১১ দফা দাবিতে হাজী দানেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের আন্দোলন

  © সংগৃহীত

দিনাজপুরের হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ১১ দফা দাবিতে শিক্ষার্থীদের হঠাৎ আন্দোলনে অচলাবস্থা বিরাজ করছে। রোববার থেকে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা।

নিয়োগে অনিয়ম, যৌন হয়রানি বন্ধসহ ১১ দফা দাবিতে সোমবার প্রশাসনিক ভবন ও লাইব্রেরিতে তালা ঝুলিয়ে দিলে প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।

লাইব্রেরিয়ান পদে বিএনপিপন্থি শিক্ষক অধ্যাপক রেজাউল করিমকে পদায়ন, যৌন হয়রানির বিচার না হওয়া এবং অনিয়মসহ বিভিন্ন অভিযোগের সুরাহাসহ ১১ দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন ছাত্রলীগ নেতারা। পরে তাদের সঙ্গে সাধারণ শিক্ষার্থীরা যোগ দেন। আন্দোলনে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে শিক্ষাসহ প্রশাসনিক কার্যক্রম। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনিক ভবনের সামনে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা জানান, দীর্ঘদিন ধরেই বিশ্ববিদ্যালয়ে নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। তা ছাড়া স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে শিক্ষকদের মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে বারবার শিক্ষক আন্দোলন ও ছাত্র আন্দোলনের ঘটনা ঘটছে।

নেতাকর্মীরা জানান, এক ছাত্রীকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ উঠলেও অভিযুক্ত শিক্ষকের বিচার হচ্ছে না। আবার জামায়াত-বিএনপির শিক্ষকদের বিভিন্নভাবে পদোন্নতি দেয়া হচ্ছে।

আন্দোলনে ছাত্রলীগ শিক্ষার্থীদের উস্কে দিচ্ছে বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে। তারা নানা দাবির কথা বললেও মূলত এসবের আড়ালে রয়েছে নিয়োগের দাবি। এক দিন আগে ৭০ কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগের যে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে, তার পদসংখ্যা আরও বাড়ানোর দাবি রয়েছে তাদের।

এ বিষয়টি স্বীকার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ফজলুল হক বলেছেন, যেসব পদের অনুমতি রয়েছে, সেসব পদের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়েছে।

এদিকে একটি সূত্র জানিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পদে ১০ কর্মকর্তা ও ৬০ কর্মচারী নিয়োগের বিষয়ে রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ওয়েবসাইটে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়। এর পরেই আন্দোলনে নামেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। সেদিন বিকেলেই তারা ওরিয়েন্টেশনের মঞ্চ ভাঙচুর করেন।

সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কয়েক দফা বৈঠকে বসলেও কোনো সমাধান হয়নি। গতকাল সকালে শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনে তালা দিয়ে রেজিস্ট্রার, প্রক্টর, ছাত্র উপদেষ্টাসহ বিভিন্ন পদে দায়িত্বশীল শিক্ষকদের অবরুদ্ধ করে রাখেন। লাইব্রেরিতেও তালা লাগিয়ে দেন তারা। এমন পরিস্থিতিতে গতকাল অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া নতুন ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়। ওরিয়েন্টেশন হবে বলে ওয়েবসাইটের মাধ্যমে জানিয়ে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

এসব ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ফজলুল হক জানান, একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়েছে ওয়েবসাইটে। ওয়েবসাইট থেকে ছাত্ররা নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি পেয়ে তাদের মধ্যে অনেকেই চাকরির প্রত্যাশা করে। যেসব পদ দেয়া হয়েছে, সেসব খুব কম। এটিও একটি কারণ এ আন্দোলনের। এ ছাড়া বিভিন্ন সময়ের সমস্যাগুলো দাবি আকারে তুলে ধরেছে ছাত্ররা। তবে সব দাবি বাস্তবায়ন করা কঠিন। আর যেসব সমস্যা আছে, নিয়ম মেনেই সেসবের সমাধান করার প্রক্রিয়া চলছে।


সর্বশেষ সংবাদ