বিচার চেয়ে মানববন্ধন

হাবিপ্রবির অধ্যাপিকাকে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য কর্মচারীর

  © টিডিসি ফটো

দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) পোস্ট গ্র্যাজুয়েট স্টাডিজ অনুষদের ডীন ও অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপিকা ড. ফাহিমা খানমকে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।  

বুধবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এই কর্মসূচি পালিত হয়। মানববন্ধনে অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন। গত সোমবার ক্যাম্পাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলম ওই অধ্যাপিকাকে উদ্দেশ্যে করে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে তিনি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সম্মানিত সিনিয়র শিক্ষককে সামান্য একজন গাড়িচালক কিভাবে অশ্লীল ও কুরুচিপূর্ণ ভাষায় গালিগালাজ করা সাহস পায় । একজন অধীনস্থ কর্মচারী হয়ে কিভাবে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করে? কিভাবে এতো বড় দুঃসাহস হয়। এর পিছনে কারা মদদ দাতা রয়েছে তাদেরকে আমরা দেখতে চাই।

তারা বলেন, ওই কর্মচারী শুধু একজন শিক্ষককেই অপমান করেনি, সে পুরো নারী সমাজকে অপমানিত করেছেন। যেখানে বর্তমান সরকার কর্মক্ষেত্রে নারীদের সর্বোচ্চ মর্যাদা ও নিরাপত্তা নিশ্চিতের উপর জোর দিয়ে যাচ্ছেন সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সিনিয়র নারী শিক্ষককে এভাবে লাঞ্ছিত করা আমরা কোনভাবেই মেনে নিতে পারবো না ।

বক্তারা বলেন, এ ধরনের ন্যাক্কারজনক কাজ করার পরেও ওই কর্মচারী  কিভাবে ক্যাম্পাসে অবস্থান করছে তা জেনে আমরা অবাক হয়েছি। আজকের পর থেকে আমরা এই কর্মচারীকে ক্যাম্পাসে দেখতে চাই না। এ রকম কুলাঙ্গার কর্মচারীর ক্যাম্পাসে ঠাঁই হবে না। অসুস্থ মানুষিকতার এসব মানুষ বিশ্ববিদ্যালয়, দেশ ও সমাজের শত্রু।

মানববন্ধনে জানানো হয়, ওই গাড়িচালকের এ ধরণের ধৃষ্টতা এটাই নতুন নয়। এর পূর্বেও সে শিক্ষকদেরকে বিভিন্ন সময়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে লাঞ্চিত করেছে। যার হাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষকেরাই নিরাপদ নয় সেখানে আমরা সাধারণ শিক্ষার্থী কিভাবে নিরাপদে থাকি। তাকে যদি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অতিদ্রুত বহিস্কার না করে তাহলে আগামীতে আরো কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে বলে হুশিয়ারি দেন শিক্ষার্থীরা।

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপিকা রোজিনা ইয়াসমিন লাকী, অধ্যাপক মোহাম্মদ রাজিব হাসান, অর্থনীতি বিভাগের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী মো. রুবেল হক, সুরাইয়া জেবিন সেজুতি, বুলবুল আহমেদ প্রমুখ।

এ বিষয়ে অধ্যাপিকা ড. ফাহিমা খানম বলেন, আমি লিখিতভাবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দিয়েছি। এখন আইনানুযায়ী যে ব্যবস্থা নেয়া দরকার প্রশাসন সেটি গ্রহণ করবে।  

অভিযোগ অস্বীকার করে গাড়ি চালক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমি কাউকে গালিগালাজ করেনি। আমাকে মিথ্যা দোষারোপ করে হেনস্থা করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. মো. ফজলুল হক বলেন, স্বাধীনতার এতো বছর পর কর্মচারীর দ্বারা বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন নারী শিক্ষক এভাবে অপমানিত হবেন তা কল্পনা করতেও খারাপ লাগছে। অপরাধী যেই হোক না কেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী অন্যায়কারী তার অন্যায়ের সাজা পাবে ।


সর্বশেষ সংবাদ