করোনায় মৃত মায়ের পাশে একা শিশু, ১২ ঘণ্টা পর উদ্ধার

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন এক নারী। তার মরদেহ ১২ ঘণ্টা ধরে শিশুর পাশে পড়ে থাকার পর আজ বৃহস্পতিবার উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া রাজ্যে। স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলছেন, ৪২ বছর বয়সী ওই নারী নার্স হিসেবে কাজ করতেন। তিনি করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর মারা গেছেন। তার মরদেহ ওইভাবে ১২ থেকে ১৬ ঘণ্টা পড়েছিল।

তার সন্তানের বয়স চার থেকে পাঁচ বছর হবে। মা মারা যাওয়ার সময় সে একা পাশে ছিল। তবে শিশুটি করোনা আক্রান্ত হয়েছে কি না, তা এখনো জানা যায়নি।

চীন, ইতালির পরেই করোনায় বেশি সংখ্যক মানুষ আক্রান্ত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) সতর্ক করেছে, ইউরোপের পর করোনাভাইরাসের বিস্তারের নতুন কেন্দ্র হয়ে উঠতে পারে যুক্তরাষ্ট্র। ডব্লিউএইচও মুখপাত্র মার্গারেট হ্যারিস বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রে আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুতগতিতে বাড়তে দেখছি। এ থেকে আশঙ্কা করা যায় যুক্তরাষ্ট্র করোনা বিস্তারের নতুন কেন্দ্র হয়ে উঠতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রে ইতিমধ্যেই ৬০ হাজার ৬৫৩ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গেছেন ৮১৯ জন।

আমি কি মারা যাব— করোনা আক্রান্ত শিশুর প্রশ্ন

প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের মৃত্যুর মিছিলে নবজাতক থেকে শুরু করে বৃদ্ধ কেউই করোনার হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না। এবার যুক্তরাজ্যের ওরচেস্টারশায়ারের এক ৫ বছরের শিশুর করোনায় আক্রান্ত হওয়ার কথা তুলে ধরছেন মা লরিন ফুলব্রুক। ৫ বছরের আলফির প্রথমে হালকা জ্বর আসে, সেই সঙ্গে বমি এবং হ্যালুসিনেশন। এই অবস্থায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে করোনা পজেটিভ আসে তার।

জনগণকে সচেতন করার উদ্দেশ্যে করোনাভাইরাসের ভয়াবহতা লিখে ফেসবুকে ৫১ হাজারের বেশি বার শেয়ার করেন তার মা লরিন। মার্চের ১৬ তারিখে লরিন লেখেন আলফির ব্লাড সুগার ৩.৭ এ দাঁড়িয়েছে, হার্টবিট কমে গেছে , তার শ্বাসকষ্টে সমস্যা হচ্ছে এবং সে রীতিমত কাঁপছে। সে সময়টা তার জীবনের সবচেয়ে খারাপ অভিজ্ঞতা ছিল বলে বলছেন লরিন।

কিভাবে আলফি ধীরে ধীরে অসুস্থ হলো তা বর্ণনা করেছেন তার মা। সাঁতার শিখতে যেয়ে বেশি ক্লোরিন খেয়ে ফেলে আলফি, এরপর তার কফ আসা শুরু হয়, সেই থেকে পরবর্তীতে জ্বর।

এরপর তার স্কুল বন্ধ করে বাসায় রাখলে সে সুস্থ বোধ করে। একদিন পর আবার জ্বর আসে, খাওয়ায় অরুচি আসে সেই সঙ্গে কোথাও নড়াচড়া করতে চায় না। এরপর জরুরি নাম্বার ৯৯৯ এ ফোন দিয়ে তাকে হাসপাতালে নেয়া হয়। হাসপাতালে পরীক্ষার পর করোনা ধরা পরে তার। তারপর আইসোলেশনে রাখা হয়। আলফি তার মাকে জিজ্ঞাসা করে আমি কি মারা যাব? মা লরিন সাহস যোগান। একদিন পর আইসোলেশনে রাখার শর্ত দিয়ে তাকে হাসপাতাল থেকে বাড়িতে আনা হয়। লরিন জানান, ধীরে ধীরে সুস্থ হতে শুরু করেছে আলফি। তবুও শরীরে হালকা তাপমাত্রা আছে।

করোনাকে স্বাভাবিকভাবে না নিয়ে গুরুত্ব দিতে বলেছেন লরিন সেই সাথে প্রথম থেকেই রোগীর যত্ন নেওয়ার ব্যাপারেও সচেতন কথা বলেছেন তিনি। লরিন সবাইকে বাসায় থাকার জন্য অনুরোধ করেন। সেই সাথে বর্তমান পরিস্থিতিতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার আহ্বান জানান তিনি।


সর্বশেষ সংবাদ