এসএসসির একাধিক কেন্দ্রে ভুল প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা

সংগৃহীত
সংগৃহীত

সেকেন্ডারি স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষার একাধিক কেন্দ্রে ভুল প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা শুরু করার ঘটনা ঘটেছে। শুরুতে ২০১৮ সালের প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেয়া হলেও কিছুক্ষণ পর পরীক্ষার্থীদের ২০২০ সালের প্রশ্নপত্র দেওয়া হয়। আবার কিছু কেন্দ্রে সময় বাড়িয়ে দেওয়া হলেও অনেক কেন্দ্রে সময় বাড়ানো হয়নি। কোথাও আবার পুরনো প্রশ্নেই পরীক্ষা শেষ করতে হয়েছে পরীক্ষার্থীদের। ফলে অনেক পরীক্ষার্থীই কাঙ্ক্ষিত ভালো ফল অর্জন নিয়ে দুশ্চিন্তার কথা জানিয়েছে। এ নিয়ে অভিভাবকদের মধ্যেও ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

গতকাল সোমবার এসএসসির প্রথম দিনে বরিশালের হালিমা খাতুন বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে পুরনো সিলেবাসে নৈর্ব্যক্তিক পরীক্ষা গ্রহণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। মূলত ২০২০ সালের বদলে তাদের ২০১৮ সালের প্রশ্নপত্র দেওয়া হয়। এতে অর্ধশতাধিক পরীক্ষার্থী ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে অভিভাবকরা জানিয়েছেন।

জানা যায়, জগদীশ সারস্বত বালিকা বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থীরা হালিমা খাতুন কেন্দ্রে পরীক্ষা দেয়। পরীক্ষা শেষে অন্য শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করলে বিষয়টি নজরে আসে। জগদীশ সারস্বত বালিকা বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ মো. শাহ আলম বলেন, ‘এ অবস্থায় পরীক্ষার মূল্যায়ন হলে যেসব পরীক্ষার্থী ২০১৮ সালের প্রশ্নে পরীক্ষা দিয়েছে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’ কেন্দ্র সচিব এস এম ফখরুজ্জামান বলেন, ‘ভুলবশত পুরনো প্রশ্নপত্র দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে আরো সচেতন হওয়া উচিত ছিল।’

বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. ইউনুস বলেন, ‘পুরনো প্রশ্নপত্রে যারা পরীক্ষা দিয়েছে, সেসব পরীক্ষার্থী ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। তবে এ ঘটনার তদন্তে একটি কমিটি গঠন করা হবে।’

গোবিন্দগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে বাংলা প্রথম পত্র পরীক্ষায় ২০১৮ সালের সিলেবাসের একজন পরীক্ষার্থী থাকলেও ১৩৩ জন পরীক্ষার্থীকেই পুরনো প্রশ্ন সরবরাহ করা হয়। প্রায় ৩০ মিনিট পরীক্ষা চলার পর ভুল প্রশ্নপত্র সরবরাহের বিষয়টি নজরে আসে। এরপর নতুন করে ২০২০ সালের প্রশ্নপত্র সরবরাহ করা হয়।

এ বিষয়ে গোবিন্দগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র সচিব রুমিলা ইয়াসমিন বলেন, ‘ভুলক্রমে ২০১৮ সালের প্রশ্নপত্র সরবরাহ করা হয়েছিল। প্রায় ৩০ মিনিট পরীক্ষা চলার পর বিষয়টি নজরে এলে নতুন প্রশ্নপত্র সরবরাহ করা হয়। পরে পরীক্ষার্থীদের ৩০ মিনিট অতিরিক্ত সময় বাড়িয়ে দেওয়া হয়।’

ঠাকুরগাঁও সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ২০৩ ও ২০৪ নম্বর কক্ষে সরবরাহ করা হয় ২০১৮ সালের প্রশ্নপত্র। প্রশ্নপত্রে গরমিল মনে হওয়ায় পরীক্ষার্থীরা শিক্ষকদের জানায়। প্রায় ১৫ মিনিট পর প্রশ্ন পরিবর্তন করে দেন শিক্ষকরা। বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সালেহা খাতুন বলেন, ‘ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। ওই কক্ষের দায়িত্বরত শিক্ষকদের ভুলের কারণে এমনটি ঘটেছে।’

ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে খায়রুল্লাহ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রেও ভুল প্রশ্নে পরীক্ষা নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। কেন্দ্রের ৩০২ নম্বর কক্ষে ঘাগড়া উচ্চ বিদ্যালয় ও শাখচূড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থীদের ২০১৮ শিক্ষাবর্ষের নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নপত্র দেওয়া হয়। শিক্ষার্থীরা সেই প্রশ্নের ভিত্তিতে বৃত্ত ভরাট করতে থাকে। প্রায় ২০ মিনিট পর বিষয়টি কর্তৃপক্ষের নজরে এলে নতুন করে ২০২০ সালের প্রশ্নপত্র দেওয়া হয়। তবে অতিরিক্ত কোনো সময় না দেওয়ায় পরীক্ষা খারাপ হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগী পরীক্ষার্থীরা।

এ ব্যাপারে কেন্দ্র সচিব আব্দুল কাদির বলেন, ‘রাস্তায় প্রচণ্ড যানজট থাকার কারণে কেন্দ্রে ঢুকতে দেরি হয়। তাড়াতাড়ি প্রশ্নপত্র বিলি করার সময় একটি কক্ষে ভুল করে পুরনো প্রশ্ন চলে যায়। তবে কিছুক্ষণের মধ্যেই পাল্টে নতুন প্রশ্নপত্র দেওয়া হয়।’


সর্বশেষ সংবাদ