ভাগ্যিস ‘খান’দের নায়িকা হইনি কখনও: বিপাশা

বিপাশা বসু। ফ্যাশন মডেল হিসেবে নিজের কেরিয়ার শুরু করেছিলেন। সেখান থেকে সিনেমার অফার। অবশেষে ২০০১ সালে অক্ষয় কুমারের আজনাবি দিয়ে বলিউডে আত্মপ্রকাশ। বহু হিট দিয়েছেন ইন্ডাস্ট্রিতে। কিন্তু প্রায় ১৫ বছরের ফিল্মি কেরিয়ারে আজ পর্যন্ত কোনও খানের বিপরীতে দেখা গেল না কেন তাঁকে?

কলকাতার এক বাঙালি পরিবারে বড় হয়ে ওঠা মেয়েটির ছোট থেকেই শখ ছিল অভিনেতা হওয়ার। তবে বলিউডে পা রাখার ব্যাপারে তিনি ছিলেন বেশ সাবধানী। বিনোদ খন্না চেয়েছিলেন ছেলে অক্ষয় খন্নার বিপরীতে ‘হিমালয়পুত্র’ ছবিতে তাঁকে কাস্ট করতে। কিন্তু তিনি রাজি হননি।

জয়া বচ্চনও জেপি দত্তের সঙ্গে ‘আখরি মুঘল’ ছবিতে অভিষেক বচ্চনের বিরুদ্ধে কাজ করার জন্য তাঁকে অনুরোধ করেছিলেন। সে আবেদনে সাড়া দিলেও সেই ছবির পরিকল্পনা পরবর্তীকালে বাতিল হয়ে যায়। বদলে করিনা-অভিষেককে নিয়ে দত্ত বানিয়ে ফেলেন ‘রিফিউজি’। যদিও সেই ছবিতে সুনীল শেট্টির বিপরীতে একটি চরিত্রে অভিনয় করতে বলা হয়েছিল বিপাশাকে। কিন্তু তিনি রাজি হননি।

অবশেষে অক্ষয় কুমারের সঙ্গে ‘আজনবি’ ছবিতে এক নেগেটিভ চরিত্র দিয়ে বলিউডি হাতেখড়ি হয় তাঁর। বিপাশা এতটাই নজর কাড়েন সেই ছবিতে যে ফিল্মফেয়ার বেস্ট ফিমেল ডেবিউ পান তিনি। এরপর আর ফিরে তাকাতে হয়নি। ২০০২ বিপাশার জীবনে অন্যতম সফল বছর হিসেবে গণ্য করা হয়। বিপাশা অভিনীত হরর ছবি ‘রাজ’ সে যুগে ঘুম কেড়েছিল বহু মানুষের।

পেজ থ্রি-র হেডলাইন কেড়েছিলেন বিপাশা। ওই একই বছরে ‘মেরে ইয়ার কি শাদি হ্যায়’ সহ বেশ কিছু ছবিতে অভিনয় করেছিলেন বিপাশা ওই একই বছরে। ২০০৩-এ আসে পূজা ভট্টের ‘জিসম’। সেখানেও মুখ্য চরিত্রে বিপাশা, সঙ্গে জন আব্রাহাম। ওই ছবির ‘জাদু হ্যয় নশা হ্যয়’ গানটি আজও লোকের মুখে মুখে ঘুরে বেড়ায়।

এর পর একে একে ‘নো এন্ট্রি’, ‘কর্পোরেট’-সহ বহু হিট ছবি দর্শকদের উপহার দিতে শুরু করেন এই বাঙালি মেয়ে। সফল কেরিয়ারের পাশাপাশি তাঁর আর জন আব্রহামের প্রেম সে সময় ছিল আলোচনার মুখ্য বিষয়। ২০০২ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত একসঙ্গে ছিলেন তাঁরা। যদিও বিয়ে করেননি তাঁরা। লিভ-ইন সম্পর্কে ছিলেন।

সাকসেসফুল ফিল্মি কেরিয়ার হওয়া সত্ত্বেও বিপাশাকে কোনওদিনও কোনও খানের নায়িকা হতে দেখা যায়নি। যদিও নো-এন্ট্রি ছবিতে সলমন খানের সঙ্গে স্ক্রিন শেয়ার করেছিলেন তিনি, তবে তাঁর নায়িকা হিসেবে দেখা যায়নি তাঁকে।

এর কী কারণ? ইন্ডাস্ট্রির অনেকেরই বক্তব্য, এখানেও সেই ‘আউটসাইডার’ নীতি। তথাকথিত ‘স্টারকিড’ তকমা না থাকার জন্য ফল ভুগতে হয়েছিল বিপাশাকে। তবে তা নিয়ে বিপাশার কোনও আফসোস নেই, তা তিনি নিজেই জানিয়েছিলেন এক সাক্ষাৎকারে। ‘লগন’ ছবিতে আমির খানের বিপরীতে কাজ করা গ্রেসি সিংহর প্রসঙ্গ টেনে এনে বিপাশা বলেছিলেন, ভাগ্যিস তিনি কোনও ‘খান’-এর সঙ্গে কাজ করেননি।

নচেৎ তাঁর কেরিয়ারও একই সময়ে কাজ শুরু করা গ্রেসি সিংহের মতো হত। ‘খান’এর সঙ্গে তো গ্রেসিও কাজ করেছিলেন। কিন্তু আজ তিনি কোথায়? তাঁর কেরিয়ার তো শেষ হয়েছে অনেক আগেই। ‘লগন’, ‘মুন্না ভাই এমবিবি এস’ ছবির পর আর সে ভাবে হিট দিতে পারেননি গ্রেসি। বিপাশা বলেছিলেন, "কাজ তো খানেদের সঙ্গে অনেকেই করেছেন। কিন্তু তাঁরা অদৃশ্য হয়ে গিয়েছেন সময়ের সঙ্গে সঙ্গে। আমার ক্ষেত্রে কিন্তু তা হয়নি। খানেদের সঙ্গে ছবি না করেও আমি রয়ে গিয়েছি।"

যদিও বিপাশাও শেষ কাজ করেছেন ‘অ্যালোন’ ছবিতে। কর্ণ সিংহ গ্রোভারের সঙ্গে। লোকে বলে তারফিল্মি কেরিয়ারও নাকি শেষের পথে।বিপাশার ওসবে মাথা ব্যথা নেই। জনের সঙ্গে ব্রেকআপের পর তিনি বিয়ে করেন ছোট পর্দার স্টার কর্ণ সিংহ গ্রোভারকে। বর্তমানে কর্ণের সঙ্গেই সুখে সংসার করছেন বিপাশা বসু।

(সূত্র: আনন্দবাজার)


সর্বশেষ সংবাদ