করোনা: যুক্তরাষ্ট্রে ৮১ হাজার মানুষ মারা যেতে পারে— বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণা

  © ফাইল ফটো

করোনাভাইরাসের মহামারিতে আগামী চার মাসে যুক্তরাষ্ট্রে ৮১ হাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হতে পারে বলে সতর্ক করেছে দেশটির একটি বিশ্ববিদ্যালয়। ওয়াশিংটন স্কুল অব মেডিসিন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় দেখা গেছে আগামী জুন মাস থেকে দেশটিতে ভাইরাসটির সংক্রমণ কমে আসা শুরু হতে পারে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এই খবর জানিয়েছে।

বিশ্বের মধ্যে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা এখন সবচেয়ে বেশি যুক্তরাষ্ট্রে। দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ভাইরাসটির উৎপত্তিস্থল চীনকে ছাড়িয়ে গেছে। জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুসারে, যুক্তরাষ্ট্রে আক্রান্তের সংখ্যা ৮৩ হাজার ৮৩৬, যা চীন ও ইতালির চেয়ে বেশি। দেশটিতে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে এক হাজার ৩২১ জন ।  এমন প্রেক্ষাপটে সরকার, বিভিন্ন হাসপাতালসহ নানা সূত্র থেকে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করেছে ওয়াশিংটন স্কুল অব মেডিসিন বিশ্ববিদ্যালয়।

ওই গবেষণায় দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যা সর্বোচ্চ হতে পারে এপ্রিল মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে। জন মাসের পর থেকে ভাইরাসটির প্রকোপ কমতে শুরু করলেও জুলাই মাসের শেষ নাগাদ ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে মানুষের মৃত্যু হতে থাকবে।

গবেষক দলের নেতৃত্ব দেওয়া ড. ক্রিস্টোফার মুরে বলেছেন, দীর্ঘ সময় ধরে ভাইরাসটির প্রকোপ চললেও এই সময় ধরে সামাজিক শিষ্টাচার (সোস্যাল ডিসটান্সিং) মেনে চলার প্রয়োজন নাও পড়তে পারে। তবে সেক্ষেত্রে প্রতিটি সন্দেহভাজন আক্রান্তকে পরীক্ষা এবং নিশ্চিত হওয়া গেলে তাকে কোয়ারেন্টিন করে ফেলতে হবে।

গবেষণায় দেখা গেছে, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়তে থাকায় হাসপাতালের ওপর চাপ বাড়বে। মহামারির চূড়ান্ত পর্যায়ে হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা ও প্রয়োজনীয় ভেন্টিলেটরেরও সংকট দেখা দিতে পারে। সবেচেয়ে বেশি উপদ্রুত নিউ ইয়র্কে এখনই ভেন্টিলেটরের টান পড়ছে।

ভাইরাসটি অপেক্ষাকৃত ধীরে ছড়াচ্ছে ক্যালিফোর্নিয়ায়। এপ্রিলে সেখানে মহামারি চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছাতে পারে। সেখানে সামাজিক শিষ্টাচার মেনে চলার সময়সীমা বাড়ানো লাগতে পারে বলে জানান ড. ক্রিস্টোফার মুরে। তিনি জানান, লুইজিয়ানা ও জর্জিয়াতে সংক্রমণের গতি বাড়তে পারে। এছাড়া ওই দুটি অঞ্চলের স্বাস্থ্য বিভাগের ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়তে পারে।

ড. ক্রিস্টোফার মুরে এক বিবৃতিতে বলেন, মহামারির গতিপথ পরিবর্তিত হতে পারে আর নাটকীয়ভাবে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে- যদি মানুষ সামাজিক শিষ্টাচার মেনে চলা শিথিল করে বা তাদের ওপর আরোপিত সতর্কতা মেনে চলায় অমনোযোগী হয়।

এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) ইতোমধ্যে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, করোনাভাইরাস মহামারির পরবর্তী কেন্দ্রস্থল হয়ে উঠতে পারে যুক্তরাষ্ট্র।