কৃত্রিম চাঁদ বানাচ্ছে চীন

  © সংগৃহীত

কাজী নজরুল ইসলাম তাঁর সংকল্প কবিতায় লিখেছিলেন ‘বিশ্ব জগৎ দেখবো আমি আপন হাতের মুঠোয় পুরে’।  সত্যিই বিশ্ব জগৎ এখন যেন আমাদের হাতের মুঠোয়।  আধুনিক বিজ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে এখন বিশ্বকে নিজের মত করে গড়ে তোলা সম্ভব।  আর এই সম্ভাবনাকে আরো একধাপ এগিয়ে ‍নিয়ে গেলেন চীনের বিজ্ঞানীরা।  কৃত্রিম চাঁদ বানানোর এক বিচিত্র উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন তারা। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন কৃত্রিম ওই চাঁদের ঔজ্জ্বল্য হবে পৃথিবীর চাঁদের থেকে প্রায় আটগুণ বেশি।

এবিসি সংবাদসংস্থার তথ্য মতে, বিদ্যুৎ সাশ্রয় এবং রাতের অন্ধকার কমিয়ে আনতে এমন উচ্চাভিলাষী প্রকল্পে হাতে নিয়েছে চীনের সিচুয়ান প্রদেশের চেংডু শহরে অবস্থিত তিয়ানফু নিউ ডিস্ট্রিক্ট সিস্টেম সায়েন্স রিসার্চ ইন্সটিটিউট।  ইন্সটিটিউটের প্রধান ইউ চুনফেং জানান, ২০২০ সালের মধ্যে তিনটি কৃত্রিম চাঁদ তৈরি করবে চীন।

২০২২ সালে কৃত্রিম চাঁদ তিনটি মহাকাশে পাঠানো হবে। ওই চাঁদগুলো আসলে বড় উপগ্রহ, যাতে থাকবে বড় বড় আয়না, যা সূর্যের আলো পৃথিবীতে আরও বেশি ভালো করে প্রতিফলিত করবে।

আয়না থেকে প্রতিফলিত সূর্যালোক প্রায় ৩৬০০–৬৪০০ বর্গফুট এলাকা আলোকিত করবে এবং তার ঔজ্জ্বল্য হবে চাঁদের থেকে প্রায় আটগুণ বেশি। চাঁদ পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে ৩৮০,০০০ কিলোমিটার দূর থেকে। কৃত্রিম চাঁদগুলি পৃথিবী থেকে ৫০০ কিলোমিটার দূরের কক্ষপথে রাখা হবে বলে ঠিক করেছেন চীনা মহাকাশ বিজ্ঞানীরা। কৃত্রিম চাঁদগুলো স্থাপিত হলে প্রতিবছর ২৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিদ্যুৎ সাশ্রয় হবে। 

এছাড়াও বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় যে সমস্ত এলাকা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়, সেসব এলাকায় কৃত্রিম আলোর ব্যবস্থা করা যাবে। রাতে বিভিন্ন ধরণের জরুরি উদ্ধারকাজেও বড় ধরণের ভূমিকা রাখবে এই কৃত্রিম চাঁদ।  তবে কৃত্রিম চাঁদের ফলে দিন-রাতের তারতম্যে পার্থক্য হয়ে পৃথিবীর জীবনচক্রে বিঘ্ন ঘটতে পারে বলে আশংকা প্রকাশ করেছেন বিজ্ঞানীরা। 

তবে চুনফেং এ আশংকাকে উড়িয়ে দিয়ে বলেন, প্রতিফলিত আলো যেহেতু মানুষের তৈরি তাই তা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। পৃথিবী থেকে ওই চাঁদগুলোকে উজ্জ্বল তারার মতোই লাগবে।


সর্বশেষ সংবাদ