বুয়েটে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন

আবরার ফাহাদ হত্যার বিচার দাবিতে আন্দোলনরত বুয়েটের শিক্ষার্থীরা মাঠ পর্যায়ের আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছেন। তবে তারা সুষ্ঠুভাবে আবরার হত্যার বিচার কার্য সম্পন্ন হচ্ছে কি না সেটার প্রতি সতর্ক দৃষ্টি রাখবে। বিচার না হওয়া পর্যন্ত ক্লাস পরীক্ষা সহ সকল ধরণের একাডেমিক কার্যক্রম বর্জনের ঘোষণাও দিয়েছেন তারা।

আজ মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) পৌনে ৬টায় বুয়েটের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা এসব কথা বলেন।

তারা বলেন, সোমবার আমাদের বুয়েট ক্যাম্পাসে পূর্ণাঙ্গ নিরাপত্তায় সুষ্ঠু সুন্দরভাবে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আমাদের ১০দফা দাবি ছিল। এর মধ্যে ১, ৪ এবং ৫ নম্বর দাবি ছিল আইন প্রয়োগকারী সংস্থার ওপরে। ইতোমেধ্য অনেকেই গ্রেফতার হয়েছে, ১৬১ এবং ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দিয়েছে অনেকে; অনেকের রিমান্ড মঞ্জুর হয়েছে।এজন্য তারা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার এবং এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ প্রদান করেন।

এসময় তারা বিশেষভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ প্রদান করেন। তারা বলেন, তিনি (প্রধানমন্ত্রী) তৎপর ছিলেন বলেই এত দ্রুত অগ্রগতি সাধিত হয়েছে বলে আমরা বিশ্বাস করি। এসকল কারণে আমরা বিশ্বাস করি আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এবং বিচার ব্যবস্থা তাদের স্বাভাবিকগতিতে এগিয়ে যাবে এবং সুষ্ঠুভাবে বিচারকার্য সম্পন্ন করার মাধ্যমে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।

এছাড়া আগামীকাল শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা এক শপথ অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে বলেও জানানো হয়।

এর আগে মেধাবী শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যার বিচারসহ বিভিন্ন দাবিতে ক্যাম্পাসে আবার জড়ো হয়েছেন বুয়েটের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টা থেকে ক্যাম্পাসে আসতে শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। ক্যাম্পাসের ভেতরে বৈঠক করেছেন। পরে সকলের সম্মতির ভিত্তিতে এই ঘোষণা দেয় তারা।

এর আগে গতকাল সোমবার আবরার হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। বুয়েটে ভর্তি পরীক্ষার কারণে গত রোববার ও গতকাল সোমবার আন্দোলন শিথিল করা হয়।

আবরার হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া ১৯ জনের মধ্যে চারজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

৬ অক্টোবর শেরেবাংলা হলে আবরারকে পিটিয়ে হত্যা করেন বুয়েট ছাত্রলীগের একদল নেতা-কর্মী। আবরার বুয়েটের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের (১৭তম ব্যাচ) ছাত্র ছিলেন। তিনি থাকতেন বুয়েটের শেরেবাংলা হলের নিচতলায় ১০১১ নম্বর কক্ষে। ঘটনার দিন তাঁকে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয় একই হলের ২০১১ নম্বর কক্ষে। ওই কক্ষে তাঁকে নির্যাতন করে বুয়েট ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। রাত ৩টার দিকে হল থেকেই তাঁর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

এর পর থেকে শিক্ষার্থীরা আবরার হত্যার ঘটনায় খুনিদের সর্বোচ্চ শাস্তি, বুয়েট ক্যাম্পাসে সাংগঠনিক ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করাসহ ১০ দফা দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে গত শুক্রবার সন্ধ্যায় বুয়েট ক্যাম্পাসে সাংগঠনিক ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন উপাচার্য অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম। বুয়েটের কোনো শিক্ষার্থী ছাত্ররাজনীতিতে জড়িত হলে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণাও দেন তিনি। 


সর্বশেষ সংবাদ