অনলাইন শিক্ষায় শীর্ষ দশের ৭টিই প্রাইভেট, তিনটি পাবলিক

  © টিডিসি ফটো

বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমের তালিকায় শীর্ষ ১০ বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ৭টিই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। বাকি তিনটির মধ্যে একটি সাধারণ এবং বাকি দুটো প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়। তালিকায় শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে বেসরকারি বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অব ফ্যাশন অ্যান্ড টেকনোলজি।

বর্তমানে বাংলাদেশ গবেষণা ও শিক্ষা নেটওয়ার্কের (বিডিরেন) ডেটা সেন্টারের জুম অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চালাচ্ছে দেশের ১৪২টি পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়। বিডিরেন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

তবে বিডিরেন প্রদত্ত জুম সুবিধা না পেয়ে অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব তথা তাদের অনলাইন ক্লাসের তথ্য এই ডেটায় অন্তর্ভূক্ত নেই। আবার অনেক বিশ্ববিদ্যালয় জুম অ্যাপ্লিকেশনের বাইরেও ভিন্ন প্ল্যাটফর্ম কিংবা প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব সফটওয়্যার ব্যবহার করে অনলাইন ক্লাস পরিচালনা করছেন, সেই তথ্যও এখানে নেই।

জানা গেছে, বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাতের কারণে দীর্ঘদিন যাবত দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। বন্ধের এ ক্ষতি পুষিয়ে নিতে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের টেলিভিশনের মাধ্যমে পড়ানো হচ্ছে। অন্যদিকে সেশনজট ঠেকাতে অনলাইনের মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে নিচ্ছে পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যায়গুলো।

জানা যায়, বন্ধের সময়ে অনলাইনে একাডেমিক কার্যক্রম চালানোর আহবান জানিয়ে গত ২৩ মার্চ দেশের সব পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য নির্দেশনা জারি করে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।

নির্দেশনায় বলা হয়, বিডিরেনের ডেটা সেন্টারের জুম অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে বিনা খরচে এ অনলাইন কার্যক্রম চালানো সম্ভব। এ বিষয়ে সহযোগিতার জন্য শিক্ষকদের বিডিরেনের সঙ্গে যোগাযোগের আহবান জানানো হয়। ইউজিসির ওই নির্দেশনায় সাড়া দিয়ে এখন পর্যন্ত দেশের ১৪২টি বিশ্ববিদ্যায়ের শিক্ষকরা অনলাইন কার্যক্রম শুরু করেছে।

বিডিরেন এর সর্বশেষ তথ্য মতে, বিডিরেনের ডেটা সেন্টারের জুম অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে সোমবার (৬ জুলাই) পর্যন্ত দেশের ১৪২টি বিশ্ববিদ্যায়ের ৫০ লাখ ৮ হাজার ৯৯৭ জন শিক্ষার্থী (একই শিক্ষার্থীর একাধিকবার অংশগ্রহণের তথ্য অনুর্ভূক্ত) অনলাইন ক্লাসে অংশ নিয়েছেন। এ তালিকার শীর্ষে রয়েছে বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অব ফ্যাশন অ্যান্ড টেকনোলজি। এখন পর্যন্ত এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ৬ লাখ ২১ হাজার ৫৭১ জন শিক্ষার্থী (একই শিক্ষার্থীর একাধিকবার অংশগ্রহণের তথ্য অন্র্ভূক্ত) অনলাইন ক্লাসে অংশ নিয়েছে।

এরপর রয়েছে গ্রিন ইউনিভার্সিটি। এ পর্যন্ত এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪ লাখ ১১ হাজার ৫৫ জন শিক্ষার্থী অনলাইন ক্লাসে অংশ নিয়েছে। শীর্ষ তিনে অবস্থান করছে আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম। এ পর্যন্ত এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ লাখ ১৫ হাজার ৩৭৫ জন শিক্ষার্থী অনলাইন ক্লাসে অংশ নিয়েছে।

এরপর ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ২ লাখ ৬৫ হাজার ৬১৭ জন, আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ লাখ ৫২ হাজার ৪৬৪ জন, পোর্ট সিটি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ১ লাখ ৭৬ হাজার ২৭৬ জন শিক্ষার্থী এ পর্যন্ত অনলাইন ক্লাসে অংশ নিয়েছে।

তালিকার ৭ম অবস্থানে রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যাল। এ পর্যন্ত এক লাখ ৭৪ হাজার ২৪২ জন শিক্ষার্থী এ পর্যন্ত অনলাইন ক্লাসে অংশ নিয়েছে। এরপর ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির এক লাখ ৭৩ হাজার ৩১৫ জন শিক্ষার্থী এ পর্যন্ত অনলাইন ক্লাসে অংশ নিয়েছে। তালিকার ৮ম ও ৯ম স্থানের রয়েছে যথাক্রমে রাজশাহী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট) এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)।

রুয়েটের এক লাখ ১৬ হাজার ৬০৬ জন এবং বুয়েটের এক লাখ ১৩ হাজার ৫৭৮ জন শিক্ষার্থী এ পর্যন্ত অনলাইন ক্লাসে অংশ নিয়েছে।

নতুন এই প্ল্যাটফর্মে (অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম) এখনও কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, অল্প সময়ের মধ্যে আমরা সেই সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে উঠে নতুন এই বাস্তবতার সাথে অভ্যস্ত হয়ে উঠব। করোনা পরবর্তী সময়েও স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রমের সাথে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম চলমান থাকবে।

সোমবার (৬ জুলাই) এক ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে তিনি আরও বলেন, বৈশ্বিক মহামারি করোনার কারণে দীর্ঘদিন ধরে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। শিক্ষা কার্যক্রমকে চালিয়ে নিতে আমরা অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমের ওপর গুরুত্বারোপ করছি। ইতোমধ্যে অসংখ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অনলাইনে শিক্ষাদান করে যাচ্ছে। তবে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমে অংশ নেওয়ার ক্ষেত্রে অনেক শিক্ষার্থীর পক্ষেই ইন্টারনেটের ব্যয় বহন করা সম্ভব হচ্ছে না। শুধু শিক্ষার্থীদের জন্য বিনামূল্যে ইন্টারনেট প্রদান বা স্বল্পমূল্যে ইন্টারনেট প্যাকেজ দেওয়া যায় কি-না সে বিষয়ে মোবাইল অপারেটর কোম্পানিগুলোর সাথে আলোচনা চলছে।


সর্বশেষ সংবাদ