শিক্ষার্থী নয়, শিক্ষকবান্ধব হয়ে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেট

‘শিক্ষা ও গবেষণা’ এই মানদণ্ডের ওপর ভিত্তি করে গড়ে তোলা হয়েছে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। কিন্তু কয়েক বছরের ধারাবাহিকতায় এবারও গবেষণায় নামমাত্র বরাদ্দ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। ফলে নতুন জ্ঞান সৃষ্টির পথ রুদ্ধ হয়ে যাচ্ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এবারও বাজেটের এক শতাংশের কম থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ দুই শতাংশের কিছু বেশি বরাদ্দ রয়েছে। এ বরাদ্দ বৃদ্ধির জন্য দীর্ঘদিন ধরেই শিক্ষাবিদরা পরামর্শ দিয়ে এলেও তাতে তেমন সাড়া দেয়নি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। অথচ বেতন-ভাতা-পেনশন ও অনুন্নয়ন খাতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বাজেটের সিংহভাগ অর্থ বরাদ্দ রাখা হয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গবেষণার হার ক্রমেই কমছে। শিক্ষকরাও গবেষণায় এখন তেমন আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। এর বিপরীতে শিক্ষকদের একটি অংশকে রাজনীতি, দলীয় পদ-পদবির পেছনে ছোটাছুটি ও সান্ধ্য কোর্স কিংবা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস নিতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। এসব কারণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষও গবেষণায় বাড়তি গুরুত্ব দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছে না। বরং বেতন-ভাতা, উন্নয়ন-অনুন্নয়ন খাতে ব্যয় বৃদ্ধিতে তাদের মনোযোগ বেশি।

শিক্ষাবিদ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন, ‘শিক্ষা ও গবেষণা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মানদণ্ড। বিশ্ববিদ্যালয়ের মান বোঝা যায়, কত ভালো গবেষণা হয় তার ওপর। কিন্তু এখানে শিক্ষকতার মান কমেছে। পড়াশোনা হয় সরকারি চাকরি নামক সোনার হরিণ ধরার জন্য, গবেষণার জন্য নয়। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বরাদ্দের ৯০ শতাংশই বেতন-ভাতা এবং অনুন্নয়ন খাতে ব্যয় হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো উন্নতমানের কোচিং সেন্টারে পরিণত হয়েছে। অথচ নানা সীমাবদ্ধতার মধ্যেও আগে উন্নত গবেষণা হতো। এখন শুধু বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয়ে ভালো গবেষণা হচ্ছে।’

অবশ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক জানিয়েছেন, বাজেটে গবেষণার জন্য যে বরাদ্দ রাখা হয়, তা মূলত গবেষণা সেন্টার কিংবা ল্যাবে দেওয়া হয়। ফলে শিক্ষকদের ব্যক্তিগতভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের বরাদ্দে গবেষণা করার সুযোগ কম। এছাড়া সেন্টারগুলোর সভা-সেমিনারের মতো কর্মকাণ্ডে এ অর্থ ব্যয় হয়, শিক্ষকদের সেখানে তেমন গবেষণার সুযোগ নেই। কিছু অনুষদকেন্দ্রিক নামমাত্র আট থেকে ১০ হাজার টাকা বরাদ্দ মিললেও তা একেবারেই অপ্রতুল। ফলে তারা অবসর সময়ে অন্য কর্মকাণ্ডে বিশেষত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কিংবা সান্ধ্য কোর্সে ক্লাস নেওয়ার মতো কাজে জড়িয়ে পড়ছেন। গবেষণা করতে চাইলেও ব্যক্তিগত খরচের ব্যাপার থাকায় তারা আগ্রহ দেখান না বলে জানিয়েছেন।

প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, দেশের ৪৫টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ২০১৯-২০ অর্থবছরে আট হাজার ৮৮ কোটি ৪৯ লাখ টাকার বাজেট অনুমোদন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। এর মধ্যে পাঁচ হাজার ৮৯ কোটি ৪৬ লাখ টাকা অনুন্নয়ন এবং দুই হাজার ৯৯৯ কোটি তিন লাখ টাকা উন্নয়ন খাতে ব্যয় করা হবে। আগের অর্থবছরের তুলনায় অনুন্নয়ন বাজেট বেড়েছে ১৪ দশমিক ৪৫ শতাংশ। গবেষণার জন্য ৬৪ কোটি ৪০ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে, যা আগের অর্থবছরের তুলনায় মাত্র দুই কোটি টাকা বেশি।

এ ব্যাপারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. এসএমএ ফায়েজ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় গবেষণায় বরাদ্দ অত্যন্ত কম, এতে কোনো সন্দেহ নেই। একটি বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণা ছাড়া চলতে পারে না। শিক্ষকতা শুধু টিচিং নয়, গবেষণাও প্রয়োজন। সমাজ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর দিকে চেয়ে থাকে। গবেষণার মাধ্যমেই সমস্যার সমাধান বের করা হয়। এজন্য গবেষণার কোনো বিকল্প নেই।’

সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘গবেষণায় বরাদ্দ কম সত্য, তবে অন্যান্য ফান্ড থেকে অনেক বরাদ্দ আসছে। শিক্ষকদের সদিচ্ছা থাকলে এর অর্থ দিয়েই ভালো মানের গবেষণা সম্ভব। এছাড়া বরাদ্দ বাড়ানোও প্রয়োজন। তবে যা বরাদ্দ আছে সেটুকুর সদ্ব্যবহার হলেও ভালো গবেষণা হবে।’

২০১৯-২০ অর্থবছরের জন্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বাজেট বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ৮১০ কোটি ৪২ লাখ টাকার বাজেট করা হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় ৯ দশমিক ৩৫ শতাংশ বেশি। অথচ গবেষণা ও বিশেষ গবেষণা মিলিয়ে বরাদ্দ করেছে ১৬ কোটি ৮৬ লাখ টাকা, যা বাজেটের মাত্র দুই দশমিক এক শতাংশ। মোট বাজেট বাড়লেও গবেষণায় বরাদ্দ কমছে দুই দশমিক ৮৪ শতাংশ। অথচ বেতন ও ভাতাদি খাতে ৫৫ দশমিক ৮২ শতাংশ, পণ্য ও সেবা বাবদ ব্যয় ২১ দশমিক ১৯ শতাংশ, বিশেষ অনুদান খাতে এক দশমিক ৩১ শতাংশ এবং অন্যান্য অনুদান খাতে ২১ দশমিক ৬৮ শতাংশ বরাদ্দ রাখা হয়েছে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় বাজেট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েরই।

একই অর্থবছরে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ২৫৯ কোটি ৯৭ লাখ টাকার বাজেটে গবেষণা খাতে বরাদ্দ মাত্র তিন কোটি টাকা, যা মোট বাজেটের এক দশমিক ১৫ শতাংশ। বিপরীতে শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন বাবদ বরাদ্দ ৮৫ কোটি ৪৫ লাখ টাকা, যা বাজেটের ৩২ দশমিক ৮৭ শতাংশ। অবসরকালীন সুবিধা বাবদ বরাদ্দ ৪০ কোটি টাকা, যা বাজেটের ১৫ দশমিক ৩৯ শতাংশ। অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর দাবি থাকলেও দেওয়া হয়েছে তিন কোটি ২৬ লাখ টাকা, গত বছর ছিল তিন কোটি ১২ লাখ।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ১৩২ কোটি ৭০ লাখ টাকার বাজেটে গবেষণা ও উদ্ভাবনী খাতে বরাদ্দ মাত্র এক কোটি ৭০ লাখ টাকা, যা বাজেটের এক শতাংশের সামান্য বেশি। অথচ বেতন-ভাতা বাবদ বরাদ্দ ৪৫ কোটি ৬০ লাখ টাকা, যা মোট বাজেটের এক তৃতীয়াংশ। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেট ৪৮৮ কোটি ১৫ লাখ ৮৫ হাজার টাকা। এর মধ্যে পৌনঃপুনিক (রাজস্ব) ২৮৫ কোটি টাকা এবং বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির জন্য ২০২ কোটি ৯৭ লাখ ৮৫ হাজার টাকা বরাদ্দ রয়েছে।

একই অর্থবছরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ৪২৪ কোটি ১৫ লাখ টাকার বাজেটে গবেষণা খাতে বরাদ্দ মাত্র চার কোটি ৪০ লাখ টাকা, যা মোট বাজেটের মাত্র এক শতাংশ। এছাড়া এ অর্থবছরে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৭ কোটি ১১ লাখ টাকার বাজেটে গবেষণা খাতে বরাদ্দ মাত্র ৫৩ লাখ টাকা, যা মোট বাজেটের এক দশমিক ৪৩ শতাংশ। অথচ বেতন ও ভাতাদি বাবদ ব্যয় ধরা হয়েছে ২২ কোটি এক লাখ টাকা, যা মোট বাজেটের ৫৯ দশমিক তিন শতাংশ।

জানা গেছে, সদ্য শেষ হওয়া ২০১৮-১৯ অর্থবছরে গবেষণার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ১৫ কোটি, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) সাত কোটি, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় চার কোটি ২৫ লাখ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় দুই কোটি ৭৫ লাখ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় দুই কোটি ১০ লাখ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ৬৫ লাখ, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় এক কোটি ৩৫ লাখ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এক কোটি ২৫ লাখ, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ৪০ লাখ টাকা বরাদ্দ পায় ইউজিসি থেকে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বলছেন, শিক্ষা-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বাবদ বাজেটের সিংহভাগ ব্যয় হয়ে গেলেও তার কাক্সিক্ষত সুফল তারা পান না। বিশেষত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করেন না। প্রশাসনিক কাজে প্রায়ই ভোগান্তি পোহাতে হয়। অপরদিকে আবাসন সংকট নিরসন, ক্লাস রুম, লাইব্রেরি, ক্যান্টিন, চিকিৎসাসেবাসহ নানা ক্ষেত্রে সমস্যা সমাধানের দাবি দীর্ঘদিনের। কিন্তু এগুলো খুব বেশি গুরুত্ব দেয় না বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তাদের অভিযোগ, এ নিয়ে আন্দোলন হলেও ফল পাওয়া যায় না।

