করোনা প্রতিরোধে সাড়া জাগাচ্ছে ‘নেপালি স্টাইল’

করোনা প্রতিরোধে নেপাল সরকারের উদ্যোগ
করোনা প্রতিরোধে নেপাল সরকারের উদ্যোগ

গোটা বিশ্বেই করোনাভাইরাসের ত্রাস অব্যাহত রয়েছে। চীনের পর সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে ইতালি। কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, ভাইরাসটিকে প্রথম থেকেই গুরুত্ব দেয়নি দেশটি। যার ফল হিসেবে ছড়িয়েছে বিভৎসভাবে। এদিকে ভাইরাসটি মোকাবিলায় যথেষ্ট প্রস্তুতি নিয়েছে ভারত। যদিও তা ইতোমধ্যেই বেশ ছড়িয়েছে। তবে এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি সাড়া ফেলেছে নেপাল সরকারের ভূমিকা। যা দক্ষিণ এশিয়ায় তো বটেই, বিশ্বের অনেক দেশই দৃষ্টান্ত হিসেবে গ্রহণ করছে।

ভয়েস অব আমেরিকার খবরে বলা হয়, লকডাউন অমান্য করায় কয়েকজন যুবককে অস্থায়ী কারাগারে রাখা হয়েছে। খবরে বলা হয়, নেপালে আটদিন ধরে লকডাউন চলছে। ছবিটি অষ্টম দিনেই দেশটির রাজধানী কাঠমাণ্ডু থেকে তোলা। 

জানা যায়, নেপালে দু’জন করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগী মেলার পরপরই লকডাউন করা হয়েছে। প্রস্তুতিও একেবারে তুঙ্গে। যা সত্যিই একটি দায়িত্বশীল দেশের করা উচিত, তেমনটাই করেছে। তাঁবুর জায়গা হিসাবে বেছে নেওয়া হয়েছে নেপাল সেনাবাহিনীর প্রধান কার্যালয়ের জায়গাকে। রাজধানী কাঠমান্ডু ত্রিপুরেশ্বরী নেপালের সেনাবাহিনী সদর দপ্তর। আর সেখানেই প্রায় ৫৩ টি তাঁবু তৈরি করা হয়েছে, যেখানে আপাতত ১০৮ জনকে রাখার ব্যবস্থা করা যাবে বলে জানিয়েছে নেপাল সরকার। জরুরী সময়কালে কীভাবে এই সমস্ত রোগীদের সামলাবেন তা নিয়ে ট্রেনিং দেওয়া হয়েছে নেপালের সেনাবাহিনীকে।

করোনা সন্দেহভাজনকে আইসোলেসনে রাখতে এভাবেই তাবু বানিয়েছে নেপাল সরকার

তারা একেবারেই প্রস্তুত সব দিক থেকে এই ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের সেবা করার জন্য। রোগ সামলানোর জন্য যে তাঁবুগুলো রাখা হয়েছে, তার সবই চীন সরকারের পাঠানো। কিন্তু এই তাঁবুগুলোকে যথাসময়ে তৈরি করে একেবারে এই ভাইরাস মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত করে নেপাল সরকার যে কোন দেশের কাছে একটা অসাধারণ উদাহরণ হয়ে থাকবে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নেপাল যা করেছে তার সত্যি এক কথায় অনবদ্য। যা দায়িত্বশীল দেশ হিসাবে প্রতিটি দেশের এমন করণীয় উচিত ছিল। বিশেষ করে ইতালি যদি একটু দায়িত্ব নিয়ে কয়েক দিন আগে থেকে ব্যবস্থা নিত, তাহলে হয়তো এতটা মহামারীর আকার ইতালিতে ধারণ করত না।

জানা যায়, নেপালে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত দুইজনই বিদেশ থেকে এসেছেন। চলতি বছরের ১৩ জানুয়ারি শ্বাসকষ্ট ও গলায় সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন চীনফেরত একজন শিক্ষার্থী। দিন দশেক পর তার শরীরে করোনার উপস্থিতি ধরা পড়ে। ১৯ বছর বয়সী ফ্রান্সফেরত এক কিশোরীর শরীরেও এই ভাইরাসের লক্ষণ দেখা যায়। মেয়েটি কাতার এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে সোমবার রাতে প্যারিসে নামে। পরে দোহা থেকে ট্রানজিট নিয়ে কিশোরীটি পরেদিন সকাল ১০টায় কাঠমান্ডু পৌঁছায়।

বাড়িতে পৌঁছানোর পর তার মধ্যে করোনার কোনো লক্ষণ দেখা যায়নি। কিন্তু কয়েকদিন যাওয়ার পর মেয়েটি অসুস্থ হলে করোনা পরীক্ষা করে। পরে পরীক্ষায় তার পজিটিভ ধরা পড়ায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এরপরই করোনা ঠেকাতে নেপালের সব সিনেমা হল, সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, স্টেডিয়াম, জাদুঘর, সুইমিংপুল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। তৈরি হয়েছে মডেল তাবু।


সর্বশেষ সংবাদ