কলেজ শিক্ষক এখন গ্রিল মিস্ত্রির শ্রমিক!

মহামারি করোনা পরিস্থিতিতে অর্থ সংকটে পড়ে বর্তমানে রাজশাহীর বাঘায় জহুরুল ইসলাম বাবলু নামের এক কলেজ শিক্ষক এখন গ্রিল শ্রমিকের কাজ করছেন। তিনি পাঁচপাড়া আবদুর রহমান সরকার বিএম কলেজের কম্পিউটার অপারেশন বিষয়ের প্রভাষক ছিলেন। দীর্ঘ ১৫ বছর চাকরি করেও প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত না হওয়ায় চরম অর্থ সংকটে পড়ে সবশেষে তিনি এই পেশায় আসেন।

পরিবারে বৃদ্ধ মাসহ সাত সদস্যকে চালাতে গিয়ে হিমশিম খেয়ে গত দুই মাস ধরে দৈনিক ২০০ টাকা মজুরিতে শ্রমিকের কাজ করছেন। তিনি আড়ানী ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড আ’লীগের নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

জানা যায়, জহুরুল ইসলাম বাবলু ১৯৯৯ সালে রাজশাহী কলেজ থেকে দর্শন বিভাগ থেকে মাস্টার্স পাস করেন। তারপর কম্পিউটার বিষয়ে কোর্স করে ২০০৫ সালে বাঘা উপজেলার পাঁচপাড়া আবদুর রহমান সরকার বিএম কলেজের কম্পিউটার অপারেশন বিষয়ে প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন। কিন্তু কলেজটি সরকারিভাবে সব শর্ত পূরণ করলেও ১৭ বছরে এমপিওভুক্ত হয়নি। ছোটবেলায়ই বাবলুর বাবা মারা যান। যতটুকু জায়গা-সম্পত্তি ছিল বিভিন্ন সময় বিক্রি করে ছোট দুই ভাই ও চার বোনকে লেখাপড়া শিখিয়ে বিয়ে দিয়েছেন।

তারা এখন আলাদাভাবে বসবাস করে। বর্তমানে ৬ শতাংশ জমির ওপর দুটি ঘর তুলে বৃদ্ধ মা ও বোনের দুই ছেলেকে নিয়ে সংসার চালাতে গিয়ে বেকায়দায় পড়েন। এর আগে বেতন ছাড়া কলেজে চাকরির পাশাপাশি হাটবাজারে খাজনা আদায়ের শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। কিন্তু করোনার কারণে সে কাজটিও হারান।

এ বিষয়ে জহুরুল ইসলাম বাবলু বলেন, চাকরি করি কিন্তু বেতন নেই। সংসার চালাতে খরচ হয়। কী করে সংসার চালাব এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়ি। লজ্জা না করে এবং কোনো উপায় না পেয়ে অবশেষে গ্রিল শ্রমিকের কাজ করছি। তবে আশায় আছি কলেজ এমপিওভুক্ত হলে এ কাজ আর করা লাগবে না।


সর্বশেষ সংবাদ