দেশভেদে চরিত্র ভিন্ন করোনার, বাংলাদেশ নিয়ে যা বলছেন বিশেষজ্ঞরা

  © ফাইল ফটো

চীনের উহান থেকে গত বছরের শেষ পর্যায়ে ভয়াবহ আকারে ছড়িয়ে পড়ে করোনাভাইরাস। এরপর বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেখে এ ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। শুরুতে চীনে মহামারি আকারে ছড়ালেও এখন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ।

তবে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে করোনা ছড়ানোর ধরণ এক নয়। এশিয়াসহ অনেক অঞ্চলে এ ভাইরাস ছড়ানোর ক্ষেত্রে ব্যাপক পার্থক্য দেখা যাচ্ছে। জনস হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয়, ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে।

চীনের পর দক্ষিণ কোরিয়ায় করোনা ছড়িয়ে পড়ে। এর বাইরে ইউরোপের ইতালিতে আক্রান্ত বেশি।জনস হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয় জানিয়েছে, চলতি বছরের শুরুর দিকে ইতালিতে সংক্রমণ শুরু হলে ৫৯ দিনে এক লাখের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। আর যুক্তরাষ্ট্রে ৬৭ দিনে প্রায় দেড় লাখ মানুষ আক্রান্ত হয়েছে।

এছাড়া স্পেন, ইরান, যুক্তরাজ্যসহ প্রায় সব দেশে ভাইরাসটি সংক্রমণের হার বাড়ছে। বাংলাদেশে প্রথম আক্রান্ত ব্যক্তির সূত্র ছিল ইতালি। কিন্তু দেশটিতে সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার অনেক হলেও বাংলাদেশে একই আচরণ করছে না। অথচ বাংলাদেশ ঘনবসতিপূর্ণ।

এ ব্যাপারে রাজধানীর শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য নজরুল ইসলাম বিবিসিকে বলেন, ‘বাংলাদেশের তথ্য অন্যদের সঙ্গে মেলে না কেন, সেটা নিয়ে আমরাও চিন্তা করছি। এখানে ভাইরাসটি ইতালি থেকে এসেছে। তা সেখানে হ্যাভক তৈরি করলেও আমাদের এখানে কিছুই করছে না। বিষয়টা আমিও বুঝতে পারছি না।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে প্রথম রোগী শনাক্ত হয় ৮ মার্চ, এরপর প্রথম ইনকিউবেশন পিরিয়ড ১৪ দিন। দুটি ইনকিউবেশন পিরিয়ড শেষ হবে ৫ এপ্রিল। এ সময়টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ৫ এপ্রিলের পর সম্ভবত বলতে পারব, বাংলাদেশে ধরনটা কী রকম।’

করোনা: আক্রান্তের কাছে শ্বাস নেয়া বা কথা বলার সময়ও সংক্রমণ হতে পারে

এদিকে নতুন এক গবেষণায় বলা হচ্ছে, টিবির টিকা বাধ্যতামূলক থাকা দেশগুলোয় মৃত্যুর হার কম। চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য বিজ্ঞানবিষয়ক অপ্রকাশিত গবেষণার অনলাইন আর্কাইভ মেডআর১৪–তে প্রকাশিত গবেষণায় এমন তথ্য জানানো হয়েছে। যদিও সর্বশেষ এর ক্লিনিক্যাল পরীক্ষা এখনো শেষ হয়নি।

ব্লুমবার্গের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, জাপানে করোনায় সংক্রমণের হার কম। সেজন্য গবেষকরা বিসিজির টিকার সঙ্গে করোনার প্রভাব নিয়ে গবেষণা শুরু করেন। এতে নেতৃত্ব দেন নিউইয়র্ক ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির সহকারী অধ্যাপক গঞ্জালো ওতাজু। জাপানে করোনার সংক্রমণ ঘটলেও লকডাউন করেনি। গবেষকেরা করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আর মৃত্যুর সঙ্গে বিসিজি টিকার সম্পর্ক খুঁজে পেয়েছেন।

উচ্চ আয়ের দেশগুলোয় শুধু বেশি ঝুঁকিতে থাকা লোকজনকে বিসিজির টিকা দেওয়া হয়। জার্মানি, স্পেন, ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যের মতো কিছু দেশে অনেক আগেই বিসিজির টিকার প্রয়োগ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া সর্বজনীন বিসিজির টিকার ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।

এখন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, অস্ট্রেলিয়া, নেদারল্যান্ডস ও ডেনমার্কে স্বাস্থ্যকর্মী ও বয়স্কদের বিসিজির টিকা দিয়ে পরীক্ষা করা হবে। এরমাধ্যমে দেখা হবে ওই টিকায় করোনাভাইরাস থেকে কতটা সুরক্ষা দিচ্ছে।

করোনায় পরবর্তী মৃত্যুপুরী হবে দক্ষিণ এশিয়া: ডব্লিউএইচও


সর্বশেষ সংবাদ