বশেমুরবিপ্রবি ভিসির পদত্যাগের দাবিতে চবি শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন

মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা  © টিডিসি ফটো

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের উপর হামলার প্রতিবাদে ও উপাচার্য খোন্দকার নাসির উদ্দিনের পদত্যাগের দাবিতে মানববন্ধন করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

রবিবার( ২২সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার চত্বরে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আয়োজনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে এ দাবি জানান তারা। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থী ও সমাজতত্ত্ব বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মাইদুল ইসলাম উপস্থিত থেকে সমর্থন জানান।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী দেওয়ান তাহমিদের সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য রাখেন,ইতিহাস বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সব্যসাচী ইমন,অর্থনীতি বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র আবিদ খন্দকার,রাজেশ্বর দাস গুপ্ত, একই বিভাগের প্রথম বর্ষের জাহিদুল হাসান,নৃবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী নোমান হোসেন,ইংরেজি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী এমদাদুল হক,ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃত বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আরজু আহামেদ, যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী এন এম নাছির উদ্দীন।

এদিন মানববন্ধনে সমাজতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাইদুল ইসলাম বলেন,বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে মুক্ত চিন্তার জায়গা। যেখানে শিক্ষার্থীরা স্বাধীন মত প্রকাশ করবে। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মুক্ত চিন্তার স্বপ্ন দেখায়।শিক্ষার্থীরা হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ। যদি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী না থাকে তবে সেটি প্রাণহীন।

তিনি বলেন,বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ এই শিক্ষার্থীদের উপর বশেমুরবিপ্রবির উপাচার্যের সন্ত্রাশবাহীনি সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর লেলিয়ে দিয়েছেন।কিন্তু তিনি এখনও তার সিংহাসনে বসে আছেন।

এটাতো হতে পারে না,এটাতো অন্যায়।এটা কি রকম? শিক্ষার্থীদের অভিভাকরা তাদের সন্তানদের আমাদের হাতে তুলে দেয় আমাদের অভিবাবক মনে করে। অথচ আমরা তাদের পিটিয়ে জখম করছি।

তিনি বলেন, একজন ভিসি কোনভাবেই শিক্ষার্থীদের সাথে এরূপ আচারণ করতে পারে না।তাকে জিঙ্গেস করতে পারে না, তার বাবা কোন দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের এসেছিলো কিনা। এটা শিক্ষার্থীদের দমিয়ে রাখার একটি কৌশল। আমরা সব সময় চাই যারা শিক্ষার্থীদের সাথে এরূপ আচারণ করে তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হোক। তারা যাতে সিংহাসন দখল করতে না পারে।

তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের উপর হামলা সহ্য করতে না পেরে একজন সহকারী প্রক্টর পদত্যাগ করেছেন। কিন্তু উপরের লেভেলের লোকজন চেয়ার দখল করে বসে আছেন। আমরা চাই সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে সমস্যাগুলো খুঁজে বের করা হোক। এবং ভিসি তার পদ থেকে সরে যান।

তিনি আরও বলেন,বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে একটি মুক্ত অঞ্চল। আমরা এই স্থান তৈরি করেছি যুদ্ধের মাধ্যমে।তিনি বলেন,এটা চিন্তা করার কোন কারণ নেই বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে রাষ্ট্রের সহজ সরল সম্পর্ক থাকবে।এটা কখনও হতে পারে না।বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে রাষ্ট্রের দন্ধ থাকবে।দন্ধ ছাড়া সমাজে নতুন কিছু সৃষ্টি হতে পারে না।

এছাড়াও মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা তাদের বক্তব্যে বলেন, বশেমুরবিপ্রবি উপাচার্য তার গুন্ডাবাহীনি দিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর যে ন্যাক্কারজনক হামলা চালিয়েছে, আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমরা চাই অবিলম্বে শিক্ষার্থীদের উপর হামলার সঠিক বিচার এবং ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে তার পদ থেকে অপসারণ করা হোক। বক্তারা আরও বলেন,স্বৈরতন্ত্র বিলুপ্তির লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু বশেমুরবিপ্রবি উপাচার্য সেই স্বৈরাতন্ত্রকেই জাগিয়ে তুলেছেন। যেটা শিক্ষার্থীরা মেনে নিতে পারেন না। আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয়ে গণতান্ত্রিক মত প্রকাশের পরিবেশ সৃষ্টি হোক।

তারা আরও বলেন, বশেমুরবিপ্রবি উপাচার্যের আচারণ ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড তার শিক্ষক পরিচয়কে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। যে জায়গায় শিক্ষক পরিচয় প্রশ্নবিদ্ধ সেই জায়গায় তিনি কিভাবে উপাচার্য হতে পারেন।

বক্তারা আরও বলেন,ছাত্র আন্দোলন কখনও বৃথা যায় নি। আমরা হামলাকারীদের বিচার ও উপাচার্যের পদত্যাগ চাই। যদি দাবি মেনে নেওয়া না হয়, তাহলে দেশের সকল শিক্ষার্থীদের সাথে একাত্মতা পোষণ করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃহৎ আন্দোলন গড়ে তুলবে।


সর্বশেষ সংবাদ