মাদক ও অস্ত্র রাজনীতির ইতি টানবে চবি ছাত্রলীগ

দীর্ঘ ১৯ মাস পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ কমিটি পেয়েছে। গত ১৪ জুলাই কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ দুই সদস্যের প্রাথমিক কমিটির মনোনয়ন দিয়েছে। যাতে সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন ইকবাল হোসেন টিপু। এবার পালা পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের। নতুন কমিটির হাত ধরে ক্যাম্পাসের ছাত্র-রাজনীতিতে কী চমক আসছে— তা নিয়ে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের সঙ্গে কথা হয় নব মনোনীত সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন চবি প্রতিনিধি এ এইচ আজহার

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মনোনীত হওয়ায় আপনাকে অভিনন্দন।
ইকবাল হোসেন টিপু: ধন্যবাদ।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: দুই সদস্যের প্রাথমিক কমিটি ঘোষণা হয়েছে। আপনাদের পরবর্তী পরিকল্পনা কি?
ইকবাল হোসেন টিপু: যেহেতু প্রাথমিক কমিটি ঘোষণা হয়েছে। তাই খুব সহসা পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণাই আমাদের পরিকল্পনা। তবে এক্ষেত্রে আমরা একটা বিষয় লক্ষ্য রেখে এগুতে চাই। সেটা হলো আমাদের কর্মীদের মধ্যে দীর্ঘদিনের যে মনোমালিন্য ও সংঘাত তৈরী হয়েছে সেটা নিরসন করতে চাই। আর এই মনোমালিন্যের কারণ হলো কর্মীরা ত্যাগের মূল্যায়ন না পাওয়া। তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি হল, অনুষদ, বিভাগ সবগুলোতেই আমরা কমিটি দিব। যাতে করে সকলের যথাযথ মূল্যায়ন সম্ভব হয়।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে নেতৃত্বে অগ্রাধিকার কারা পাবে?
ইকবাল হোসেন টিপু: প্রথমত সে ছাত্রলীগ কিনা? তার ব্যাকগ্রাউন্ড যাচাই করা হবে। তারপর চাঁদাবাজি, নেশাগ্রস্থ এমন কোনো অভিযোগ আছে কি-না সেটাও দেখা হবে। এরপর পর্যায়ক্রমে যারা ত্যাগী এবং মেধাবী তারাই অগ্রাধিকার পাবে। এককথায় সর্বদিক থেকে যোগ্য কর্মীদেরকেই নেতৃত্বে আনা হবে। যাতে করে আগামী দিনে নেতৃত্বে ভূমিকা রাখতে পারে তারা। তবে কোনো অনুপ্রবেশকারী এই কমিটিতে স্থান পাবে না।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: দীর্ঘদিন কমিটি না থাকায় চবি ছাত্রলীগ বিভিন্ন গ্রুপ উপগ্রুপে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। এ বিষয়ে কোনো পরিকল্পনা আছে কি?
ইকবাল হোসেন টিপু: অবশ্যই আমরা এগুলো থেকে বেরিয়ে এসে একসাথে হাটতে চাই। তবে দীর্ঘদিনের এই গ্রুপিং রীতি দিনে দিনেই মিটিয়ে দেওয়া সম্ভব না। তবে আমরাই এই দায়িত্ব হাতে নিব। আমরাই শুরু করব গ্রুপিং রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসার প্রচেষ্টা। সংঘাত হানাহানি মারামারির ফলে আমাদের অনেকে ছাত্রত্ব হারাচ্ছে, কেউ আহত হচ্ছে। এসব থেকে আমরা বেরিয়ে আসব। এক কথায় অস্ত্রের রাজনীতি আর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে হবে না।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: চবিতে স্থানীয় রাজনীতির যে প্রভাব রয়েছে। বিষয়টা কতটুকু ইতিবাচক?
ইকবাল হোসেন টিপু: অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে সভাপতি সেক্রেটারির অনুসারী দেখা যায়। কিন্তু চবি ছাত্রলীগের রাজনীতির দীর্ঘদিনের অবিভাবক মেয়র আ জ ম নাসির উদ্দিন এবং এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী। মহিউদ্দিন চৌধুরীর প্রয়াতের পর থেকে মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ছাত্রলীগকে দেখাশোনা করছেন। দীর্ঘদিন থেকে কমিটি থাকুক বা না থাকুক উনারাই আমাদের যেকোনো সমস্যা সমাধাননে অভিভাবক হিসেবে এগিয়ে এসেছেন। তাই এটা আমাদের জন্য অবশ্যই একটা ইতিবাচক দিক।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: বগিভিত্তিক রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসার পরিকল্পনা আছে কি?

ইকবাল হোসেন টিপু: বগির রাজনীতি আমরা আরও আগেই নিষিদ্ধ করে দিয়েছি। তারপরও এর একটা প্রভাব এখনো আছে। আমরা এটাকে সম্পূর্ণ বিলুপ্ত করে দিব। আর রাজনীতিকে অনেকে ক্যারিয়ার মনে করছে। এই জন্য পড়াশোনা সব রেখে রাজনীতি করছে। আমরা এই জায়গা থেকে ফিরতে চাই। তাই আমাদের কর্মীদের সর্বপ্রথম ক্লাসমুখি করব। এবং যারা পড়াশোনায় এগিয়ে থাকবে তাদের ক্যারিয়ার রিলেটেড যেকোনো কাজে সহযোগিতা করা হবে।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: নবগঠিত কমিটির ছাত্র সংসদ নির্বাচন নিয়ে চিন্তা ভাবনা কি?
ইকবাল হোসেন টিপু: শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়াতে হলে ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনের বিকল্প নেই। শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সংকট নিরসনে চাকসু নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আমরা পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করে প্রগতিশীল সংগঠনগুলোকে সাথে নিয়ে চাকসু নির্বাচনের পূনরায় দাবি তুলবো। প্রয়োজনে কর্মসূচি হাতে নেওয়া হবে।

দ্যা ডেইলি ক্যাস্পাস: সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য চবি ছাত্রলীগের নবগঠিত কমিটির পক্ষ থেকে নতুন কোনো বার্তা আছে কি?
ইকবাল হোসেন টিপু: হ্যাঁ, শিক্ষার্থীবান্ধব সকল কর্মসূচি আমরা হাতে নিবো ধাপে ধাপে। সর্বোপরি আমরা অতীতের সকল কালো অধ্যায় মুছে সকলের জন্য একটা উপযুক্ত ক্যাম্পাস উপহার দেওয়ার সর্বাত্মক চেষ্টা করব।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: আপনাকে ধন্যবাদ
ইকবাল হোসেন টিপু: আপনাকেও ধন্যবাদ


সর্বশেষ সংবাদ