বিশ্বে একদিনে সর্বোচ্চ কোভিড-১৯ রোগী শনাক্তের রেকর্ড

  © বিবিসি

বিশ্বে একদিনে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত নতুন রোগী শনাক্তের রেকর্ড তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে তিন লাখ সাত হাজার ৯৩০ জন। মৃত্যু হয়েছে পাঁচ হাজার ৫০০ জনের। এ নিয়ে বিশ্বে এখন পর্যন্ত কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে মোট মৃত্যু হয়েছে ৯ লাখ ১৭ হাজার ৪১৭ জনের।

সবচেয়ে বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছে ভারত, যুক্তরাষ্ট্র এবং ব্রাজিলে। বিশ্বে এখন ২৮ লাখের বেশি নিশ্চিত রোগী শনাক্ত হয়েছে, যাদের অর্ধেকই আমেরিকা মহাদেশের বাসিন্দা। একদিনে সবচেয়ে বেশি রোগী শনাক্তে এর আগের রেকর্ড তৈরি হয়েছিল ছয়ই সেপ্টেম্বর। সেদিন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বিশ্বে তিন লাখ ছয় হাজার ৮৫৭ জন রোগী শনাক্তের তথ্য জানিয়েছিল।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, রবিবার ভারতে ৯৪ হাজার ৩৭২ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে। এরপরেই বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে ৪৫ হাজার ৫২৩ জন এবং ব্রাজিলে ৪৩ হাজার ৭১৮ জন। এক হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারতে। আর ব্রাজিল জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে সেখানে ৮৭৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের পরেই বিশ্বে সবচেয়ে বেশি রোগী রয়েছে ভারতে। গত সপ্তাহে দেশটি জানিয়েছে, আগস্ট মাসে ভারতে প্রায় বিশ লাখ নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে। মহামারি শুরু হওয়ার পর কোন একমাসে কোন দেশে রোগী শনাক্তের দিক থেকে এটাই সর্বোচ্চ।

সরকারি তথ্য অনুযায়ী, দেশটিতে প্রতিদিন গড়ে ৬৪ হাজার নতুন রোগী শনাক্ত হচ্ছে। জুলাই মাসের তুলনায় এই হার ৮৪ শতাংশ বেশি। সেপ্টেম্বরের শুরু থেকে প্রতিদিনের মৃত্যুর সংখ্যা এক হাজারের বেশি বেড়ে গেছে। ব্রাজিলে এখন পর্যন্ত ৪০ লাখের বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছে, যা বিশ্বের তৃতীয় দেশ। দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলোর মধ্যে এই দেশেই সবচেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে, এক লাখ ৩১ হাজার।

বিশ্বে করোনাভাইরাসে শনাক্ত মোট রোগীর প্রায় এক-তৃতীয়াংশ শনাক্ত হয়েছে শুধুমাত্র যুক্তরাষ্ট্রে। দেশটিতে ৬০ লাখের বেশি রোগী রয়েছে। জুলাই মাসে দেশটিতে রোগী শনাক্তের হার অনেক বাড়লেও, এরপর থেকে কমে এসেছে। তবে কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর দিক থেকে বিশ্বে সবচেয়ে বেশি রেকর্ড রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। দেশটিতে এক লাখ ৯৪ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

করোনাভাইরাসের আবার সংক্রমণ দেখা দিতে পারে, এরকম আশঙ্কার ভেতরেই ইউরোপের দেশগুলোতে নতুন রোগীর সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে। সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত এলাকাগুলোয় স্থানীয়ভাবে লকডাউন জারি করা হচ্ছে। মানুষকে মাস্ক পরা এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য আবারো আহবান জানানো হচ্ছে।

পেরু, ইসরায়েল, দক্ষিণ কোরিয়া এবং অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশগুলোতেও ভাইরাসের সংক্রমণ বেড়েছে। রবিবার অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া রাজ্যে ৭০ জনের বেশি বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ- যারা বাড়িতে থাকার আদেশ অমান্য করে বাইরে বের হয়ে এসেছিলেন। মহামারি নিয়ে ষড়যন্ত্র তত্ত্ব বিনিময় করে, এমন কিছু সামাজিক মাধ্যমের আয়োজনে মেলবোর্নে আড়াইশোর মানুষ একটি প্রতিবাদ সমাবেশে অংশ নিয়েছে।

নতুন করে করোনাভাইরাস রোগী বাড়তে থাকায় পুরো দেশে নতুন করে লকডাউন ঘোষণা করেছে ইসরায়েল। বিশ্বে সবচেয়ে বেশি আক্রান্তের তালিকায় বাংলাদেশে রয়েছে ১৫ নম্বরে। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে করোনাভাইরাস আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন মোট তিন লাখ ৩৭ হাজার ৫২০ জন। আর কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে মোট মারা গেলেন চার হাজার ৭৩৩ জন।

তবে আগের সপ্তাহের তুলনায় গত সপ্তাহে নমুনা পরীক্ষা প্রায় ছয় শতাংশ বাড়লেও, নতুন রোগী শনাক্তের হার ১৪.৭৬ শতাংশ কমেছে বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে। নতুন আক্রান্ত রোগীর তুলনায় সুস্থ রোগীর সংস্থাও বেড়েছে। খবর: বিবিসি বাংলা।


সর্বশেষ সংবাদ