মশার নতুন ওষুধ আবিষ্কারের দাবি ঢাবি শিক্ষার্থীর

ঢাবি ছাত্র এইচ এম রঞ্জু
ঢাবি ছাত্র এইচ এম রঞ্জু

মশা থেকে রক্ষা পাওয়ার নতুন একটি ওষুধ আবিষ্কারের দাবি করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক তরুণ শিক্ষার্থী। ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল বিভাগের ছাত্র এইচ এম রঞ্জুর দাবি- দুর্গন্ধ ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ামুক্ত ওষুধটির ব্যবহারে ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা পর্যন্ত মশার কামড় থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। এর আগে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে একটি প্ল্যান্টও তৈরি করেছেন রঞ্জু।

তিনি জানান, আমার তৈরি করা এই ওষুধটি এখন পর্যন্ত শতাধিক মানুষের শরীরে ব্যবহার করা করা হয়েছে। তাতে সন্তোষজনক ফলাফল এসেছে। বাজারে প্রচলিত কয়েল বা স্প্রে থেকে এই ওষুধটি স্বাস্থ্যসম্মত ও সাশ্রয়ী মূল্যের হবে। তার দীর্ঘ এক বছরের গবেষণায় তৈরিকৃত ওষুধটির প্রাথমিক ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল সফল হয়েছে।

ঢাবির এই তরুণ শিক্ষার্থী গণমাধ্যমকে জানান, গত বছর অক্টোবর-নভেম্বরের দিকে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ার পর ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন ব্যস্ত হয়ে পড়ে। মশা দমাতে তারা নানা উদ্যোগ গ্রহণের পাশাপাশি কর্মপরিকল্পনার কথা জানায়। কিন্তু তবুও মশার দমন যেন অসাধ্য হয়ে পড়ে। তখন থেকেই ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী হিসেবে বিষয়টি নিয়ে ভাবতে থাকি। এমন পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি কার্যকরী উপায় হিসেবে মশা যেন না কামড়ায় সেই পদ্ধতি নির্বাচন করি। সেই থেকেই কেমিক্যাল ও ভেষজসহ সব উপাদান নিয়েই গবেষণা করতে থাকি।

ওষুধটি উদ্ভাবনের পর থেকে এখন পর্যন্ত অনেকবার এর ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল পরিচালনা করেছেন রঞ্জু। তিনি জানান, খুব শীঘ্রই এটা কয়েল বা অ্যারোসলের বিকল্প ওষুধ হিসেবে পরিগণিত হবে। বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদের (বিসিএসআইআর) টেস্ট রিপোর্ট অনুযায়ী এই ওষুধ এখন পর্যন্ত উৎপাদিত হওয়া সবচেয়ে কম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াযুক্ত ওষুধ।

এ অবস্থায় ওষুধটির আরও বিষদ পরীক্ষা ও বাণিজ্যিক উৎপাদনের জন্য তিনি সরকার বা বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে আসার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

ঢাবি শিক্ষার্থী জানান, তার তৈরিকৃত মশার বিরুদ্ধে কার্যকরি এই লিকুইড ন্যাচারাল ও কেমিক্যালের সমন্বয়ে তৈরি। এর কেমিক্যাল উপাদানগুলো প্রতিনিয়তই স্যানিটাইজার, কসমেটিকস ও ওষুধের উপাদান হিসেবে ব্যবহার করা হয়। ঘন তরল পদার্থ হওয়ায় এটা শরীরে মাখলে দীর্ঘসময় কার্যকর থাকে।

এর উপাদানগুলো দুই ভাগে বিভক্ত। প্রথম হচ্ছে কেমিক্যাল। এর উপাদানগুলো হচ্ছে সোডিয়াম লরাইল সালফেট, ইথাইল ল্যাকটেট, আইসোপ্রোপাইল অ্যালকোহল, গ্লিসারিন ও পারফিউম।

দ্বিতীয় উপাদান হচ্ছে ন্যাচারাল। এগুলো হচ্ছে মারগোসা ওয়েল, লেমন সাইট্রাস, পেপারমিন্ট ও ক্লোভ ওয়েল। এছাড়াও রয়েছে ইনার্ট ইনগ্রেডিন্ট যা মশার বিরুদ্ধে কার্যকরী। এই উপাদানগুলোর সঠিক অনুপাতে তৈরি ওষুধটি নিরাপদে মশা প্রতিরোধ করবে।


সর্বশেষ সংবাদ