ভারতীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনার সুযোগ-সুবিধা নিয়ে ঢাকায় মেলা

ভারতের বেশ কয়েকটি স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) অনুষ্ঠিত হচ্ছে ‘স্টাডি ইন ইন্ডিয়া’ মেলা। ভারতবর্ষের বিখ্যাত সব বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ এবং বোর্ডিং স্কুলগুলোর শিক্ষার মান প্রদর্শনের জন্য মেলাটি চলবে শনিবার পর্যন্ত। একইভাবে সোমবার ও মঙ্গলবার চট্টগ্রামের পেনিনসুলা হোটেলে এবং ২৫ জুলাই খুলনার হোটেল সিটি ইন এ মেলা অনুষ্ঠিত হবে।

রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত বিআইসিসিতে সকাল ১০টায় মেলার উদ্বোধন করেন ভারতীয় হাইকমিশনের ফার্স্ট সেক্রেটারি (এডুকেশন) জিসনু প্রসন্ন মুখার্জী। আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, স্টাডি ইন ইন্ডিয়া মেলায় ভারতের ৪০টিরও বেশি বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ এবং বোর্ডিং স্কুলগুলো বিভিন্ন শিক্ষা কার্যক্রম প্রদর্শন করা হবে। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা ও তাদের অভিভাবকরা সহজেই ভারতীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি বিষয়ে এবং তথ্য সংগ্রহ করতে পারবে। এছাড়া শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকরা এই মেলা থেকে তাদের চাহিদা, সুযোগ সুবিধা, কোর্স ফি, ইনস্টলমেন্ট সুবিধাসহ সকল তথ্য সংগ্রহ করতে পারবেন।

মেলা উদ্বোধনকালে জিসনু প্রসন্ন মুখার্জী বলেন, ‘ভারত বিশ্বজুড়ে একটি বড় র্ব্যান্ড। অনেক বিষয় জানতে ও বুঝতে মানুষ সারা বিশ্ব থেকে এখানে আসে। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে যুব সংযোগ শক্তিশালী করা উচিত। ভারতে এসে বিভিন› বিষয়ে জ্ঞান আহরণের জন্য বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের অনেক সুযোগ সুবিধা রয়েছে বলেও জানান তিনি।’

মেলায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো ইন্টারন্যাশনাল ব্যাকাল্যুটে (আইবি), ক্যামব্রীজ (আইজিসিএসি) ও ইন্ডিয়ান বোর্ডের আইএসসিই এবং সিবিএসই মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করে। মেলায় অংশগ্রহনকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর বিষয়ে ধারণা, বিশ্বব্যাপী শিক্ষার অন্বেষণ, আরামদায়ক এবং নিরাপদ পরিবেশে সাশ্রয়ী মূল্যের খরচ জানতে একটি চমৎকার সুযোগ। অংশগ্রহনকারী বোর্ডিং স্কুলগুলোর চমৎকার অবকাঠামো সুবিধা, শিক্ষণ অনুষদ, বহিরঙ্গন কার্যক্রম, ক্রীড়া এবং এএমপি সুবিধা প্রদান করবে।

অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- কাসিগা স্কুল (দেহরাদুন), বিরলা ইন্টারন্যাশনাল স্কুল (রাজস্থান), এমআইটি পুনের বিশ্বশান্তি গুরুকুল (পুনে), ইকোলে গ্লোবাল ইন্টারন্যাশনাল গার্লস স্কুল (দেহরাদুন), দিল্লি পাবলিক স্কুল (দুর্গাপুর), আদিত্য একাডেমী মাধ্যমিক স্কুল (কলকাতা), রেডব্রিজ ইন্টারন্যাশনাল একাডেমী (বাঙ্গালুর), সঞ্জয় ঘোড়াওয়াত ইন্টারন্যাশনাল স্কুল (কোলহাপুর) ইত্যাদি।

আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বাংলাদেশে শিক্ষার্থীদের একটি বড় সংখ্যা প্রতি বছর বাংলাদেশ থেকে ভারতে যায় উচ্চশিক্ষা অর্জনের জন্য। বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা সবসময় ভারতকে এগিয়ে রাখে। কারণ পশ্চিমা দেশগুলোর তুলনায় ভারতে শিক্ষা ব্যয় অনেক কম। তাছাড়া ভারত ও বাংলাদেশের সংস্কৃতি প্রায় একই ধরনের। এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের সময় এই মেলা অনুষ্ঠিত হলো যার ফলে শিক্ষার্থীরা বাড়তি সুবিধা পাবেন।

মেলায় ইঞ্জিনিয়ারিং, মেডিকেল, প্যারামেডিকাল, ডেন্টাল, নার্সিং, বায়োটেকনোলজি, ফার্মেসী, আইটি, এমবিএ, বিবিএ, হোটেল ম্যানেজমেন্ট, জার্নালিজম, স্থাপত্য এবং আরও অনেক বিষয়সহ নিজ নিজ কলেজের মাধ্যমে ভর্তির ব্যবস্থা রয়েছে।

মেলায় অংশগ্রহণকারী অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো- এমিটি ইউনিভার্সিটি (কলকাতা), এডামস ইউনিভার্সিটি (কলকাতা), ব্রেইনওয়্যার ইউনিভার্সিটি (কলকাতা), জেআইএস ইউনিভার্সিটি (কলকাতা), দয়ানন্দা সাগর ইউনিভার্সিটি (ব্যাঙ্গালোর), শ্রী রামচন্দ্র ইনস্টিটিউট অফ হায়ার এডুকেশন এন্ড রিসার্চ, (চেন্নাই), আদিত্য এডুকেশনাল ইনস্টিটিউটস (কালিন্দা), এসআরএম ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্সে এবং টেকনোলজি (চেন্নাই), আচার্য ইনস্টিটিউটস (ব্যাঙ্গালোর), এআইএমএস ইনস্টিটিউটস (ব্যাঙ্গালোর), শার্দা ইউনিভার্সিটি (দিল্লি এনসিআর), মানভ রাসনা এডুকেশনাল ইনিস্টিটিউশন (দিল্লি এনসিআর), লাভলী প্রফেশনাল ইউনিভার্সিটি (পাঞ্জাব) অন্যতম। মেলায় এছাড়াও অন্যান্য বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও অংশ নিচ্ছে।

প্রদর্শনীতে অ্যাফেয়ার্স মিডিয়া এক্সিভিশনের চেয়ারম্যান সঞ্জীব বলিয়া বলেন, ‘কর্মজীবনের বিষয়ে একটি সুনিশ্চিত সিদ্ধান্ত নিতে হবে এবং একটি পেশাগত কোর্স চালিয়ে যেতে হবে। কেবলমাত্র যদি আপনি মনে করেন যে এটিতে আপনি হতাশ না হন ও আগ্রহ দেখান এবং তারপরেও আপনার সফলতার সম্ভাবনা থাকতে পারে।’ স্টাডি ইন ইন্ডিয়া শীর্ষক শিক্ষামেলাটি ভারতের আ্যাফেয়ার্স এক্সিবিশনস প্রাইভেট লিমিটেড এবং বাংলাদেশের এ টু জেড স্টাডির আয়োজনে অনুষ্ঠিত হচ্ছে আর সহযোগিতায় রয়েছে ভারতীয় হাইকমিশন।

উল্লেখ্য, ভারত বাংলাদেশ সম্পর্ক স্থাপন করেছে শতাব্দী পুরাতন সামাজিক-সাংস্কৃতিক, ঐতিহাসিক এবং ভৌগোলিক আকৃতির দ্বারা। দুদেশের আত্মকেন্দ্রিক সম্পর্কের কারণে জনগণের কল্যাণ ও উন্নয়নশীলে বড় একটি প্রভাব আছে। দুই দেশের সংযোগ স্থাপন ও জনগণকে শক্তিশালী করতে শিক্ষা একটি গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে।


সর্বশেষ সংবাদ