কখনও না থামা মুম্বাইও থেমে গেল, লাশ নিচ্ছে না স্বজনরা!

  © সংগৃহীত

স্বপ্নের শহর দুঃস্বপ্নের শহরে পরিণত হয়েছে। বলা হয়ে থাকে, সব শহর থেমে গেলেও মুম্বাই কখনও থাকে না; কিন্তু করোনাভাইরাস সেটাকেও থামিয়ে দিল। বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের পরবর্তী হটস্পট হতে চলেছে ভারতের মুম্বাই। রাজ্যটির ৪৭ হাজারেরও বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। হাসপাতালগুলোতে জমা হতে শুরু করেছে লাশের স্তুপ। এমনকি বার বার তাগিদ দেয়া সত্ত্বেও লাশ নিতে আসছেন না স্বজনেরা।

সম্প্রতি এমনই কিছু ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দেখা গেছে, করোনা রোগীরা ভর্তি আছেন, চিকিৎসা নিচ্ছেন এমন ওয়ার্ডে বিছানার ওপর পড়ে আছে সারিবদ্ধ মৃতদেহ। এসব মৃতদেহ কোথায় রাখা হবে তা নিয়ে হাসপাতালগুলোই শুধু হিমশিম খাচ্ছে এমন নয়। একই অবস্থা দাহ করার স্থানগুলো এবং মর্গেও। এতে স্বাস্থ্যখাতের কি অবস্থা তা পরিষ্কারভাবে ফুটে উঠেছে। চিকিৎসক ও নার্সদেরও নাভিশ্বাস উঠেছে এ অবস্থায়।

এ বিষয়ে কিং এডওয়ার্ড মেমোরিয়াল হাসপাতালের নার্স মাধুরী রামদাস গৈকার বলেন, ‘গত কয়েক সপ্তাহ ধরে হাসপাতালে লাশের স্তুপ হয়েছে। কারণ অনেক পরিবার সংক্রমণের ভয়ে মরদেহ নিতে অস্বীকার করেছে। আমরা লাশের সব কাগজপত্র প্রস্তুত করে রেখেছি। কিন্তু সেগুলো কেউই নিয়ে যাচ্ছে না। ভাইরাসটির কারণে চারপাশে তীব্র ভীতিকর পরিবেশ বিরাজ করছে, যা ভারতে নতুন একটি অস্পৃশ্য শ্রেণি তৈরি করেছে।’

এদিকে মুম্বাইয়ের হাসপাতালের কর্মীরা দিনরাত ২৪ ঘণ্টা করোনা রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। করোনার প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ায় জনবলের অভাবে অন্যান্য রোগীদের চিকিৎসাসেবাও বন্ধ হয়ে গেছে। স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা একেবারে ভেঙে পড়ার অবস্থা তৈরি হয়েছে। হাসপাতালের ওয়ার্ডগুলোতে সারি সারি লাশ পড়ে আছে। শয্যা সঙ্কটে রোগীদের মেঝেতে ঘুমানোর নির্দেশ দেয়া হচ্ছে।

মুম্বইয়ের একটি হাসপাতালের আইসিইউয়ের প্রধান শ্রুতি ট্যান্ডন বলেছেন, ‘আমি যে হাসপাতালে কাজ করি, তাতে কোনো মর্চুয়ারি নেই। দু’জন মানুষ মারা গেছেন। কিন্তু পরের দিন সকাল না হওয়া পর্যন্ত সেই মৃতদেহ বেডের ওপরই পড়ে ছিল। কারণ, ওই মৃতদেহ দাহ করতে না নেয়া পর্যন্ত তা সরানো যাচ্ছিল না। সব দিক দিয়েই আমরা চাপে রয়েছি। এ এক ভয়াবহ অবস্থা।’

সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস, এবিসি


সর্বশেষ সংবাদ