একযুগ পর শাবিপ্রবির তৃতীয় সমাবর্তন, চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি

  © ফাইল ফটো

দীর্ঘ এক যুগ পর আগামী ৮ জানুয়ারি দেশের প্রথম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) তৃতীয় সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হবে। সমাবর্তনে সভাপতিত্ব করবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য ও রাষ্ট্রপতি এডভোকেট আব্দুল হামিদ। সমাবর্তন বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। সমাবর্তনের জন্য এরই মধ্যে রেজিস্ট্রেশন করেছেন ৬ হাজার ৭৫০ শিক্ষার্থী। এদিকে, এ সমাবর্তনকে ঘিরে শাবিপ্রবিতে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি। 

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৯১ সালে একাডেমিক কার্যক্রম শুরুর পর দীর্ঘ ২৮ বছরে এ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের মাত্র দু’টি সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১৯৯৮ সালের ২৯ এপ্রিল বিশবিদ্যালয়ের প্রথম সমাবর্তন এবং এর ৯ বছর পর ২০০৭ সালের ৬ ডিসেম্বর দ্বিতীয় সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়।

তৃতীয় সমাবর্তনকে সামনে রেখে ব্যস্ত সময় অতিবাহিত করছে সমাবর্তনের সাথে জড়িত দপ্তরগুলো। রাস্তা মেরামতের পাশাপাশি ফাঁকা জায়গায় ফুলের গাছ লাগানো, বিল্ডিংয়ে নতুন রং করাসহ গোল চত্বরে চলছে সৌন্দর্য্য বর্ধনের কাজ। কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে মঞ্চ ও প্যান্ডেল তৈরির কাজও চলছে। সমাবর্তনের জন্য গ্র্যাজুয়েটদের সনদ তৈরিতেও ব্যস্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তর। সমাবর্তন আয়োজনের জন্য ১৭টি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র। প্রতিটি কমিটি সমাবর্তনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে দিনভর কাজ করে যাচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, সমাবর্তনে রেজিস্ট্রেশন করা শিক্ষার্থীদের মধ্যে স্নাতক ৪ হাজার ৬১৭ জন, স্নাতকোত্তর ১ হাজার ১২৭ জন, পিএইচডি ২ জন, এমবিবিএস ৮৭৮ জন, এমএস ও এমডি ডিগ্রিধারী ৬ জন এবং নার্সিংয়ের ১২০ জন শিক্ষার্থী । ২০০১-০২ শিক্ষাবর্ষ থেকে ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষে স্নাতকে সর্বোচ্চ রেজাল্টের জন্য ১০ জন শিক্ষার্থী, স্নাতকোত্তরে ৫ সেরা শিক্ষার্থীকে রাষ্ট্রপতি স্বর্ণপদক দেওয়া হবে। এছাড়াও ২য় সমাবর্তনে বাকি থাকা ৫ স্বর্ণপদকও এই সমাবর্তনে প্রদান করা হবে। সবমিলিয়ে মোট ২০টি রাষ্ট্রপতি স্বর্ণপদক প্রদান করা হবে। অন্যদিকে, ফ্যাকাল্টি প্রথম হওয়া মোট ৮৯ জন শিক্ষার্থীকে উপাচার্য অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হবে বলে জানা গেছে।

সমাবর্তনের সার্বিক বিষয়ে শাবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদউদ্দিন আহমেদ বলেন, সমাবর্তনের সার্বিক প্রস্তুতি সুন্দরভাবে এগোচ্ছে। আমরা কোনো কাজে পিছিয়ে নেই। সমাবর্তনের অনুষ্ঠানে ব্যবস্থাপনায় কোনো কিছুতে ঘাটতি থাকবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের ছেলে-মেয়েদের সুন্দর একটি সমাবর্তন উপহার দিতে পারবো বলে আমি আশাবাদী।

শাবিপ্রবির বাংলা বিভাগের ২০০৯-২০১০ শিক্ষাবর্ষের মুহা. জাকির হোসাইন অনুভুতি ব্যক্ত করে বলেন, প্রত্যেক্ষ শিক্ষার্থীর কাঙ্খিত চাওয়া থাকে বিশ্ববিদ্যালয় জীবন শেষ করেই সমাবর্তন পাওয়া। এই সমাবর্তনে আমাদের সিনিয়ররা যতোটা অপেক্ষা করেছেন ততোটা আমাদের করতে হয়নি বলে নিজেদের ভাগ্যবানদের কাতারে ফেলব। বড় আনন্দের বিষয় এই যে আমরা দুই ভাই একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাবর্তন পাচ্ছি। সমাবর্তন যেন প্রতি বছরই দেয়া হয় তার জন্য কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

সমাবর্তনে নিরপাত্তা ব্যবস্থায় কোনো রকম ঘাটতি থাকবে না উল্লেখ করে শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা উপকমিটির আহ্বায়ক এবং শাবিপ্রবি প্রক্টর অধ্যাপক জহীর উদ্দীন আহমদ বলেন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সাথে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ নিয়ে আলোচনা হয়েছে।


সর্বশেষ সংবাদ