ধর্ষণের বিচারে আইনি ফাঁকফোকর দূর করতে হবে: ঢাবি উপাচার্য

  © ফাইল ফটো

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান বলেছেন, ‘আমরা লজ্জিত, মর্মাহত যে, আমাদের একটি মেয়ে ধর্ষণের শিকার হয়েছে। ধর্ষকের প্রতি আমরা তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। আমরা সবাই সংক্ষুব্ধ। সবাই ধর্ষকের শাস্তির দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। উদ্দেশ্য একটাই, ধর্ষকের দ্রুততম ও সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা।’

রাজধানীর কুর্মিটোলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় ধর্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে আয়োজিত মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন। আজ বুধবার বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি এ মানববন্ধনের আয়োজন করে।

অধ্যাপক আখতারুজ্জামান বলেন, ‘আমরা চাই এই নরপিচাশের যেন দ্রুত শাস্তি নিশ্চিত করা যায়। আমাদের দাবি হবে, সরকারের আইনি কাঠামোতে যদি কোন ফাঁক-ফোকর থেকে থাকে, তাহলে তা যেন দূর করা হয়। এ ধরনের ঘটন যেন আর না হয়। এই ঘটনা যেন শেষ ঘটনা হয়। আর কোন মেয়ে যেন ধর্ষণের শিকার না হয়।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি আয়োজিত মানববন্ধনে শতাধিক শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন। ব্যানারে লেখা ছিলো, ‘আমাদের সন্তানতুল্য ছাত্রীকে ধর্ষণের প্রতিবাদে ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন।’

পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজে ওই ছাত্রীকে দেখে সাংবাদিকদেরকে ঢাবি উপাচার্য বলেন, ‘মেয়েটি আগের চেয়ে ভালো আছে। মানসিকভাবে শক্ত ও সুস্থ্য হয়ে উঠছে ধীরে ধীরে। তার সাথে কথা হয়েছে।’

এসময় ধর্ষকের গ্রেপ্তারে স্বস্তি প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘এই ঘটনাই যেন শেষ ঘটনা হয়। তাকে দ্রুততম সময়ে গ্রেপ্তার করায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’ এসময় ওই ছাত্রী পাশে থাকার আশ্বাস দেন তিনি।

এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় ইতিমধ্যে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)। পরে ধর্ষকের ছবি ভুক্তভোগী ওই ছাত্রীকে দেখানোর পর তিনি সনাক্ত করেছেন। মঙ্গলবার রাতে অভিযানের পর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

র‍্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লে. কর্নেল সারোয়ার বিন-কাশেম গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, গ্রেপ্তার করা ব্যক্তির ছবি ঢাবি ছাত্রীকে দেখানো হয়েছে। তিনি ধর্ষক বলে তাঁকে শনাক্ত করেছেন। আজ দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানাবে র‌্যাব।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মঙ্গলবারই জানিয়েছিলো, ধর্ষণকারীর বিষয়ে ছাত্রীর বিবরণ এবং আশপাশের সিসি ক্যামেরা ফুটেজ বিশ্লেষণ করে একাধিক সন্দেহভাজন  ব্যক্তিকে হিসেবে শনাক্ত করেন এবং নজরদারিতে আছেন।

ক্যান্টনমেন্ট থানায় করা মামলার এজাহার অনুযায়ী, ধর্ষকের উচ্চতা ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি হতে পারে।গায়ের রং শ্যামলা, গড়ন মাঝারি। জিনসের পুরোনো ফুলপ্যান্ট ও ময়লা কালচে ফুলহাতা জ্যাকেট। পায়ে স্যান্ডেল এবং মাথার চুল ছোট করে ছাঁটা বলেও উল্লেখ করা হয়।

মঙ্গলবার পুলিশ সপ্তাহের অনুষ্ঠানে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, অপরাধীকে ধরতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।

গত রবিবার রাজধানীর কুর্মিটোলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস থেকে নামার পর ধর্ষণের শিকার হন দ্বিতীয় বর্ষের এক ছাত্রী।পরে রাত ১২টার দিকে ওই ছাত্রীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করান তার সহপাঠীরা।

এর পর থেকেই ধর্ষককে গ্রেফতার ও শাস্তি দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আন্দোলন চলছে।  ধর্ষণের শিকার ছাত্রী ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।


সর্বশেষ সংবাদ