এই পাতাবাহার গাছটি কি সত্যিই মৃত্যুফাঁদ?

ডিয়েফেনবাকিয়া নামক পাতাবাহার গাছ
ডিয়েফেনবাকিয়া নামক পাতাবাহার গাছ  © ফাইল ফটো

বহুল প্রচারিত বাংলাদেশ প্রতিদিনে ‘ঘরে রাখা মৃত্যুফাঁদ যে গাছ!’ শিরোনামে, এনটিভি অনলাইনে ‘বিষাক্ত এই গাছগুলো হয়তো আপনার ঘরেই আছে’ শিরোনামে এবং আমাদেরসময় ডটকমে ‘‘পাতাবাহার ‘ডাম্ব’ হতে পারে মৃত্যুর কারণ!’’ শিরোনামের খবরে এমন দাবি করা হয়েছে। সবগুলো সংবাদে প্রায় একই ধরনের বক্তব্য। বলা হয়েছে, ‘বিশেষজ্ঞদের মতে, এই গাছের পাতা বা যে কোনো অংশ খাওয়ার বা গলায় যাওয়ার এক মিনিটের মধ্যে একটি শিশুর মৃত্যু হতে পারে। আর প্রাপ্তবয়স্করা মৃত্যুবরণ করতে পারে ১৫ মিনিটেই।’

এসব খবরে দাবি করা হচ্ছে, ‘‘ডিয়েফেনবাকিয়া’ নামক পাতাবাহার গাছটি বা এর যে কোনো অংশ খাওয়ার এক মিনিটের মধ্যে একটি শিশুর মৃত্যু হতে পারে। আর প্রাপ্তবয়স্কদের মৃত্যু হতে পারে মাত্র ১৫ মিনিটের মধ্যে।” তবে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস ফ্যাক্টচেকের অনুসন্ধানে এই দাবির সত্যতা মেলেনি।

উদ্ভিদ বিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে খবরগুলোতে আরও বলা হয়, ‘এই গাছ হাত দিয়ে ধরলে এবং ওই হাত যদি চোখে যায়, সেক্ষেত্রে অন্ধত্বের আশঙ্কাও রয়ে যায়।’

২০১৭ সাল থেকে বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমগুলোতে এই সংবাদটি ঘুরেফিরে আসছে। বাংলাদেশ প্রতিদিনে সংবাদটি ছাপা হয়েছে ২০১৮ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর, এনটিভি অনলাইনে ২০১৭ সালের ২ জানুয়ারি। প্রতিবেদনগুলোতে নির্দিষ্ট করে কোনো উৎস উল্লেখ করা হয়নি। শুধু উদ্ভিদবিজ্ঞানী কিংবা উদ্ভিদ বিশেষজ্ঞের উদ্ধৃতি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সুনির্দিষ্ট কোনো নাম বলা নেই।

যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব পিটসবার্গের ফার্মাকোলজি বিভাগের ইমেরিটাস অধ্যাপক এবং পিটসবার্গ পয়জন সেন্টারের প্রাক্তন পরিচালক অ্যাড ক্রেনজেলেক দীর্ঘদিন ধরে ডিয়েফেনবাকিয়া’র বিষক্রিয়া নিয়ে গবেষণা করেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠান স্নোপসকে অ্যাড ক্রেনজেলেক বলেন, ‘আমি আমার ক্যারিয়ারের কয়েক হাজার কেস পর্যালোচনা করেছি। ডিয়েফেনবাকিয়া কিংবা আরুম পরিবারের কোনো গাছকে প্রণঘাতী হতে দেখিনি। এই পাতাবাহারের পাতা শরীরের কোথাও লাগলে জ্বলার মতো অনুভূতি হয়। কমপক্ষে প্রথম শতাব্দীর পর থেকে পাতাবাহারের এই বৈশিষ্ট্যটি প্রায় সর্বজনবিদিত।’

অ্যাড ক্রেনজেলেক আরও বলেন, ‘এই গাছের পাতায় ক্যালসিয়াম অক্সালেট থাকে যা ত্বক বা মুখের সংস্পর্শে এলে তীব্র ব্যথা এবং ফোলাভাব ঘটায়। কিন্তু কখনও মৃত্যুর কারণ হয় না। চোখের সংস্পর্শে এলেও চোখে জ্বলুনির মতো অনুভূতি হতে পারে। কিন্তু স্থায়ীভাবে চোখের ক্ষতি করে দিতে পারে না এটি।’


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence