাকেন বাংলাদেশের চাকারিপ্রার্থীরা। দিন যত যাচ্ছে, ততই বেড়ে চলেছে এই পরীক্ষার আবেদন সংখ্যা। সবমিলিয়ে বিসিএস যেন অনেক চাকরিপ্রার্থীর প্রথম ও একমাত্র স্বপ্ন হয়ে উঠেছে। অন্যদিকে প্রার্থী সংখ্যা বাড়ার ফলে দিনকে দিন প্রতিযোগিতাপূর্ণ হয়ে যাচ্ছে এই পরীক্ষা। যদিও এই চাকরির পরীক্ষার আবেদন ফি ও দীর্ঘপ্রক্রিয়া নিয়ে ইতিবাচক ও নেতিবাচক নানা মন্তব্য রয়েছে। মূলত এসব বিষয় নিয়েই পিএসসি চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ সাদিক-এর সঙ্গে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের কথা হয়েছে। কথা বলেছেন স্টাফ রিপোর্টার শিহাব উদ্দিন

স্বাক্ষাৎকারের চুম্বক অংশ তুলে ধরা হলো-

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: চাকরিপ্রার্থীদের কাছে কেন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে বিসিএস?
ড. মোহাম্মদ সাদিক: আমাদের প্রতিষ্ঠান পিএসসি প্রিলি থেকে শুরু করে নিয়োগ হওয়া পর্যন্ত স্বচ্ছতা বজায় রাখে। যার ফলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে এক ধরণের বিশ্বাস চলে এসেছে যে, কোন প্রকার তদবির ছাড়াই সরকারি চাকরি পাওয়া সম্ভব। এটি বিসিএসে আবেদন বাড়ার অন্যতম কারণ।

দ্বিতীয়ত— আমরা যে শুধু ক্যাডার নিয়োগ দেই তা নয়, নন ক্যাডারেও ২ হাজার প্রার্থী নিয়োগ দিয়ে থাকি। ফলে অনেক বেশি প্রার্থী আবেদন করছে।

তৃতীয়ত— একজন চাকরিপ্রার্থী বিসিএস প্রস্তুতি নিলে অন্যান্য চাকরির প্রস্তুতিও হয়ে যায়। অর্থ্যাৎ কেউ বিসিএস প্রস্তুতি নিলে ব্যাংক, শিক্ষক নিয়োগ এমনকি বিমানসহ বিভিন্ন স্বায়ত্ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষা দিতে পারেন। এ কারণে একজন চাকরিপ্রার্থী বিসিএসকেই টার্গেট হিসেবে বেছে নেয়। এটিও বিসিএসে প্রার্থী বাড়ার অন্যতম কারণ।

চতুর্থত— উচ্চশিক্ষার পর অনেক শিক্ষার্থীই দেশের বাইরে চলে যায়। আবার অনেকের মধ্যেই দেশপ্রেম কাজ করে; ফলে তারা দেশেই থেকে যায় এবং দেশের জন্য কিছু করতে চায়। এ ধরণের বড় একটি শ্রেণি বিসিএস দিয়ে থাকে।

পঞ্চতম— বিসিএস জনপ্রিয় হয়ে ওঠার আরেক কারণ হলো— অনেক চাকরিপ্রার্থীই নিজের দেশ, বাংলাদেশের সংবিধান ও মুক্তিযুদ্ধসহ বিশ্ব জগৎ সম্পর্কে জানতে চায়। বিষয়গুলো জানার মাধ্যমে তারা নিজেদের ব্যক্তিগত জ্ঞানের ভাণ্ডারকে সমৃদ্ধ করে এবং আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠতে চায়।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: বিসিএস নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দীর্ঘ সময় লাগার কারণ কী? কোন ক্ষেত্রে বেশি সময় ব্যয় হচ্ছে?
ড. মোহাম্মদ সাদিক: বিসিএস একটি বিশাল কর্মযজ্ঞ। এত বিপুল সংখ্যক আবেদন প্রক্রিয়ার পরীক্ষা সম্পন্ন হতে বেশ সময়ের প্রয়োজন। প্রিলিতে চার লাখের বেশি প্রার্থী আবেদন করে। তাদের খাতা দেখা, ফলাফল প্রস্তুত করা আবার উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীদের লিখিত পরীক্ষা সম্পন্ন করতে অনেক সময় লেগে যায়। এ কারণে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে সময় লাগে। তবে আমরা এই প্রক্রিয়াটি দ্রুত সম্পন্ন করার চেষ্টা করছি।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: বিসিএস-এ আবেদন বাবদ প্রত্যেক চাকরিপ্রার্থীর কাছ থেকে ৭০০ টাকা নেয়া হয়। অনেকের বক্তব্য- এটা বেশি। বিষয়টি সম্পর্কে যদি বলতেন।
ড. মোহাম্মদ সাদিক: আবেদন ফি বাবদ প্রার্থীরা যে টাকা দেয়, তার পুরোটাই জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সরকারি কোষাগারে জমা হয়। তাছাড়া প্রার্থীদের আবেদনের টাকা পিএসসির সরাসরি খরচ করার কোনো এখতিয়ার নেই। আমরা শুধু পরীক্ষা সংক্রান্ত খরচের খাত দেখিয়ে মন্ত্রণালয় থেকে নিয়ে থাকি। এক্ষেত্রে প্রিলিমিনারি, লিখিত এবং ভাইভা পরীক্ষার জন্য একটি বাজেট দেয়া হয়। এমনকি ভাইভা বোর্ডে যারা উপস্থিত থাকেন, তাদের জন্যও একটি সম্মানী বরাদ্দ থাকে।

পিএসসি থেকে প্রাপ্ত তথ্য ঘেঁটে দেখা গেছে, ২০০৮ সালে ২৮তম বিসিএসের প্রিলিমিনারিতে আবেদন সংখ্যা ছিল ১ লাখ ১৫ হাজার ১৬৪ জন; যা ৩৮তম বিসিএসে এসে দাঁড়ায় ৩ লাখ ৮৯ হাজার ৪৬৮ জনে। আবার ৪০ তম বিসিএসে যেখানে ৪ লাখ ১২ হাজার প্রার্থী ছিল; ৪১তম বিসিএসে এসে তা ৪ লাখ ৭৫ হাজার ২৬৩ জনে ঠেকে।

পিএসসি সূত্রে জানা গেছে, প্রিলিমিনারি, লিখিত ও মৌখিক এই তিন ধাপের পরীক্ষার মাধ্যমে প্রার্থীদের বাছাই করে থাকে বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন (পিএসসি)। তিন ধাপে উত্তীর্ণ প্রার্থীদের নিয়োগ দেয়ার জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ করে পিএসসি। পরে মন্ত্রণালয় থেকে চাকরিতে যোগদানের গেজেট প্রকাশ করা হয়।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence