চীনের উদ্ভাবিত ‘অ্যান্টিবডি’ নতুন আশা জাগাচ্ছে করোনা চিকিৎসায়

  © ফাইল ফটো

করোনাভাইরাস চিকিৎসায় সম্ভাব্য ওষুধ খুঁজতে গিয়ে বেশ কার্যকর অ্যান্টিবডির সন্ধান পেয়েছেন চীনা বিজ্ঞানীরা। এসব অ্যান্টিবডি করোনাভাইরাসকে (কোভিড-১৯) কোষে প্রবেশে বাধা দিতে অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। তাদের নতুন এই উদ্ভাবন করোনা প্রতিরোধে সাহায্য করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

বিশ্বে ভয়াবহ আকারে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের কার্যকর কোনো চিকিৎসা পদ্ধতি নেই। চীনে উৎপত্তির পর বিশ্বে এটি মহামারি রূপ নিয়েছে। সিনহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ঝাং লিংকি বলেন, ‘তাঁদের সন্ধান পাওয়া অ্যান্টিবডি দিয়ে তৈরি ওষুধ বর্তমান পদ্ধতির চেয়ে কার্যকরভাবে ব্যবহার করা যেতে পারে।’

চিকিৎসার ক্ষেত্রে এটিকে ‘সীমান্তরেখা’ বলছেন তিনি। এর আগেও অবশ্য এ রকম প্লাজমা বা রক্তরস পদ্ধতিতে চিকিৎসার নজির রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ইয়ান লিপকিন নতুন পদ্ধতি হিসেবে ‘ব্লাড-প্লাজমা থেরাপি’র কথা বলেন।

তিনি দাবি করেছেন, কোভিড-১৯ চিকিৎসায় ব্যবহার প্লাজমা থেরাপি ব্যবহার করা যেতে পারে। এ পদ্ধতিকেও আশার আলো মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এর আগে জানুয়ারিতে ঝাং ও তাঁর গবেষক দল শেনঝেনে থার্ড পিপল হাসপাতালে করোনা থেকে সুস্থ রোগীদের রক্তে অ্যান্টিবডি বিশ্লেষণ শুরু করেন।

তাঁরা ২০৬টি মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি পৃথক করেন, সেগুলোর ভাইরাসের প্রোটিনের সঙ্গে আবদ্ধ হওয়ার জোরালো ক্ষমতা রয়েছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এক সাক্ষাৎকারে ঝাং বলেন, ‘অ্যান্টিবডি পৃথক করার পর তাঁরা আরও পরীক্ষা চালান। তাতে অ্যান্টিবডি ভাইরাসকে কোষে প্রবেশ থেকে বিরত রাখতে পারে কি না, তা দেখা হয়।’

তিনি জানান, প্রথম ২০ বা ততোধিক অ্যান্টিবডির পরীক্ষা করে দেখা যায়, চারটি অ্যান্টিবডি ভাইরাসের প্রবেশ ঠেকিয়ে দেয়। দুটি আবার খুব ভালোভাবে কাজ করতে পারে। গবেষকেরা এর পর থেকে শক্তিশালী অ্যান্টিবডি শনাক্ত করেন। সেগুলোকে সংযুক্ত করে করোনার ঝুঁকি কমাতে চেষ্টা করছেন।

সব ঠিক থাকলে ওষুধ নির্মাতারা এটি পরীক্ষা করতে পারবেন। সেক্ষেত্রে প্রথমে পশু এবং পরে মানুষের শরীরে এটি প্রয়োগ করা হবে। বায়োটেক ফার্ম ব্রি বায়োসায়েন্সের সঙ্গে ইতিমধ্যে যৌথভাবে কাজ শুরু করেছে গবেষক দলটি।

ঝাংয়ের দাবি, অ্যান্টিবডিগুলোর গুরুত্ব কয়েক দশক ধরে প্রমাণিত হয়েছে। ক্যানসার বা সংক্রামক ব্যাধির চিকিৎসায় যার প্রয়োগ হয়েছে। অ্যান্টিবডি কোনো ভ্যাকসিন নয়, তবে রোগপ্রতিরোধের জন্য দেওয়া যেতে পারে।

জনস হপকিনস ইউনিভার্সিটির তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বে আট লাখ ৫৭ হাজার মানুষ করোনায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছে।এরমধ্যে ৪২ হাজার মানুষ মারা গেছেন।


সর্বশেষ সংবাদ