করোনা: হ্যান্ড স্যানিটাইজার বানাচ্ছে সেই নাঈম

  © ফাইল ফটো

রাজধানীর বনানীতে এফআর টাওয়ারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা কারো অজানা নয়। ঘটনার দিন ফায়ার সার্ভিস যখন আগুন নেভাতে মরিয়া, তখন ফায়ার সার্ভিসের একটি পাইপের ছিদ্র অংশ দুই হাত দিয়ে চেপে ধরে আছে  একটি শিশু। না তার নাঈম।

ছিদ্র পাইপ দিয়ে পানি যেন বেরিয়ে না যায় সে জন্য তার ছোট দুই হাতে প্রাণপণ প্রচেষ্টা ছিল সেদিন। এমন ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হতে সময় নেয়নি। দেশে আবারো করোনাভাইরাসের মতো দুর্যোগ শুরু হয়েছে। এ অবস্থায়ও আবার আলোচনায় নাঈম।

জানা গেছে, করোনায় ভাইরাস থেকে মানুষকে সুরক্ষিত রাখতে হ্যান্ড স্যানিটাইজার বানাতে সহযোগিতা করছে নাঈম। দেবদুলাল মুন্না নামে একজন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এ তথ্য শেয়ার করেছেন। তার সেই স্ট্যাটাসটি দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো-

‘কড়াইল বস্তির নাঈমকে মনে আছে আপনাদের? সে এবারও দাড়িয়েছে মানুষের পাশে। সে এবার বৃত্তায়ন নামের একটি সংগঠনের উদ্যোগে হ্যান্ড স্যানিটাইজার বানাচ্ছে। ঘরে বসে নেই। তার কথা, ‘দুরে দুরে থাইকা এক মানুষ আরেক মানুষরে কেমনে বাঁচাইব’।

সে এতো কঠিন কঠিন শব্দ, হোম কোয়ারেন্টিন, আইসোলেশন, সোশ্যাল ডিসটেন্স, ভাইরাস এসব বোঝে না বলেই হয়ত এমন সরল প্রশ্ন জাগে মনে । তাকে মনে আছে?

গতবছর ২৮ মার্চ যখন বনানীর ২২ তলা ভবনে আগুন লেগেছিল, যখন আম-পাবলিক সমাবেশের মতো ভীড় করে আগুন নেভানোর কাজে পরোক্ষ বাধা দিচ্ছিল, যখন অনেকে সেলফি তোলায় ব্যস্ত ঠিক তখন এই ছেলেটি পানির পাইপ ফেটে গেলে অসহায়ের মতোন চেপে ধরে বসেছিল এবং চোখে কান্না ছিল।

এই সেই ছেলে যার নাম নাঈম যে স্কুলে পড়ে না, ভাল খাবার খায় না, কোনো নীতিবাক্য শুনে বেড়ে উঠছে না, এই সেই ই আমাদের বাংলাদেশের প্রাণ বা আগামীর বাংলাদেশ বলে আত্মসন্তুষ্টিতে ভোগার কোনো দরকার নেই। শুধু তার কাছ থেকে শিখে নিন, মানুষের পাশে দাড়াতে হয়, দাড়াতে হয়, দাড়াতে হয়, কেননা সে শুনে বড়ো হয়নি, ‘ওসব পাবলিক ফ্যাসাদে তুমি জড়াবে না, স্কুল শেষে বাসায় ফিরবে সোনা সেইফলি, লাভ ইউ’।

সে গতবার এক ইন্টারভিউতে বলেছিল, ‘আমি কিছু হতি চাই না। মাইনষের কান্দন দেখলে আমার কান্দন পায়।’


সর্বশেষ সংবাদ