এবার করোনার দুর্বলতা ‘খুঁজে পেয়েছেন’ মার্কিন গবেষকরা

চীনের উহানে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হলেও এখন মহামারির কেন্দ্রে রূপ নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। প্রাণঘাতী ভাইরাসটির হাত থেকে বাঁচতে চেষ্টার অন্ত নেই। এবার মহামারি ভাইরাসের দুর্বলতা খুঁজে পাওয়ার দাবি করেছেন মার্কিন গবেষকেরা। সেটি হলো করোনাভাইরাসের বিশেষ একটি অংশ লক্ষ্য করে কোনো ওষুধ বা অন্য থেরাপি দিয়ে আক্রমণ করা। ওই দুর্বল অংশটিকে তারা বলছেন ‘অ্যাকিলিস হিল’।

যুক্তরাষ্ট্রের সান দিয়েগো ট্রিবিউন তাদের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করেছে। অলাভজনক আমেরিকান চিকিৎসা গবেষণা প্রতিষ্ঠান স্ক্রিপস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের করোনাভাইরাস–বিষয়ক গবেষকেরা বলছেন, করোনাভাইরাসের ওই অ্যাকিলিস হিল খুঁজে পাওয়ার ঘটনা চিকিৎসাক্ষেত্রে খুব ভালো খবর হয়ে আসতে পারে। এ থেকে করোনাভাইরাসের নতুন ভ্যাকসিন তৈরির পথ খুলে যেতে পারে।

স্ক্রিপস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের গবেষক দলের নেতৃত্ব দেয়া জীববিজ্ঞানী ইয়ান উইলসনের মতে, করোনাভাইরাসের মতো অতি সংক্রামক ভাইরাসের ওপর আক্রমণ করার জন্য নির্দিষ্ট দুর্বল অঞ্চল খুঁজে বের করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শুক্রবার সায়েন্স সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে গবেষণা–সংক্রান্ত নিবন্ধ। বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক তৈরির জন্য বিজ্ঞানীদের অক্লান্ত পরিশ্রমের সময়েই এ তথ্য সামনে এল। গবেষকেরা বলেন, তাদের আবিষ্কারের ক্ষেত্রে কাজ করেছে একবছর আগে সার্স সংক্রমণের শিকার এক ব্যক্তির কাছ থেকে সংগৃহীত অ্যান্টিবডি।

এ ভাইরাসটির একটি নির্দিষ্ট অংশের সঙ্গে নিজেকে যুক্ত করেছে এবং তা কোভিড-১৯–এর ক্ষেত্রেও পুনরাবৃত্তি করতে সক্ষম। এ বিষয়টির খোঁজ করতে গিয়ে তারা করোনাভাইরাসের দুর্বল জায়গাটি পেয়েছেন বলে জানান।

এক বিবৃতিতে বলা হয়, করোনার বিশেষ অঞ্চলের একটি গুরুত্বপূর্ণ ফাংশনের সঙ্গে তারা মিল খুঁজে পান, যা উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবর্তন করা গেলে তা নষ্ট হয়ে যায়। তবে, দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে, ওই দুর্বল জায়গাটি সহজে খুঁজে পাওয়া যায় না। এটি সাধারণত ভাইরাসের ভেতরে লুকিয়ে থাকে এবং ভাইরাসের সেই অংশটি তার গঠন পরিবর্তন করার সময়েই কেবল সামনে আসে।

এদিকে নিউইয়র্ক পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, করোনাভাইরাসের দুর্বল জায়গা নিয়ে আরও গবেষণা চালানোর কথা বলেছেন গবেষকেরা। তারা বিষয়টিকে আরও জানার জন্য অ্যান্টিবডি খোঁজ শুরু করেছেন। এ জন্য কোভিড-১৯ থেকে সুস্থ হওয়া ব্যক্তির রক্তের খোঁজ করছেন তারা। এ রক্ত থেকে সম্ভাব্য কার্যকর অ্যান্টিবডি কাজে লাগানোর পরিকল্পনা করছে। সব মানুষের পাঁচ ধরনের অ্যান্টিবডি রয়েছে। তবে এসব গ্রুপের মধ্যে প্রচুর পার্থক্য রয়েছে। বিজ্ঞানীরা এমন একটির সন্ধান করছেন, যা ভাইরাস শনাক্তকরণ এবং তাকে নিষ্ক্রিয় করা জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত হবে।

জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটির রোববার (৫ এপ্রিল) সকাল পর্যন্ত দেয়া তথ্যানুযায়ী, বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬৪ হাজার ৭৫৩ জনে।


সর্বশেষ সংবাদ