দাবি বিআইএফপিসিএলের

‘বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ভারত থেকে কয়লা আনা হচ্ছে, তথ্যটি সত্য নয়’

কয়লা
কয়লা  © সংগৃহীত

বাগেরহাটের রামপালে নির্মাণাধীন তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য আনা ভারতীয় কয়লা বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহৃত হবে না বলে জানিয়েছে বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানী (প্রাঃ) লিমিটেড (বিআইএফপিসিএল)। 

শনিবার এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে বিআইএফপিসিএলের পক্ষ থেকে বলা হয়, কতিপয় সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছে যে, বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য বিআইএফপিসিএলে ভারত থেকে কয়লা আনা হচ্ছে, যা তথ্যভিত্তিক নয় এবং সত্য নয়। প্রকৃত তথ্য হলো ভারতের কলকাতা থেকে যে কয়লা আনা হচ্ছে তা কেবলমাত্র কোল স্টোকইয়ার্ড ফ্লোরে ব্যবহার করা হবে।

তবে শুক্রবার (২ জুলাই) প্রথম আলোর ‘কলকাতা বন্দর থেকে বাংলাদেশে কয়লা রপ্তানি শুরু’ শিরোনামের প্রতিবেদনে এবং শনিবার (৩ জুলাই) দ্য ডেইলি স্টার অনলাইনের বাংলা সংস্করণে ‘ভারত থেকে রামপালের পথে ৩৮০০ টন কয়লা’ শিরোনামের  প্রতিবেদনে ও দৈনিক বণিক বার্তার ‘রামপালের জন্য ভারত থেকে আসছে কয়লা’ শিরোনামের প্রতিবেদনের কোথাও ভারত থেকে আসা প্রথম চালানের কয়লা বিদ্যুৎ উৎপাদনের কাজে ব্যবহৃত হবে এমন দাবি করা হয়নি।

অন্যদিকে বাংলাদেশের বৈদেশিক দেনা বিষয়ক কর্মজোট (বিডাব্লিউজিইডি) এবং বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) পৃথক বিবৃতিতেই এমন দাবি করা হয়েছে।

বিডাব্লিউজিইডির বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা নিম্নসাক্ষরকারীগণ সংবাদপত্রের মাধ্যমে জানতে পারলাম যে, পরীক্ষামূলকভাবে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র চালানোর জন্য এই কয়লা আমদানি করা হচ্ছে। ভারতীয় প্রধান প্রধান সংবাদপত্রের খবর অনুযায়ী, পুরোদমে বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু হলে প্রতি মাসে কলকাতা থেকে ২০ হাজার টন কয়লা সরবরাহ করা হবে।’

ভারত থেকে কয়লা আমদানি বন্ধের দাবিতে ওই বিবৃতিতে সাক্ষর করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী অ্যাডভোকেট সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, নিজেরা করি’র সমন্বয়কারী খুশি কবীর, অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (এএলআরডি) নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, বাংলাদেশের বৈদেশিক দেনা বিষয়ক কর্মজোটের (বিডাব্লিউজিইডি) আহ্বায়ক ড. কাজী মারুফুল ইসলাম এবং সদস্য সচিব. হাসান মেহেদী।

এ ছাড়া এক বিবৃতিতে বাসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান বলেন, ‘রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য ভারতের ঝাড়খণ্ডের ধানবাদ থেকে কলকাতা বন্দরে ৩ হাজার ৮০০ টন কয়লা খালাস করা হয়েছে যা জাহাজে করে মংলা বন্দরে পাঠানো হবে। পরীক্ষামূলকভাবে বিদ্যুৎকেন্দ্র চালানোর জন্য এই কয়লা আমদানি করা হচ্ছে। পুরো দমে বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালু হলে প্রতি মাসে ২০ হাজার টন কয়লা লাগবে যা ভারত থেকে আনা হবে। ভারতের পত্রিকায় এ খবর প্রকাশিত হলেও বাংলাদেশ বা ভারত সরকার এর পক্ষ থেকে কয়লা আমদানির চুক্তির বিষয়ে দেশবাসীকে কিছু জানানো হয়নি।’

অন্যদিকে বিআইএফপিসিএলের উপ-মহাব্যবস্থাপক (এইচআর-পিআর) আনোয়ারুল আজিমের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘মৈত্রী বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নিমিত্ত নির্মিতব্য প্রথম কভার্ড কোল-শেডের নির্মাণ কাজ প্রায় সমাপ্ত হয়েছে এবং উল্লেখিত চালানের কয়লা প্রথম কভার্ড কোল শেডের কার্পেট কয়লা হিসেবে ব্যবহার করা হবে। এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে এধরনের চারটি কভার্ড কোল-শেড নির্মাণাধীন রয়েছে। বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য প্রাথমিক জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃতব্য উন্নতমানের কয়লা ইন্দোনেশিয়া অথবা অস্ট্রেলিয়া অথবা দক্ষিণ আফ্রিকা ইত্যাদি সম্ভাব্য দেশ থেকে আমদানির লক্ষ্যে ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতামূলক দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে এবং চলমান আন্তর্জাতিক দরপত্র জমার শেষ তারিখ সন্নিকটে। দরপত্র জমাদানের নির্দিষ্ট তারিখের পর জমাকৃত আন্তর্জাতিক দরপত্রসমূহের বিধি-মোতাবেক যথোপযুক্ত প্রযুক্তিগত এবং আর্থিক মূল্যায়নের পরিপ্রেক্ষিতে শুধুমাত্র সংক্ষিপ্ত তালিকাভুক্ত ও নির্বাচিত ঠিকাদারকে উপর্যুক্ত দেশসমূহ থেকে উন্নতমানের কয়লা ক্রয় ও সরবরাহের চুক্তি প্রদান করা হবে।’

সংবাদবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জ্বালানি হিসেবে ব্যবহারের জন্য ভারত থেকে কখনোই কয়লা আমদানি করা হবে না।’

প্রথম চালানের তিন হাজার ৮০০ টন কয়লার রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান ভারতের গোদাবরী কমোডিটিস। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দুর প্রতিবেদনে বলা হয়, রপ্তানিপ্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণকারী জেডএস লজিস্টিকসের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াটের রামপাল প্ল্যান্ট পুরোপুরি চালু হলে, আমরা আশা করি যে প্রতি মাসে এসএমপি কলকাতা থেকে প্রায় ২০ হাজার টন ভারতীয় কয়লা বাংলাদেশে পাঠানো হবে।’


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence