করোনা প্রতিরোধী ডিভাইস তৈরির শেষ পর্যায়ে চিকিৎসককে বদলি!

  © সংগৃহীত

করোনা প্রতিরোধী ডিভাইস তৈরিতে কাজ করছিলেন বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (শেবাচিম) মেডিসিন বিভাগের রেজিস্ট্রার ডা. এইচএম মাসুম বিল্লাহ। কিন্তু সেটি তৈরির শেষ পর্যায়ে তাকে বদলি করে দেয়া হয়েছে। ফলে শেষ পর্যায়ে এসে তার করোনা প্রতিরোধী ডিভাইস তৈরির কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে।

শেবাচিম হাসপাতাল থেকে তাকে ভোলা জেলা হাসপাতালে বদলি করেছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। ১৯ মে যোগদানের আদেশ দেয়া হয় তাকে। অথচ বাংলাদেশ চিকিৎসা গবেষণা পরিষদ থেকে প্রোটকল রিসিভ করে গবেষণা চালানোর অনুমতি পান তিনি।

জানা গেছে, শেবাচিম হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ড ও মেডিসিন ওয়ার্ডে দায়িত্ব পালনের পর দিন-রাত পরিশ্রম করে ওই গবেষণা অব্যাহত রাখেন তিনি। পরে গত ১৪ মে চিকিৎসা গবেষণা পরিষদ ইথিক্যাল এপ্রোভাল’র অনুমোদন ও অর্থ পাঠানোর চিঠি পান তিনি। এতে তার কাজের গতি আরও বেড়েছে।

ডা. এইচ,এম মাসুম বিল্লাহ জানান, করোনা শুরুর পর রোস্টারের ভিত্তিতে হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে চিকিৎসা দিতে হয়েছে তাকে। এক পর্যায়ে ডিভাইসটি তৈরির জন্য গবেষণা শুরু করেন তিনি।এ ডিভাইস ব্যবহারে করোনা রোগীর নিঃশ্বাসে নির্গত ভাইরাস জীবাণুমুক্ত হয়ে যাবে।

তিনি বলেন, গবেষণাটির জন্য শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে নির্ধারিত করা হয়েছে। এখানে করোনা রোগীর সংখ্যা ও ব্যবস্থাপনা এই গবেষণার জন্য খুবই উপযোগী। ইতিমধ্যেই ডিভাইসের নকশা বাংলাদেশ চিকিৎসা গবেষণা পরিষদে পাঠিয়ে চিঠির অনুকূলে ৫০ হাজার টাকা ব্যাংকের মাধ্যমে জমা দেয়া হয়েছে।

তিনি জানান, বদলির কারণে গবেষণা বন্ধ হয়ে যেতে পারে। বদলি প্রত্যাহার চেয়ে লিখিতভাবে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিবকে আবেদন করার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান তিনি।

গত ১৭ মে সম্পূর্ণ ব্যক্তি উদ্যোগে গবেষণা পরিষদে নিয়ম মাফিক সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে ৫০ হাজার টাকা পাঠান তিনি। এর মধ্যেই ১৯ মে বদলির আদেশ না আসলে ডিভাইসটির কার্যক্রম চলতি সপ্তাহেই শুরু হয়ে যেত। কিন্তু আকস্মিক বদলির আদেশে তার গবেষণা কার্যক্রম স্থবির হয়ে গেছে।

শেবাচিম হাসপাতাল সূত্র জানায়, ডা. এইচএম মাসুম বিল্লাহকে শুরু থেকেই মেডিকেল কলেজের কিট সংকট দেখিয়ে নিরুৎসাহিত করা হয়। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় তার কাজ শেষের দিকে। কারো রোষানলের কারণে মাসুম বিল্লাহকে বদলি করা হতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন।

গবেষণা করা রেজিস্ট্রারকে বদলির বিষয়টি স্বাভাবিক নয় বলে মত তাদের। গবেষণার কথা চিন্তা করে তার বিরুদ্ধে এ ধরনের আদেশে হাসপাতালের সকলে হতবাক হয়েছেন। এ ধরনের গবেষণা সফল করতে এবং ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের জন্য হাসপাতাল ও আনুষাঙ্গিক ব্যবস্থাপনা ভোলায় নেই।

শের-ই-বাংলা মেডিকেলের পরিচালক ডা. বাকির হোসেন বলেন, ডা. মাসুম বিল্লাহ ডিভাইস তৈরির কথা জানালে তাকে সহযোগিতা করা হয়। ডিভাইসটির কার্যক্রম সমাপ্ত হলে তা জনসাধারণের জন্য সুফল বয়ে নিয়ে আসবে। ডিভাইস তৈরিতে কর্মক্ষেত্রও তৈরি হবে।


সর্বশেষ সংবাদ