ছাত্র সংসদ এবং সিনেটে ছাত্র প্রতিনিধি না থাকায় এ নিয়ে তেমন কথা বলারও সুযোগ নেই সাধারণ শিক্ষার্থীদের। অবশ্য সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচন হওয়ার পাশাপাশি সিনেটে ছাত্র প্রতিনিধি পেলেও সেখানে এ ধরনের দাবির সপক্ষে জোরালো বক্তব্য পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। মূলত ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের সিংহভাগ প্রতিনিধি থাকায় এমনটা হয়েছে বলে কয়েকজন ছাত্র অভিযোগ করেছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র এবং একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক বারী হাসান বলেন, ‘গবেষণা একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়া বা বরাদ্দ কম থাকা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য না।’ তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন দাবিও বাজেটে এড়িয়ে যাওয়া হচ্ছে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকতেও এমনটা দেখেছি। এর অবসান হওয়া উচিত।’

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের আহ্বায়ক রাইসুুল ইসলাম নয়ন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণার জন্য যে বাজেট দেওয়া হয় তা খুবই কম। জকসু আইন প্রণয়ন, ছাত্রী হল নির্মাণ সম্পন্ন করা, ক্যান্টিনের খাবারের দাম কমানোসহ শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছে।’ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেট হলেও তাতে সমাধানের পথ খোলেনি বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী সায়মা বলেন, ‘আমাদের হল না থাকায় মেসে থাকতে হয় এতে প্রচুর সমস্যা হয়, নিরাপত্তাহীনতায় ভুগী। ক্যাম্পাসে একটাই কমন রুম। অসুস্থ হয়ে পড়লে প্যারাসিটামল আর নাপা ছাড়া কিছু মেলে না। ভালো চিকিৎসার ব্যবস্থা নেই মেডিক্যাল সেন্টারে।’ এগুলোর দ্রুত সমাধানের দাবি জানান তিনি। নৃবিজ্ঞানের ছাত্র অন্তু আহমেদ বলেন, ‘আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় একমাত্র অনাবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়, বঞ্চনার কোনো সীমা নেই। প্রত্যেক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় কিছু না কিছু ন্যূনতম সুবিধা থাকলেও জবি ১৪ বছরেও দিতে পারেনি।’

অধ্যাপক ড. এসএমএ ফায়েজ বলেন, ‘গবেষণায় বরাদ্দ কম সন্দেহ নেই, তবে শিক্ষকরা খুবই তৎপর থাকলে বাইরে থেকে অর্থ (ফান্ড) আনা অসম্ভব নয়। এছাড়া গবেষণায় অবশ্যই বরাদ্দ বাড়াতে হবে। বাড়তি বরাদ্দ দেওয়ার সরকারের দায়িত্ব। তবে সরকার ব্যর্থ হলেও শিক্ষকদের বসে থাকার সুযোগ নেই। যেভাবেই হোক গবেষণা চালিয়ে যেতে হবে।’

সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘শিক্ষকদের সান্ধ্য কোর্সে আগ্রহ দেখা যাচ্ছে, আমার বিশ্ববিদ্যালয়েও চাপ রয়েছে। তবে আমি এর পক্ষে নই। এতে স্বাভাবিক শিক্ষা কর্মকাণ্ড ক্ষতিগ্রস্ত হয়, এসব কোর্সের মানও ভালো নয়। তাছাড়া সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামো ব্যবহার করে বাণিজ্যিক কার্যক্রম করাকে সমর্থন করি না। শিক্ষকদের অবশ্যই গবেষণায় আগ্রহী হতে হবে।’

সার্বিক বিষয়ে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ঢিমেতালে চলছে, এভাবে চললে হবে না। আগে শিক্ষকরা অনেক সম্মানিত হলেও এখন অনেকে আসে পদের জন্য, ভিসি-প্রক্টরের পদ নিয়ে দ্বন্দ্বও হয়, রাজনৈতিক ব্যাপারও আছে। আন্তর্জাতিক জার্নালেও খুব সহজেই গোলমেলে তথ্য দিয়ে লেখা ছাপিয়ে দেওয়া যায়। শিক্ষকরা বাঁধাধরা পদোন্নতির ফাঁদে পড়লে তারা নিজেরাই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন, দেশেরও ক্ষতি করবেন।’

তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় গবেষণায় বরাদ্দ বাড়াতে হবে। শুধু গবেষণার জন্য একটি বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয় হওয়া প্রয়োজন, ভারত-পাকিস্তানেও এমন বিশ্ববিদ্যালয় আছে। জিডিপির দুই শতাংশ উচ্চশিক্ষায় বরাদ্দ দিতে হবে। এছাড়া শিক্ষক নিয়োগে মেধা ও যোগ্যতার মূল্যায়ন করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের র‌্যাংকিংয়ে উন্নতি করতে হলেও এর প্রয়োজন রয়েছে।’


সর্বশেষ সংবাদ