ভ্যাকসিনে ট্র্যাকিং ডিভাইস বসাচ্ছেন বিল গেটস, শুনে হতবাক

করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্ক তো রয়েইছে। তার পাশাপাশি একে ঘিরে গুজবও কম ছড়ায়নি। সম্প্রতি বিল গেটসও এর শিকার হয়েছেন। গুজব রটেছে, করোনা ছড়ানোর পিছনে নাকি বিল গেটসেরই হাত রয়েছে। হাতেগোনা কয়েক জন নন, আমেরিকার ২৮ শতাংশ বাসিন্দাই একে সত্যি বলে মনে করেন। এমনটাই জানিয়েছে একটি সমীক্ষা। সেই সঙ্গে আরও গুজব রটেছে, কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের মাধ্যমে লোকজনের মধ্যে ট্র্যাকিং ডিভাইস বসানোর চেষ্টা করছেন বিল গেটস। যদিও গোটা বিষয়টিকেই অত্যন্ত অবিশ্বাস্য বলে উড়িয়ে দিয়েছেন বিল গেটস স্বয়ং।

করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক খোঁজার কাজে বরাবরই উদ্যোগী বিল গেটস। এ কাজে বিল ও তাঁর স্ত্রী মেলিন্ডা গেটস দু’জনেই সক্রিয়। ইতিমধ্যে বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন প্রতিষেধক তৈরির কাজে ৩০ কোটি ডলারের অর্থসাহায্যের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে। তা সত্ত্বেও এই অতিমারির পিছনে বিল গেটসের হাত রয়েছে বলে গুজব রটেছে কেন? দক্ষিণপন্থীদের দাবি, কোনও ভাবে এই অতিমারি উৎসে জড়িত গেটস এবং তা ছড়ানোর পিছনেও তাঁরই হাত রয়েছে। এবং করোনার ভ্যাকসিন বিক্রি করে তার থেকে ফায়দা তুলতে চান বিল গেটস।

ইয়াহু নিউজ এবং ইউগভ নামে একটি আন্তর্জাতিক মাকের্ট রিসার্চ এবং ডেটা অ্যানালিটিকস সংস্থার যৌথ সমীক্ষা রিপোর্টে দাবি, আমেরিকার ২৮ শতাংশ মানুষই এই ধারণায় বিশ্বাসী। রিপাবলিকানদের মধ্যে ৪৪ শতাংশও একে সত্যি বলে মনে করেন। অন্য দিকে, মার্কিন মুলুকের জনপ্রিয় টেলিভিশন নেটওয়ার্ক ‘ফক্স নিউজ’-এর ৫০ শতাংশ দর্শকই একে মান্যতা দিয়েছেন। যদিও এমএসএনবিসি নামে আর একটি টেলি-নেটওয়ার্কের ৬১ শতাংশ দর্শকই মনে করেন, এটি সম্পূর্ণ ভ্রান্ত ধারণা।

এ বিষয়ে বিল গেটস কী মনে করেন? গোটা বিষয়টিকেই অদ্ভুত বলে আখ্যা দিয়েছেন বিল গেটস। তাঁর কথায়, ‘‘আমি কখনই কোনও ধরনের মাইক্রোচিপ সংক্রান্ত বিষয়ের সঙ্গে জড়িত নই।’’ বিল গেটসের মন্তব্য, ‘‘এ ধরনের বিষয়গুলো বিশ্বাস করাটাও মুশকিল। ব্যাপারটা এতটাই নির্বোধ আর অদ্ভুত।’’

অতিমারি নিয়ে অবশ্য দীর্ঘ দিন ধরেই সচেতনতা প্রসারের কাজে জড়িত বিল গেটস। ২০১৫ সালে ‘টেড টকস’-এ সে বিষয়ে সতর্কবার্তাও দিয়েছিলেন তিনি। ওই অনুষ্ঠানেই বিশ্ব জুড়ে এক ভয়ানক অতিমারিতে প্রাণহানির আশঙ্কার কথা শুনিয়েছিলেন বিল গেটস। এ কাজে বিশ্বনেতাদের সক্রিয় হওয়ার কথাও বলেছিলেন তিনি। তা সত্ত্বেও তাঁকে ঘিরে ছড়িয়েছে গুজব। তবে এই গুজবের ফলে যে করোনার প্রতিষেধক খোঁজার কাজ ব্যাহত হবে না, সেটাই স্বস্তির বলে জানিয়েছেন বিল গেটস। তাঁর মতে, করোনার প্রতিষেধক তৈরি হলে প্রথমেই তা এমন দেশে পাঠানো উচিত, যেখানকার স্বাস্থ্য পরিকাঠামো অপেক্ষাকৃত ভাবে দুর্বল এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাটা প্রায় অসম্ভব। প্রতিষেধক তৈরি কাজে আগামী পাঁচ বছরের জন্য আরও অতিরিক্ত ১৬০ কোটি ডলারের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে বিল ও মেলিন্ডার ফাউন্ডেশন।


সর্বশেষ সংবাদ