চার বিসিএস নিয়ে শিগগিরিই সুখবর পাচ্ছেন চাকরিপ্রার্থীরা

  © ফাইল ফটো

৩৯তম বিশেষ বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ এবং ৪০তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার পর এখন চার বিসিএসের পরবর্তী ধাপ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। এরমধ্যে ৪১তম ও ৩৮তম বিসিএস নিয়ে দ্রুতই খবর আসছে বলে পিএসসি সূত্রে জানা গেছে। এছাড়া ৪০তম ও ৩৭তম বিসিএস নিয়েও কাজ চলছে।

৪০তম বিসিএসের প্রিলিমিনারির তারিখ ঘোষণার পর থেকেই ৪১তম বিশেষ বিসিএস (শিক্ষা) হতে পারে বলে খবর বেরিয়েছিল। সে ধরণের প্রস্তুতির কথাও পিএসসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। তবে এটি নিয়ে নানান জটিলতা তৈরি হওয়ায় সে অবস্থান থেকে সরে আসার কথা জানিয়েছে পিএসসি।

এখন ৪১তম বিসিএসে দুই হাজার ১৩৫টি পদের বিপরীতে সাধারণ বিসিএস পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে বলে সূত্র জানিয়েছে। ৪১তম বিসিএসের জন্য পিএসসির নিকট শূন্য পদের সংখ্যা জানিয়ে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের অনুরোধ জানিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

এদিকে গত বছরের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত হয়েছে ৩৮তম বিসিএস পরীক্ষার লিখিত পরীক্ষা। এরপর প্রায় ছয় মাস পার হলেও এখনো তার ফল প্রকাশ করা হয়নি। তবে আগামী ঈদুল ফিতরের আগেই ৩৮তম বিসিএসের লিখিত ফল প্রকাশের জন্য তোড়জোড় চলছে বলে জানা গেছে। সে লক্ষ্যে জোরেসরে কাজ করছে পিএসসি। ২০১৭ সালের ২৯ ডিসেম্বর ৩৮তম বিসিএসের প্রিলিমিনারী পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এই বিসিএস থেকে জনপ্রশাসনে দুই হাজার ২৪ জন ক্যাডার নিয়োগ করার জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছিল।

এ ব্যাপারে পিএসসির চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ সাদিক জানিয়েছেন, ৩৮তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার ফল দ্রুত প্রকাশের জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে। লিখিত পরীক্ষার খাতা মূল্যায়ন চলছে। কোনো নিরীক্ষকের নম্বর ২০ এর কম বেশি হলে তৃতীয় নিরীক্ষক খাতা দেখছেন। এজন্য দুজন নিরীক্ষক এবং ক্ষেত্রবিশেষ তিনজন নিরীক্ষক পরীক্ষার খাতা মূল্যায়ন করছেন বলেও জানান তিনি।

তিনি আরও জানিয়েছেন, ৪১তম বিসিএসের চাহিদা পেয়েছে পিএসসি। তবে এখন কিছু কাজ থাকায় সেগুলো শেষ করা হচ্ছে। এরপরই ৪১তম বিসিএসের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে বলেও তিনি জানান।

এদিকে গত ৩ মে শুক্রবার ৪০তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ পরীক্ষার ফল দ্রুতই প্রকাশের জন্য কাজ শুরু করেছে পিএসসি। কমিশন সূত্র জানিয়েছে, আগামী জুন মাসে ৪০তম বিসিএসের প্রিলিমিনারী পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হতে পারে। এ জন্য জোরেসরে কাজ চলছে। এমসিকিউ টাইপের এই পরীক্ষায় তিন লাখ ২৭ হাজার ৫২৫ জন পরীক্ষার্থী অংশ নেন।

৩৭তম বিসিএস নন-ক্যাডারের দ্বিতীয় প্রথম শ্রেণির তালিকা প্রকাশের প্রস্তুতিও চলছে বলে জানিয়েছে পিএসসির নির্ভারযোগ্য সূত্র। ২০১৮ সালের ১২ জুন এই বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হয়। এতে এক হাজার ৩১৪ জনকে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়। এছাড়া তিন হাজার ৪৫৪ জনকে অপেক্ষমাণ রাখা হয়েছে। নন-ক্যাডারে আবেদনকারীদের বেশিরভাগ এবার চাকরি পেতে পারেন বলে পিএসসি সূত্রে জানা গেছে।

এদিকে ৪১তম বিশেষ বিসিএস না হওয়ার খবরে হতাশা প্রকাশ করেছেন অনেক চাকরিপ্রার্থী। তারা বলছেন, বিশেষ বিসিএস হবে ভেবেই তারা প্রস্তুতি শুরু করেছিলেন। তবে তা না হলে এটি হবে খুবই হতাশাজনক।

আশিকুর রহমান নামে একজন চাকরিপ্রার্থী দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘গত বছর থেকেই ৪১তম বিশেষ বিসিএস হবে বলে শুনে আসছিলাম। সেভাবে প্রস্তুতিও নিচ্ছিলাম। কিন্তু তা না হওয়া হতাশাজনক। এবার সাধারণ বিসিএসের জন্য হয়তোবা সেভাবে প্রস্তুতি নেওয়া হবে না।’

জানা গেছে, ৪১তম বিসিএসে মোট দুই হাজার ১৩৫ জনকে নিয়োগ দেওয়া হতে পারে। এরমধ্যে প্রশাসনে ৩২৩ জন, পররাষ্ট্র ২৫ জন, পুলিশ ১০০ জন, আনসার ২৩জন, নিরীক্ষা ও হিসাব ২৫জন, কর ৬০ জন, শুল্ক ও আবগারি ২৩জন, সমবায় আট জন, পরিসংখ্যান ১২ জন, রেলওয়ে এক জন, রেলওয়ে প্রকৌশল পাঁচ জন, সড়ক ও জনপথ ২৩ জন, তথ্য ৪৭ জন, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল ৩৬টি, বন ২০জনকে ক্যাডার হিসেবে নিয়োগ পেতে পারেন।

এছাড়া সরকারি সাধারণ কলেজের জন্য সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারে ৮৯২ জন, শিক্ষক প্রশিক্ষণ কলেজের জন্য ১৩ জন এবং কারিগরি শিক্ষায় ১০ জনকে নিয়োগ দেওয়া হতে পারে। এর বাইরে ডাক দুজন, মৎস্য ১৫ জন, পশুসম্পদ ৭৬ জন, কৃষি ১৮৯জন, বাণিজ্য চার জন, স্বাস্থ্য ১৪০জন, পরিবার পরিকল্পনা চার জন, খাদ্য আট জন এবং গণপূর্ত ৫১ জনকে ক্যাডার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হতে পারে।