অনিকরা দেশ ছেড়ে চলে যায় কেন?

অনিক সরকার
অনিক সরকার

সম্প্রতি গুগলের ইউরোপীয় হেড অফিস ডাবলিনে সফটওয়্যার প্রকৌশলী হিসেবে ডাক পেয়েছেন বুয়েট গ্র্যাজুয়েট অনিক সরকার। ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম স্থান দখল করেছিলেন তিনি। গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করে এখন গুগলের ক্লাউড স্টোরেজ টিমে যোগ দিচ্ছেন অনিক।

এর আগেও বুয়েটসহ দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ চুকিয়ে অনেকেই পাড়ি জমিয়েছেন বিশ্বের বড় বড় প্ল্যাটফর্মে। তাদের হাত ধরেই এগিয়ে যাচ্ছে জায়ান্ট অনেক প্রতিষ্ঠান। দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন সারাবিশ্ব, করছেন ব্যবসা, পাচ্ছেন মুনাফা। তবে মেধাবী এ গ্র্যাজুয়েটরা কেন দেশে থাকছেন না তা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে লিখেছেন বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং অধ্যাপক ড. আব্দুল জব্বার খাঁন।

বুয়েট অধ্যাপক বলেন, ‘অনিক সরকারদের দেশ ছেড়ে বিদেশ পাড়ি দেয়ায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া আমার। ওর মত মেধাবীদের গুগল কেন পৃথিবীর সব কোম্পানিরই দরকার আছে। অনিককে অভিনন্দন জানিয়েই বলছি সে বিদেশে যাওয়াতে বাংলাদেশের ব্র্যান্ডিং হচ্ছে, বুয়েটের ব্র্যান্ডিং হচ্ছে, তার ব্যক্তিগত ক্যারিয়ারও সুরক্ষিত হয়েছে। ওদের মত মেধাবীদের এটাই হওয়া উচিত, মূল্যায়ন হওয়া উচিত। গুগল, ইনটেল ঘুরে তাই পাবে সে জীবনে।’

‘কষ্টটা হলো গুগল সম্পূর্ণ মুফতে আমাদের দেশের কৃষকের ঘামঝরা পয়সায় আন্তর্জাতিক মানের প্রকৌশল বিদ্যায় বিদ্বান একজনের সার্ভিস পেতে যাচ্ছে। এর পেছনে সে দেশের মানুষের একটা সিংগেল পেন্সও খরচ হয়নি।’

দেশসেরা মেধাবীরা কেন বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছেন- এ নিয়ে তিনি বলেন, ‘অনিকরা যায় কেন? অনিকদের সামনে আমরা সেই প্রতিশ্রুত সোপান তৈরি করতে পারিনি। অনিকদের কাছে ক্রমশই স্পষ্ট হয়ে উঠছে দেশে বসে চাকরি করতে গেলে বা নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালাতে গেলে তাকে পদে পদে বিপদে পড়তে হবে, ঘুষ দিতে হবে, ঘুষ খেতে হবে, পানিতে ডুব দিতে হবে, লাথি খেতে হবে, মাঝেমাঝে উর্ধশ্বাসে ভোঁ দৌঁড়ে পালাতে হবে। সেটাও হয়তো সবসময় সম্ভব হবে না। প্রকৌশলী দেলোয়ারওতো চাকরি ছেড়ে ব্যবসা করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলো। পারলো না তো!’

‘আমি এখন আর অনিকদের দোষ দিই না। তাদেরকে বারণও করি না। যাও, নিজের ভাগ্য নিজেই গড়ে নাও আর সম্ভব হলে আমাদেরকে ক্ষমা করো!’


সর্বশেষ সংবাদ