পিএইচডির জন্য বিদেশ যেতে হাবিপ্রবি শিক্ষকের অনশন

  © টিডিসি ফটো

দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (হাবিপ্রবি) বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষক জিও (গভমেন্ট অর্ডার-সরকারী অনুমতি) ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমতিপত্র পাওয়ার দাবিতে অনশন কর্মসূচি পালন করেছেন। বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে একাই দাড়িয়ে জিও না দেয়ার জবাব চেয়ে অনশন শুরু করেন তিনি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই শিক্ষকের নাম শক্তি চন্দ্র মন্ডল। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুড প্রসেসিং এ- প্রিজারভেশন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক। ডায়াবেটিক থাকায় অনশনে প্রায় ২ ঘণ্টা দাড়িয়ে থাকার পর তিনি মাথা ঘুরে পড়ে গিয়ে অসুস্থ হয়েছেন। পরে অন্যান্য শিক্ষকরা তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে ভর্তি করে।

জানা যায়, চলতি বছরে বাংলাদেশ থেকে ৫ জন শিক্ষককে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের জন্য স্কলারশিপ দেয় কোরিয়ান সরকার। যাদের মধ্যে ফুড সায়েন্স বিষয়ে স্কলারশিপ পেয়েছেন দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক শক্তি চন্দ্র মন্ডল। এরপর তিনি বিশ্ববিদ্যালয় বরাবরে জিও ও অনুমতির জন্য আবেদন করেন। এ ব্যাপারে জিও দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু জিওতে তারিখ ভুল থাকায় চলতি আগস্ট মাসের ৬ তারিখে সংশোধনের জন্য আবেদন করেন তিনি। কিন্তু তাকে পুনরায় আর জিও দেয়া হয়নি এমনকি অনুমতিপত্রও দেয়া হয়নি।

শিক্ষক শক্তি চন্দ্র মন্ডল বলেন, উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের জন্য (পিএইচডি) ২ মাস আগে আমি কোরিয়া সরকারের স্কলারশিপ পেয়েছি। এরপর বিষয়টি পুরোপুরি নিশ্চিত হয়ে ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র হাতে পাওয়ার পর গত ৬ আগস্ট জিও ও ছাড়পত্র পাওয়ার জন্য আবেদন করি। কিন্তু আমাকে ছাড়পত্র না দেয়ায় এবং সংশোধিত জিও না দেয়ায় আমি কোরিয়ায় যেতে পারছি না। আমার ফ্লাইট ছিল বৃহস্পতিবার। এরই মধ্যে আমি একটি চিঠি পেয়েছি যেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, সাংবাদিকদের সাথে কথা বলায় আমাকে জিও দেয়া হচ্ছে না। এর যথাযথ ব্যাখ্যা প্রদানের পর আমাকে উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশ গমনের অনুমতিসহ জিও প্রদানের বিষয়ে বিবেচনা করা হবে।

তিনি বলেন, আমাকে বিদেশে যেতে না দিলে আমার ক্ষতির পাশাপাশি দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হবে। যাতে করে আগামীতে বাংলাদেশ থেকে স্কলারশিপ বন্ধও করে দিতে পারে কোরিয়ান সরকার।

এ ব্যাপারে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিষ্ট্রার প্রফেসর ডা. ফজলুল হক (বীর মুক্তিযোদ্ধা ) বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি যাতে অক্ষুণ্ণ থাকে তা সকল কর্মকর্তা/কর্মচারীর দায়িত্ব। শিক্ষক শক্তি চন্দ্র মন্ডল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে প্রশ্নবিদ্ধ করে মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য উপস্থাপন করেছে। সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার পাশাপাশি ফেসবুকে বিভিন্ন ধরনের স্ট্যাটাস দিয়েছে। যার কারণে এসব অভিযোগের সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। এসবের ব্যাখ্যা দিলেই তাকে উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশ গমনের অনুমতিসহ জিও প্রদান করা হবে।

পরে ওই দিন বিকেলের দিকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে নিজের কৃতকর্মের জন্য লিখিতভাবে ক্ষমা চাওয়ায় পর শিক্ষক শক্তি চন্দ্র মন্ডলকে বিদেশে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের অনুমতি দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।


সর্বশেষ সংবাদ