১৬ জানুয়ারি ২০২০, ১৭:৩৫

অ্যাপ বানিয়ে খুদে প্রকৌশলীর স্বীকৃতি পেল আইমান

বর্তমানে ইন্টারনেটভিত্তিক কল, ভিডিও ও চ্যাটের জন্য ইমো, হোয়াটসঅ্যাপ, মেসেঞ্জার কিংবা ভাইবার বেশ জনপ্রিয়। কিন্তু সবগুলোই তৈরি করেছেন বাইরের দেশের মানুষ। ‘প্রযুক্তির এই যুগে আমরা কেন বাইরের কারও তৈরি অ্যাপ ব্যবহার করব’— মনে মনে এই জেদ পেয়ে বসে ১০ বছরের আইমান আল আনামের। চতুর্থ শ্রেণি ছেড়ে সবে পঞ্চম শ্রেণিতে উঠেছে। চট্টগ্রাম নগরের সাউথ পয়েন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজে পড়ছেন আইমান।

সেই জেদ থেকেই অ্যাপ তৈরিতে আইমান নেমে পড়ে আইমান। চতুর্থ শ্রেণির চূড়ান্ত পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর পাওয়া অবসরকে অক্লেশে কাটিয়ে দেয়নি। ২০১৯ সালের মার্চ মাস থেকে শুরু হয় অ্যাপ তৈরির কর্মযজ্ঞ। তার সেই প্রচেষ্টা পরিপূর্ণতা পায় ডিসেম্বরে এসে। আইমান তার তৈরি এ অ্যাপের নাম দিয়েছে মায়ের নামে। অর্থাৎ মা লিটা আকতারের নামের প্রথম অংশ নিয়ে তার অ্যাপের নাম রেখেছে ‘লিটা ফ্রি ভিডিও কলস অ্যান্ড চ্যাট’।

গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর অ্যাপটি পরিপূর্ণভাবে তৈরির পর সেটি গুগল কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠায় আইমান। যাচাই–বাছাই শেষে গত ৩১ ডিসেম্বর সকাল আটটায় ‘লিটা ফ্রি ভিডিও কলস অ্যান্ড চ্যাট’ নামে গুগল প্লে স্টোরে সেটি আপলোড করা হয়। অ্যাপের বর্ণনার নিচে লেখা আছে, অ্যাপ ক্রিয়েটেড বাই ‘আইমান আল আনাম।’ এর মধ্য দিয়েই যেন স্বীকৃতি মিলল এই খুদে প্রকৌশলীর।

ছেলের অসাধাণ উদ্ভাবনে বেশ খুশি বাবা তৌহিদুস সালাম। তিনি বললেন, ‘চতুর্থ শ্রেণির চূড়ান্ত পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর পাওয়া অবসরকে অক্লেশে কাটিয়ে দেয়নি ছেলে। সব সময় দেখতাম কম্পিউটারের সামনে মুখ গুঁজে পড়ে আছে। ভেবেছিলাম এমনিতেই পড়ে আছে। কারণ, একেবারে ছোটকাল থেকেই তার কম্পিউটারপ্রীতি। কিন্তু এত বড় কিছু করে বসবে, সেটি কল্পনাতেও ছিল না। তাই ২৭ ডিসেম্বর সকালে যখন সে বলল, ‘বাবা অ্যাপ তৈরি’, সব জেনে আমি আর ওর মা চমকে গেছি।’

আইমান জানায়, এ অ্যাপের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো বর্তমানে ব্যবহৃত যোগাযোগের অ্যাপসগুলোর চেয়ে এটির ভিডিওর মান অনেক উন্নত। অন্যগুলোতে চ্যাট করার সময় ছবি ফেটে গেলেও এটিতে ফাটে না। কারণ, এটির মান এইচডি অর্থাৎ হাইডেফিনেশনের। একই সঙ্গে মুহূর্তের মধ্যেই বড় ফাইল আদান–প্রদান করা যায়। কীভাবে অ্যাপটি তৈরি হলো, ইউটিউবে একটি ভিডিওচিত্র দিয়ে সে গল্প বলেছে আইমান।