উচ্চ ফলনশীল নতুন দুটি ধানের জাত উদ্ভাবন করল বাংলাদেশ

বোরো মৌসুমে চাষের উপযোগী দুটি নতুন উচ্চ ফলনশীল ধানের জাত উদ্ভাবন করেছে গাজীপুরের বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি)। ধানের এই দুটি নতুন জাত হলো- ব্রি-৮৮ ও ব্রি-৮৯। ব্রি-৮৮ এর গড় ফলন হেক্টর প্রতি ৭ টন। তবে উপযুক্ত পরিচর্যা পেলে হেক্টরে ৮.৮ টন পর্যন্ত ফলন পাওয়া যাবে। ব্রি-৮৯-এর গড় ফলন হেক্টর প্রতি ৮ টন। তবে উপযুক্ত পরিচর্যা পেলে হেক্টর প্রতি ৯.৭ টন ফলন দেবে এ ধান।

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের জনসংযোগ বিভাগ জানায়, গত মঙ্গলবার কৃষি মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব মো. নাসিরুজ্জামানের সভাপতিত্বে জাতীয় বীজ বোর্ডের এক সভায় ধানের নতুন এ দুটি জাত অনুমোদন পায়। এ সভায় ব্রি’র মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীরসহ কৃষি মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় বীজ বোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। ব্রি কৃষি বিজ্ঞানীরা আশা করছেন, নতুন এই দুটি জাত কৃষক পর্যায়ে জনপ্রিয় হবে এবং সামগ্রিকভাবে ধান উৎপাদন বাড়বে।

নতুন উদ্ভাবিত উচ্চ ফলনশীল ব্রি-৮৮ ধান বোরো মৌসুমের স্বল্পমেয়াদি একটি জাত। এতে আধুনিক উফশী ধানের সকল বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান। এ জাতের পাতা খাড়া এবং লস্বা। ধানের দানা অনেকটা ব্রি-২৯ এর মতো। তবে সামান্য চিকন। পূর্ণবয়স্ক গাছের উচ্চতা ১০০ সে. মি.।এ জাতের জীবনকাল ১৪০- ১৪৩ দিন। ১০০০টি পুষ্ট ধানের ওজন প্রায় ২২.১ গ্রাম। পাকা ধানের রঙ খড়ের মতো। চালের আকার মাঝারি চিকন ও ভাত ঝরঝরে।

এটিকে ব্রি-২৮ এর পরিপূরক জাত হিসেবে নির্বাচন করা হয়। এ ধানে ভাত ঝরঝরে করার উপাদান অ্যামাইলোজের পরিমাণ ২৬.৩%। ব্রি-৮৮ এর জীবনকাল বি-২৮ এর চেয়ে ৩-৪ দিন আগাম। এ জাত ঢলে পড়া প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন। ইতিপূর্বে উদ্ভাবিত অনুরূপ জাত ব্রি-২৮-এ নেই। এ জাতে রোগবালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণ প্রচলিত জাতের চেয়ে অনেক কম।

পাশাপাশি ব্রি-৮৯ এর গড় ফলন ৮ টন। জাতটির জীবনকাল ১৫৪ থেকে ১৫৮ দিন। এ চালের ভাত ঝরঝরে এবং সুস্বাদু। এ জাতকে ব্রি-২৯ এর পরিপূরক হিসেবে নির্বাচন করা হয়েছে। এ জাতের পূর্ণবয়স্ক গাছের গড় উচ্চতা ১০৬ সে. মি.। কাণ্ড শক্ত, পাতা হালকা সবুজ এবং ডিগ পাতা চওড়া। ধানের ছড়া লম্বা এবং পাকার সময় কাণ্ড ও পাতা সবুজ থাকে।

এ জাতের জীবনকাল ব্রি-২৯ এর চেয়ে ৩-৫ দিন আগাম। ১০০০টি পুষ্ট ধানের ওজন প্রায় ২৪.৪ গ্রাম। এ ধানে অ্যামাইলোজের পরিমাণ ২৮.৫%। ভাত ঝরঝরে এবং খেতে সুস্বাদু।