পরীক্ষা ছাড়াই দ্বিতীয় বর্ষে উত্তীর্ণ কলেজ শিক্ষার্থীরা

  © ফাইল ফটো

করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে বন্ধ রয়েছে দেশের কলেজগুলো। এই সময়ে একাদশ শ্রেণির শিক্ষাবর্ষ শেষ হলেও প্রথমবর্ষের পরীক্ষা নেয়া যায়নি। এদিকে সেশনের সময় চলে যাওয়ায় একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের নিয়ে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে কলেজগুলো। আগামী বছর এপ্রিলে তাদের এইচএসসি পরীক্ষা নির্ধারিত আছে।

আর দ্বাদশ শ্রেণিতে উত্তীর্ণ না হওয়ায় অনলাইনে বা অন্যভাবে তাদের শিক্ষাকার্যক্রম চালানো যাচ্ছে না। তাই লেখাপড়ার গতি অব্যাহত রাখতে বিভিন্ন কলেজ শিক্ষার্থীদের দ্বাদশ শ্রেণিতে ‘অটোপাস’ দিচ্ছে। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পরীক্ষা ছাড়াই দ্বাদশ শ্রেণিতে শিক্ষার্থীদের উত্তীর্ণ করা হয়েছে, আবার কোথাও উত্তীর্ণের প্রক্রিয়া চলছে।

এতে শিক্ষা বোর্ডের কোন আপত্তি নেই বলে জানান ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, করোনার এই সময়ে সব প্রতিষ্ঠানেই শ্রেণিকাজ বন্ধ আছে। বন্ধ আছে পরীক্ষা। তবে শিক্ষার্থীদের একাডেমিক রেকর্ড কলেজে আছে। সেটার ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থীদের পরের ক্লাসে উত্তীর্ণ দেখাতে পারে। এতে বোর্ডের আপত্তি থাকবে না।

এদিকে করোনা সংকটে দ্বাদশ শ্রেণিতে উত্তীর্ণ না হওয়ায় অনলাইনে বা অন্যভাবে ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষাকার্যক্রম চালানো যাচ্ছে না। তাই শিক্ষার্থীদের ‘অটোপাস’ দিয়ে দ্বাদশ শ্রেণির পাঠদান গতিশীল করার কথা জানান রাজধানীর শেখ বোরহানউদ্দিন পোস্ট গ্রাজুয়েট কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আবদুর রহমান। তিনি বলেন, দ্বাদশ শ্রেণিতে শিক্ষার্থীদের উত্তীর্ণ করা হলে অনলাইন ক্লাস শুরু করা সম্ভব। না হলে তারা লেখাপড়ার বাইরে থাকবে। তাই উত্তীর্ণ দেখানো উচিত। আমরা উত্তীর্ণ দেখিয়েই অনলাইন ক্লাস শুরু করেছি।

করোনা পরিস্থিতির কারণে নটরডেম কলেজ শিক্ষার্থীদের বাড়িতে লিখিত অংশের পরীক্ষা নিয়ে একাদশ শ্রেণী থেকে সবাইকে দ্বাদশ শ্রেণীতে উত্তীর্ণ করা হয়েছে। উত্তীর্ণ সকল শিক্ষার্থীকে চলতি জুলাই মাসের ২৬ তারিখের মধ্যে দ্বাদশ শ্রেণীতে ভর্তি ফি’র ৯ হাজার ৪০০ টাকাসহ চলতি জুলাই মাস ও আগামী আগস্ট এবং সেপ্টেম্বর মাসের ৭ হাজার ৮০০ টাকা পরিশোধের জন্য নোটিশ দিয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। গত বৃহস্পতিবার এই নোটিশ দেয়া হয়েছে। তবে করোনা ভাইরাস মহামারীর এই সময়ে এতো টাকা একসাথে পরিশোধ করা কষ্টকর বলে জানায় শিক্ষার্থীরা।

রাজধানীর আরেক প্রতিষ্ঠান রাজউক উত্তরা মডেল কলেজ দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষার ভিত্তিতে পদোন্নতি দিয়েছ শিক্ষার্থীদের। কলেজের সিনিয়র প্রধান প্রশাসনিক কর্মকর্তা আজহারুল আলম জানান, মার্চের শেষে একাদশ শ্রেণির পরীক্ষা নেয়ার কথা ছিল। সেটা সম্ভব না হওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

একই পথে হাঁটছে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ। অধ্যক্ষ অধ্যাপক ফওজিয়া জানান, প্রথম ও দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পরের স্তরে উত্তীর্ণ করার চিন্তা চলছে। ঢাকা শিক্ষা বোর্ড ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আলাপ করে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হবে।

জানা গেছে, গত মার্চের শেষে কলেজগুলোর একাদশ শ্রেণির পরীক্ষা নেয়ার কথা ছিল। দেশে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে সেটা আর সম্ভব হয়নি। আগামী বছর এপ্রিলে তাদের এইচএসসি পরীক্ষা নির্ধারিত আছে। যদিও চলতি বছরের এইচএসসি পরীক্ষা এখনো স্থগিত রয়েছে। এদিকে করোনার কারণে আগস্টের ৬ তারিখ পর্যন্ত সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাধারণ ছুটি চলছে।


সর্বশেষ সংবাদ