সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষায় যাচ্ছে না বুয়েট

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ভর্তি পরীক্ষা আগের নিয়মেই অনুষ্ঠিত হবে। সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষায় না যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে বুয়েটের একাডেমিক কাউন্সিলে। বুধবার বুয়েটের একাডেমিক কাউন্সিল সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। ইউজিসির সভায় যোগ দেয়ার আগে একাডেমিক কাউন্সিল এ সিদ্ধান্ত নেয়।

বুয়েটের শিক্ষা পরিষদের সদস্য ও ছাত্র কল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক মিজানুর রহমান আজ গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, বুয়েট দীর্ঘদিন ধরেই যে পদ্ধতিতে পরীক্ষা নিয়ে আসছে, সেভাবেই পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে।

ইউজিসির কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষায় যাওয়া না যাওয়ার বিষয়ে সরাসরি কিছু না বলে মিজানুর রহমান জানান, আগে যেভাবে হয়েছে, এবারেও সেভাবেই ভর্তি পরীক্ষা নেবেন তাঁরা। বুয়েট প্রথমে শিক্ষার্থীদের কাছে আবেদন আহ্বান করে। এরপর সেগুলো প্রাথমিক বাছাই করে নির্ধারিতসংখ্যক পরীক্ষার্থী নিয়ে ভর্তি পরীক্ষা নেয়। এর ভিত্তিতে শিক্ষার্থী ভর্তি করে।

ইতোমধ্যে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয়ভাবে (সমন্বিত) ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিবে কিনা জানাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়-বুয়েটসহ বড় কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়কে ডেকেছে ইউজিসি। আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি ইউজিসিতে (বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন) বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সব উপাচার্যদের নিয়ে একটি সভা ডাকা হয়েছে। সভায় এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে বলে ইউজিসি সূত্রে জানা গেছে।

বুয়েট আগে থেকে বলে আসছে, একই ধরনের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে একেকটি গুচ্ছ করে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হবে। কিন্তু শেষ মুহূর্তে ইউজিসি কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষার কথা বলছে। তখন একাডেমিক কাউন্সিলের সঙ্গে আলোচনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানানো হবে বলে জানিয়েছিল তারা। আজকে সেই একাডেমিক কাউন্সিলে সিদ্ধান্ত হলো সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষায় যাবে না বুয়েট। এ সিদ্ধান্ত ইউজিসির সভায় জানানো হবে।

আবার বিষয়টি নিয়ে বুয়েট শিক্ষকদের মধ্যেও মতবিরোধ রয়েছে। কেউ কেউ বলছেন, গুচ্ছভিত্তিক পরীক্ষার উদ্যোগই ভালো ছিল। আবার কেউ কেউ বলছেন কেন্দ্রীয় পরীক্ষাই ভালো হবে।

এদিকে কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষার বিষয়ে প্রাথমিক খসড়া তৈরি করা হয়েছে। খসড়ার প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার ফল প্রকাশের পরপরই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষার আয়োজন করা হবে। এই পরীক্ষার মাধ্যমে ভর্তি ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের একটি নম্বর (স্কোর) দেওয়া হবে। তারপর বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিজেদের শর্তানুযায়ী আলাদা বিজ্ঞপ্তি দিয়ে আবেদন আহ্বান করবে। এর ভিত্তিতে নতুন করে আর পরীক্ষা না নিয়ে কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরকে বিবেচনা করে শিক্ষার্থী ভর্তি করবে।

ইউজিসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক কাজী শহীদুল্লাহ বলেন, নতুন এই পদ্ধতিতে কেউ আপত্তি করছে না। অনেকেই এখন ইতিবাচক। তাদের বক্তব্য হলো তাদের কিছু প্রক্রিয়াগত বিষয় আছে। তবে যে কয়টা বিশ্ববিদ্যালয় রাজি হবে, তাদের নিয়েই এগোবেন।

বর্তমানে দেশে ৪৬টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম চলছে। তবে ৩৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়। এগুলোতে স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষে প্রায় ৬০ হাজার আসন রয়েছে। পরীক্ষা দেয় কয়েক লাখ শিক্ষার্থী।


সর্বশেষ সংবাদ