করোনা সন্দেহে মায়ের লাশ দাফনে বাধা, ছেলের আকুতি— আমরা এখন কী করব?

লাশের প্রতীকী ছবি
লাশের প্রতীকী ছবি

শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত ৮০ বছরের একজন বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল ৭টার দিকে ওই নারী জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার নিলক্ষিয়া ইউনিয়নের উত্তর কুশলপুর গ্রামে তার বাড়িতে মারা যান। তিনি ঢাকাফেরত হওয়ায় এলাকাবাসীর মধ্যে করোনাভাইরাস আক্রান্ত সন্দেহে নানা শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এক পর্যায়ে তার লাশ দাফন স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্থানীয় লোকজন ও প্রশাসন। যদিও পরে আইইডিসিআরের নিদের্শ মতে মরদেহের নমুনা সংগ্রহের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন বকশীগঞ্জের ইউএনও আ স ম জামশেদ খোন্দকার।

এদিকে মায়ের লাশ দাফন করতে না দেয়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন বৃদ্ধার পরিবার। তার রিক্সাচালক ছেলে জানান, আমরা মানবিক বিপর্যয়ের মধ্যে আছি। প্রশাসন ও থানা থেকে পুলিশের লোক আসায় এখন এলাকাবাসীও কেউ আমাদের বাড়িতে আসতে চাইছেন না না। আমার মা তো করোনাভাইরাসের রোগী না। তাইলে দাফন করতে দেবে না কেন? আমরা এখন কি করব?

স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, বকশীগঞ্জের ইউএনওর নেতৃত্বে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের একটি দল আজ মঙ্গলবার বিকেলে মৃত ওই বৃদ্ধার বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ইউএনও জামশেদ খোন্দকার বলেন, ওই নারীর পরিবারের সদস্যরা শ্বসকষ্টজনিত কারণে তার মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করলেও ওই নারী সম্পর্কে আগে থেকেই কোনো তথ্য আমাদের কাছে নেই। অপরদিকে এলাকাবাসীর মাঝে করোনাভাইরাস সংক্রমণের অধিকতর ঝুঁকি এড়াতে তার দাফন স্থগিত করে ঢাকায় আইইডিসিআরে যোগাযোগ করেছি। আইইডিসিআর কর্তৃপক্ষ আমাদেরকে ওই নারীর নমুনা সংগ্রহ করে রাখতে নির্দেশনা দিয়েছেন। আমরা সবাই পিপিই পরে নমুনা সংগ্রহের প্রস্তুতি নিচ্ছি। নমুনা সংগ্রহের পরপরই যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করেই মরদেহ দাফনের অনুমতি এবং আমাদের উপস্থিতিতেই তা নিশ্চিত করা হবে।

ওই বৃদ্ধার ছেলে জানান, তার মা দীর্ঘদিন ধরে শ্বাসকষ্টজনিত রোগে ভুগছিলেন। ঢাকায় ফার্মেসি থেকে ওষুধ এনে মায়ের চিকিৎসা করেছেন। ঢাকায় কোনো হাসপাতালেও তাকে নিয়ে যাননি। তারা ঢাকায় উত্তরার আজমপুর এলাকায় রেললাইনের পূর্বপাশে ভাড়াবাসায় থাকেন। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি তার বাবার মৃত্যুর পর মা আরো বেশি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তার মায়ের ইচ্ছায় তাকে অসুস্থ অবস্থায় শনিবার রাতে ঢাকা থেকে বকশীগঞ্জে গ্রামে বাড়িতে নিয়ে আসেন। আজ মঙ্গলবার সকাল ৭টার দিকে তিনি মারা যান।