বহিষ্কার ইস্যু: বশেমুরবিপ্রবিতে শিক্ষকদের ১৬ দফা

  © ফাইল ফটো

গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে সৃষ্ট বর্তমান পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষাবান্ধব, ন্যায্য ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ এবং শিক্ষক-শিক্ষার্থী সম্পর্ক উন্নয়নের লক্ষ্যে সচেতন শিক্ষক সমাজের পক্ষ থেকে ১৬ দাবি উপস্থাপন করা হয়েছে।

শিক্ষকদের দাবিগুলো হলো:

১। অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের সম্মানিত শিক্ষকগণকে উদ্দেশ্য করে জারি করা সকল অন্যায্য কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রত্যাহার করা।
২। বিগত সময়ে বিভিন্ন বিভাগের চেয়াম্যানশীপের ক্ষেত্রে জ্যেষ্ঠতালম্বনের ঘটনা দ্রুত সংশোধন করা এবং ভবিষ্যতে এর পুনরাবৃত্তি না করার নিশ্চয়তা প্রদান করা।
৩। সকল বিভাগেই বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী প্লানিং কমিটি গঠন নিশ্চিত করা।
৪। বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদ্যমান প্ৰনেশন বিধিমালা সংশোধন ও সকলের জন্য সমান প্রয়োগ নিশ্চিতকরা এবং আপগ্রেডেশনে ক্ষেত্রে শর্ত পূরণের তারিখ থেকেই কার্যকরী করা।
৫। বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল একাডেমিক, প্রশাসনিক পদ ও অবাসিকতাসহ বৈধ সুযোগ প্রদানের ক্ষেত্রে জ্যেষ্ঠতালংঘনের ঘটনাগুলো সংশোধন করা এবং ভবিষ্যতে সকল ক্ষেত্রে জ্যেষ্ঠতা অনুযায়ী বণ্টন নিশ্চিত করা।
৬। বিভিন্ন দাপ্তরিক সভায়, সামাজিক-সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেও শ্রেণীকক্ষে শিক্ষার্থীদের সামনে সম্মানিত শিক্ষকগণের বিরুদ্ধে যেকোনো অসম্মানজনক বক্তব্যের পুনরাবৃত্তি না হওয়ার নিশ্চয়তা প্রদান করা।
৭। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে অগ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগ্য শিক্ষার্থীদের সুযোগ নিশ্চিত করা।
৮। বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ক্ষেত্রেই বাক স্বাধীনতা নিশ্চিত করা।
৯। ছাত্র ভর্তির ক্ষেত্রে শতভাগ স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা।
১০। মেধা যাচাই সাপেক্ষে বিভিন্ন বিভাগে বিদেশী ছাত্র ভর্তি নিশ্চিত করা।
১১। শিক্ষার্থীদের সকল ন্যায্যদাবীর সাথে সংহতি জানাই, বিশেষ করে শিক্ষা সংক্রান্ত শিক্ষার্থীদের সকল ব্যয় বিদ্যমান বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাপেক্ষে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নিয়ে আসা।
১২। ছাত্রদের বিরুদ্ধে জারি করা সকল অন্যায্য কারণ দর্শানোর নোটিশেও একাডেমিক শান্তি প্রত্যাহার করা।
১৩। ভর্তি পরীক্ষার ফর্মের দাম সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাপেক্ষে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নিয়ে আসা।
১৪। ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশের দিনেই ফলাফলের হার্ডকপি সকল ডিন এবং বিভাগীয় প্রধানের বরাবর প্রেরণ করা।
১৫। ভর্তি পরীক্ষার আয়কৃত অর্থসহ সকল আয়-ব্যয়ের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা।
১৬। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপর সকল সন্ত্রাসী হামলায় তীব্র নিন্দা জানাই। বিশেষ করে, সাম্প্রতিক সময়ে সাংবাদিক সমিতির একজন সদস্য (অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী)- এর উপর সংঘটিত ন্যক্কারজনক হামলার দ্রুত বিচার চাই।

এদিকে উপাচার্য প্রফেসর ড. খোন্দকার নাসিরউদ্দিনের পদত্যাগের দাবিতে আমরণ অনশনে বসেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। গতকাল বুধবার রাত থেকে আন্দোলন শুরুর পর আজ দুপুর থেকে প্রশাসনিক ভবনের সামনে তারা এই অনশন কর্মসূচি শুরু করে।

সম্প্রতি ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান কাজ কী’ এই বাক্যটি ফেসবুকে পোস্ট করার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ও দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি ফাতেমা-তুজ-জিনিয়াকে বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। পরে বহিষ্কারের সিদ্ধান্তকে অবৈধ, অমানবিক, স্বাধীন মতপ্রকাশের প্রতিবন্ধক ও সাংবাদিকতার জন্য হুমকি হিসেবে উল্লেখ করে প্রতিবাদ জানিয়েছে বিভিন্ন সামাজিক ও পেশাজীবী সংগঠন। একই সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য খন্দকার নাছির উদ্দীনের বিভিন্ন অনিয়ম ও স্বেচ্চাচারিতার জন্য তার পদত্যাগ দাবি করে বিভিন্ন পক্ষ।

দেখুন: উত্তাল বশেমুরবিপ্রবি, আমরণ অনশনে শিক্ষার্থীরা (ভিডিও)  

দাবির বিষয়ে শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, আমরা যে দাবিগুলো জানিয়েছি সেগুলো আমাদের ন্যায্য অধিকার। কিন্তু দুঃখের বিষয় এই অধিকারগুলো পাওয়ার জন্য এখন আমাদের দাবি জানাতে হচ্ছে। বর্তমানে আমাদের দাবিগুলোর পক্ষে অবস্থানরত শিক্ষকের সংখ্যা বাড়ছে। আমরা আমাদের দাবিগুলো বিষয়ে অত্যন্ত সচেতন এবং দাবিগুলো আদায়ে সর্বোচ্চ সচেষ্ট থাকবো।

এসময় তারা এ সকল দাবি দ্রুততম সময়ের মধ্যে বাস্তবায়নে জন্য প্রশাসনের নিকট অনুরোধ জানিয়েছেন।


সর্বশেষ সংবাদ