উপাচার্যের তত্ত্বাবধানে ৬ বিভাগের অনলাইন ক্লাস নিচ্ছে বশেফমুবিপ্রবি

  © ফাইল ফটো

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে দেশের শিক্ষা কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। আশঙ্কা দেখা দিয়েছে সেশনজটের। এ অবস্থায় অনলাইন ক্লাসের মাধ্যমে এগিয়ে যাচ্ছে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বশেফমুবিপ্রবি)। দেশে অনলাইন শিক্ষার বিশাল দ্বার উন্মোচন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়টি।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৈয়দ সামসুদ্দিন আহমেদের নির্দেশে ও সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধানে বিশ্ববিদ্যালয়টি অনলাইনে সিএসই, ইইই, গণিত, ম্যানেজমেন্ট, সমাজকর্ম ও ফিশারিজ এই ছয়টি বিভাগেই শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। ফেসবুক গ্রুপ থেকে শুরু করে গুগল ক্লাসরুম, জুম, ফেসবুক মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ, হ্যাং–আউট নানা কিছুর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন শিক্ষকেরা। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অভিজ্ঞতা কেমন বা কিভাবে চালাচ্ছে শিক্ষাকার্যক্রম, তা জানতে মুঠোফোনে ও মেসেঞ্জারের মাধ্যমে কথা হয় বেশ কয়েকজনের সঙ্গে।

অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ‘জুম’ অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে ফিশারিজ বিভাগের ২য় বর্ষের ‘কোস্টাল অ্যাকুয়াকালচার এন্ড মেরিকালচার’ কোর্সটির উদ্বোধন করেন বিভাগটির সিনিয়র শিক্ষক ড. আব্দুস ছাত্তার। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অনলাইনে পাঠদান আমাদের দেশের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন এক অভিজ্ঞতা। আর শিক্ষার্থীরা আগ্রহের সহিত অনলাইন ক্লাসে অংশগ্রহণ করছে। আমার প্রথম ক্লাসেই উপস্থিতির হার ছিলো ৭৭%, যা আশাব্যঞ্জক। আমি আশা করছি আগামীতে এই উপস্থিতি আরও বৃদ্ধি পাবে।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রায় ৭০ ভাগ ক্লাস ছুটির আগেই শেষ। বাকি ৩০ ভাগ ক্লাস অনলাইনে সম্পন্ন হবে।’

শিক্ষার্থীদের আগে থেকেই ই-মেইলে অথবা হোয়াটস অ্যাপে লেকচার শীট প্রদান করে ‘জুম’ অ্যাপলিকেশনে ক্লাস করার কথা জানালেন ফিশারিজ বিভাগের আরেক সিনিয়র শিক্ষক ও পিএইচডি গবেষক মো. সাদিকুর রহমান (ইমন)।

জুম এপ্লিকেশনে দুটি বর্ষের ক্লাস নিচ্ছেন ফিশারিজ বিভাগের আরেক শিক্ষক ফখরুল ইসলাম চৌধুরী (সুমন)। তিনি জানান, ‘অনলাইনে ক্লাস করার পাশাপাশি আবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম বা গ্রুপেও শিক্ষার্থীদের সংযুক্ত করে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে নিচ্ছি।’

জুম এপ্লিকেশনে ‘ফিশারিজ মাইক্রোবায়োলজি’ কোর্সটির ক্লাস নিচ্ছেন ফিশারিজ বিভাগের শিক্ষক সৈয়দ আরিফুল হক (ইমন)। তিনি জানাা, ‘বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের কারণে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রেখেছে। এক্ষেত্রে আমাদের শিক্ষার্থীরা যেন তাদের শিক্ষা কার্যক্রম নির্বিঘ্নে সম্পাদন করতে পারে, সেজন্যই অনলাইনে ক্লাস পরিচালনা করা হচ্ছে।’

এদিকে ‘জুম’ অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে ৩য় বর্ষের ‘ফিশ প্রসেসিং’ কোর্সটির ক্লাস নিচ্ছেন বিভাগটির শিক্ষক সুমিত কুমার পাল।যেহেতু অনলাইন ভিত্তিক এই শিক্ষা কার্যক্রম কিছুটা ব্যয়বহুল। তাই শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে এ বিষয়টি বিবেচনায় আনা উচিৎ বলে মনে করেন তিনি।

‘জুম’ অ্যাপলিকেশনে সিএসই বিভাগের দুটি ও ইইই বিভাগের একটি কোর্সের ক্লাস নিচ্ছেন সিএসই বিভাগের প্রভাষক মো. হুমায়ন কবির। তিনি জানান, ৫০-৬৫% শিক্ষার্থীরা নিয়মিত ক্লাস করছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন গ্রুপে শিক্ষার্থীদের কোর্স ম্যাটেরিয়াল দিয়ে দেওয়া হয়েছে।’

অনলাইনে ক্লাসের অভিজ্ঞতা জানতে চাওয়া হয়েছিল ফিশারিজ বিভাগে তৃতীয় বর্ষের মহিদুর রহমান জিমির কাছে। তিনি বলেন, অনেকদিন আমাদের ক্লাস বন্ধ ছিল। আজকে ক্লাস করলাম। প্রথম দিকে এই অ্যাপ এ মানিয়ে নিতে সমস্যা হলেও এখন সেটা ঠিক হয়ে গেছে। আমরা সবাই ক্লাস ভাল মত বুঝতে পারছি, স্যারেরা অনেক কষ্ট করে আমাদের লেকচার দিচ্ছেন।

ইন্টারনেটের ধীরগতি কিংবা উচ্চমূল্যের কারণে ক্লাসের সঙ্গে তাল মেলাতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে, এমন অভিজ্ঞতার কথাও বললেন কেউ কেউ।

ফিশারিজ বিভাগের ৩য় বর্ষের আরেক শিক্ষার্থী হোসনেআরা জান্নাত হাসি বলেন, অনেকদিন পর ক্লাস করছি। প্রথমে ভেবেছিলাম কিছুই বুঝবো না। কিন্তু সবকিছুই ভালো বুঝতেছি। সাধারণ ক্লাসের মতই লাগছে। শ্রেনি প্রতিনিধি (সিআর) হিসেবে আমি আর জিমি সব আপডেট তথ্য সহপাঠীদের জানিয়ে দিচ্ছি। আশা করছি অনলাইন ক্লাস বাকিদেরও ভালো লাগছে। তবে যাদের বাড়ি গ্রামে তাদের একটু নেটওয়ার্ক প্রবলেম হচ্ছে। সব মিলিয়ে অনলাইন ক্লাস ভালোই লাগছে। ’

অনলাইন পাঠদান বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৈয়দ সামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকার কারণে শিক্ষার্থীদের অপূরণীয় ক্ষতি হচ্ছে। আর তা পূরণ করার লক্ষ্যে শিক্ষকদের অনলাইনে শিক্ষাকার্যক্রম পরিচালনায় উৎসাহিত করা হয়েছে। আর এটি সম্ভব হয়েছে শিক্ষকদের আন্তরিকতা আর শিক্ষার্থীদের আগ্রহের ফলে।’

তিনি বলেন, ‘নতুন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছয়টি বিভাগেই অনলাইনে পাঠদান চলছে। এটা আমাদের বড় অর্জন। ছুটির পর যাতে শুধু সেমিস্টার পরীক্ষায় শিক্ষার্থীরা অংশ নিতে পারবে সেজন্য এ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। ফলে করোনার ছুটির প্রভাব তাদের শিক্ষাজীবনে পড়বে না।’


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence