পিইসির পর জেএসসিতেও চমকে দিল মানিক

মানিক রহমান
মানিক রহমান

নাম মানিক রহমান। জন্ম থেকেই তার দুটি হাত নেই। বাম পা ছোট।,ডান পা অনেকটাই বাঁকা। সেই পা দিয়ে লিখেই এবার জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষা দিয়েছিল মানিক। মঙ্গলবার পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়। এতে দেখা যায় জিপিএ-৫ পেয়েছে সে।

মানিক রহমান কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার চন্দ্রখানা গ্রামের মিজানুর রহমান ময়নার ছেলে। ফুলবাড়ী জছি মিঞা মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবার জেএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে মানিক। মানিকের বিদ্যালয় থেকে ৩২ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে। তাদের মধ্যে মানিকের নাম দেখে অভিভূত হন তার বাবা-মা ও শিক্ষকরা। এর আগে পঞ্চম শ্রেণিতে বৃত্তি পেয়েছিল সে।

জছি মিঞা মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবেদ আলী খন্দকার বলেন, শারীরিক প্রতিবন্ধী হয়েও হার মানেনি মানিক। অষ্টম শ্রেণির ১৩৯ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে তার রোল নম্বর ছিল সাত। জেএসসিতেও জিপিএ-৫ পেয়ে নিজের মেধার স্বাক্ষর রাখল মানিক। আমরা তার উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করি। তবে মানিক জিপিএ-৫ পাওয়ায় অবাক হয়েছি আমরা।

ফুলবাড়ী বালিকা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কানাই চন্দ্র সেন বলেন, মানিক রহমান পা দিয়ে লিখলেও লেখাগুলো সুন্দর ও ঝকঝকে। স্বাভাবিক হাতের লেখার মতোই। তার লেখা দেখে আমরা চমকে গেছি। ফলাফল দেখেও অবাক হয়েছি। মানিকের বাবা মিজানুর রহমান ময়না বলেন, আমার ছেলে জেএসসিতে জিপিএ-৫ পাওয়ায় আমরা গর্বিত। মানিক পঞ্চম শ্রেণিতে বৃত্তি পেয়েছিল। আশা করি অষ্টম শ্রেণিতেও বৃত্তি পাবে মানিক।

মানিকের মা সহকারী অধ্যাপক মরিয়ম বেগম বলেন, জন্ম থেকেই মানিকের দুই হাত নেই। ডান পায়ের চেয়ে বাম পা ছোট। ঠোঁট ও তালু কাটা ছিল। পরে অপারেশন করে ঠোঁট ও তালু স্বাভাবিক করা হয়। কিন্তু পা ঠিক করা যায়নি। জন্ম থেকেই প্রতিবন্ধী হলেও নিজেকে স্বাভাবিক মনে করে মানিক। দুই হাত না থাকলে পা দিয়েই সব কিছু করতে পারে।

নিজের অনুভূতি জানিয়ে মানিক রহমান বলেন, আমি কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হতে চাই। আমার স্বপ্ন পূরণ করতে বাবা আমাকে একটি ল্যাপটপ কিনে দিয়েছেন। আমি সেটা দিয়েই শিখছি। স্বপ্ন পূরণে সবার দোয়া চাই।


সর্বশেষ সংবাদ