অনুমোদন না পেলেও রবিবার থেকে করোনা পরীক্ষা করবে গণস্বাস্থ্য

মহামারি করোনা পরিস্থিতিতে দেশে সরকারের অনুমোদন না পেলেও নিজেদের উদ্ভাবিত ‘জিআর র‌্যাপিড ডট ব্লট’ কিট দিয়ে করোনাভাইরাসের পরীক্ষা শুরু করবে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র।

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী জানান, আগামী রবিবার (২৪ মে) থেকে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের বিজ্ঞানীদের উদ্ভাবিত করোনাভাইরাস শনাক্ত করার কিট দিয়ে গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে পরীক্ষা শুরু হবে।

আর এই করোনা পরীক্ষার জন্য ৭০০ টাকা করে নেওয়া হবে। এর মধ্যে অ্যান্টিজেনের জন্য ৪০০ আর অ্যান্টিবডির জন্য ৩০০ টাকা নেওয়া হবে।

ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, ঢাকা ও সাভার নগর হাসপাতালে রবিবার থেকে একসঙ্গে করোনাভাইরাসের পরীক্ষা শুরু হবে। দিনের মধ্যে পরীক্ষার ফল জানিয়ে দেওয়া হবে।

সরকারের অনুমোদন ছাড়াই কীভাবে আপনারা ‘জিআর র‌্যাপিড ডট ব্লট’ কিট দিয়ে করোনাভাইরাসের পরীক্ষা শুরু করতে যাচ্ছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, হাসপাতালে পরীক্ষা জন্য সরকারের অনুমতি নিতে হবে কেন। এখন অনুমোদনবিহীন কিট দিয়ে পরীক্ষা জন্য সরকার চাইলে হাসপাতালের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে। কারণ এ ক্ষেত্রে অপরাধ করলে হাসপাতাল করবে।

এদিকে অনুমোদন পাওয়ার আগে পরীক্ষা করার সুযোগ আছে কিনা– জানতে চাইলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও মন্ত্রণালয়ের কোভিড মিডিয়া সেলের প্রধান হাবিবুর রহমান বলেন, তাদের কিটের ক্লিনিক্যাল ট্র্যয়াল করছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ)। এর অংশ হিসেবে যদি নগর হাসপাতাল করে তাহলে কোনও সমস্যা নেই।

কিন্তু ক্লিনিক্যাল ট্র্যায়ালের আগে গণস্বাস্থ্য তো অন্য আর কিছু করতে পারবে না। আমি এখন আমি ঠিক জানি না যে বিএসএমএমইউ কিটের ট্র্যায়াল শেষ করেছে কিনা। এখন তারা যদি শেষ করে থাকে তাহলে এক বিষয় দাঁড়ায়, আর না শেষ হলে অন্য বিষয়। নগর হাসপাতাল এই পরীক্ষা বিএসএমএমইউ হাসপাতালের ট্র্যায়ালের অংশ হিসেবে করছে কিনা তা দেখতে হবে। তবে সেটাও নির্ভর করবে বিএসএমএমইউ ও নগর হাসপাতালে মধ্যেকার সমঝোতার মাধ্যমে। বিএসএমএমইউ ট্র্যায়াল শেষ করার আগে নগর হাসপাতালের এটি করার কথা নয়।’

তিনি আরও বলেন, যেকোনও নতুন কিট বা ওষুধকে প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। সেই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে গণস্বাস্থ্যের কিটের ক্লিনিক্যাল ট্র্যায়াল করছে বিএসএমএমইউ।’

নগর হাসপাতালে করোনাভাইরাস শনাক্তের পরীক্ষা করা হলেও সেখানে চিকিৎসা করা হবে না বলে উল্লেখ করে গণস্বাস্থ্যের প্রতিষ্ঠাতা বলেন, ‘ধানমন্ডিতে কেউ আমাদের পাঁচ হাজার স্কয়ার ফুট জায়গা দিলে চিকিৎসাও করবো আমরা।

এর আগে, নানান বিতর্কের পর গত ১৩ মে কিটের কার্যকারিতা পরীক্ষার জন্য বিএসএমএমইউতে চাহিদা অনুযায়ী ২০০ কিট জমা দেয় গণস্বাস্থ্য। একই সঙ্গে পরীক্ষা খরচ বাবদ ৪ লাখ ৩৫ হাজার টাকাও জমা দেয় তারা। কিন্তু এরপর নয় দিন পেরিয়ে গেলেও এ বিষয়ে অগ্রগতি না হওয়ার হতাশ গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র।

এ প্রসঙ্গে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর বলেন, ‘বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ দুইবারে আমাদের কাছ থেকে ৪০০ কিট নিয়েছে। আর ধানমন্ডির গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে আরও ৬০০ কিট এনে রাখতে বলেছে। কারণ কিট তো সাভারে তৈরি হয়। তারা যেকোনও সময় তা চাইবে।’

গণস্বাস্থ্যের কিটের ভবিষ্যৎ নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে তিনি আরও বলেন, সরকারের পক্ষে থেকে এখন প্রাইভেট হাসপাতালগুলোকে করোনাভাইরাসের পরীক্ষা করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তারা ছয় হাজার টাকা করে নেবে পরীক্ষার জন্য। এই কিটের ভবিষ্যৎ হচ্ছে– প্রাইভেট হাসপাতালে এই ব্যবসা শেষ হওয়ার পর হয়তো আমাদের কিটের অনুমোদন দেবে আরকি। বিএসএমএমইউ তো শুক্র-শনিবার বন্ধ থাকে। আবার সরকারি বন্ধও থাকে, সেটাও তাদের মানতে হয়।

 


সর্বশেষ সংবাদ