করোনা: বাংলাদেশ নিয়ে যে সুখবর দিলেন এমআইটির গবেষক দল!

  © ফাইল ফটো

ষড়ঋতুর দেশ আমাদের এই দেশ। আগামী মাসের মাঝামাঝি সময়ে শুরু হচ্ছে গ্রীষ্মকাল (বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ)। ঋতুর গণনার এ হিসেবে এরপর আষাঢ়-শ্রাবণ দুই মাস বর্ষাকাল। কিন্তু বর্ষার বৃষ্টি শুরু হয় বৈশাখ থেকে, চলে ভাদ্র–আশ্বিন মাস পযন্ত। সেই হিসাবে দেশে বর্ষাকালের আগমন ঘটেছে আগামী মাসের মাঝামাঝি সময়ে।

এশিয়ার যে দেশগুলোয় বর্ষাকালের আগমন ঘটেছে, সেখানে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের মাত্রা হ্রাস পেতে পারে বলে এক গবেষণায় উঠেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির (এমআইটি) নতুন এক গবেষণায় ধারণা করা হয়েছে, উষ্ণ এবং আর্দ্র আবহাওয়া করোনাভাইরাসের বিস্তার নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।

এমআইটির দুজন গবেষক দেখিয়েছেন, দুটি প্যারামিটারের সাথে ভাইরাসটির সম্পর্ক রয়েছে। সেগুলো হলো, তাপমাত্রা এবং আর্দ্রতা। গবেষণা অনুযায়ী, ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রে যেসব দেশের তাপমাত্রা তিন থেকে ১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রয়েছে এবং পরম আদ্রতা চার থেকে ৯ গ্রাম/মিটার তিন এর মধ্যে সেসব দেশে সংক্রমণের মাত্রা বেশি।

লেখক ইউসুফ জামিল বলেছেন, ‘তাপমাত্রা, আর্দ্রতা এবং ছড়িয়ে পড়ার মধ্যে সম্পর্ক বিকশিত হচ্ছে। তাপমাত্রা এবং করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার মধ্যে সম্পর্ক দুর্বল হচ্ছে, কারণ অনেক নতুন কেস উষ্ণ দেশগুলো থেকে এসেছে। আপেক্ষিক আর্দ্রতা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হতে পারে, গবেষণায় এটি নিশ্চিত হওয়া দরকার।

কোভিড-১৯ মূলত সার্স-কোভ-২ ভাইরাসের দ্বারা সৃষ্ট, যা সার্স-কোভ ভাইরাসের সাথে নিবিড়ভাবে সম্পর্কিত। তবে এর বেঁচে থাকার বা সংক্রমিত হওয়া উচ্চ তাপমাত্রায় হ্রাস পেতে দেখা যায়। পূর্বের দুটি গবেষণায় গবেষকরা যুক্তি দিয়েছিলেন, কোভিড-১৯ এর বিস্তার জলবায়ু দ্বারা প্রভাবিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।শীতল এবং শুষ্ক আবহাওয়া ভাইরাসটির অনুকূল আবহাওয়া বলেও উল্লেখ করা হয়।

তবে এমআইটির গবেষণায় প্রথম দেখা যায়, কেবলমাত্র তাপমাত্রা কোভিড -১৯ এর বিস্তারে বাধা দিতে পারে না, এক্ষেত্রে আর্দ্রতাও ভূমিকা রাখে। আর্দ্রতা একটি কারণ হওয়ায় তাপমাত্রা বৃদ্ধি এবং গ্রীষ্মের আগমন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের অনেক অঞ্চলকে সাহায্য করতে পারবে না। কারণ সেসব অঞ্চলে সর্বদা শুষ্ক থাকে।

এমআইটির বিশ্লেষণ অনুযায়ী, ২২ জানুয়ারী থেকে ২১ মার্চের মধ্যে প্রতি ১০ দিনের ব্যবধানে যেসব অঞ্চলের গড় তাপমাত্রা চার থেকে ১০ ডিগ্রী সেলসিয়াসের মধ্যে রয়েছে এবং আপেক্ষিক আদ্রতা তিন থেকে ৯ গ্রাম/মিটার তিন এরমধ্যে ছিল সেসব অঞ্চলে সর্বাধিক নতুন কেস পাওয়া গেছে।

গবেষণা অনুযায়ী, ‘গত সপ্তাহে ১৮ ডিগ্রী সেলসিয়াসের বেশি তাপমাত্রাযুক্ত অঞ্চলের প্রায় ১০ হাজার কেস ভাইরাসটির দ্রুত সংক্রমণের কারণে ঘটেনি। কোভিড-১৯ এর বিস্তার অনুমান করা যায়, উষ্ণমন্ডলীয় দেশগুলোয় ভাইরাস সংক্রমণ কম হওয়ার পেছনে উষ্ণ আর্দ্র আবহাওয়া দায়ী হতে পারে।

জামিল বলেন, ‘বর্ষাকালের সাথে বিস্তার কিছুটা কমতে পারে। তবে সরকারের এ জাতীয় অনুসন্ধানে নির্ভর করা উচিত হবে না। আগামী দিনগুলোয় এর বিস্তার কমবে না, এমন ধারণা নিয়ে সরকারের যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া উচিৎ।’


সর্বশেষ সংবাদ