বর্ণিল আয়োজনে যবিপ্রবিতে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উদযাপন

বিশ্ব মানের হ্যাচারি ও ওয়েট ল্যাব উদ্বোধন

  © টিডিসি ফটো

বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা, পোনা অবমুক্তকরণ, বিশ্ব মানের হ্যাচারি ও ওয়েট ল্যাব উদ্বোধন, আলোচনা সভা, ফিশ রেসিপির মেলাসহ নানা আয়োজনে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (যবিপ্রবি) জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ ২০১৯ উদযাপিত হয়েছে।

রোববার সকালে যবিপ্রবির ফিশারীজ অ্যান্ড মেরিন বায়োসায়েন্স বিভাগের আয়োজনে এসব কর্মসূচি পালন করা হয়। এ বছর জাতীয় মৎস্য সপ্তাহের প্রতিবাদ্য হচ্ছে ‘মৎস্য সেক্টরের সমৃদ্ধি, সুনীল অর্থনীতির অগ্রগতি।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অংশগ্রহণে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার মাধ্যমে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহের কর্মসূচির শুরু হয়। এরপরে রেওয়াজ অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা পুকুরে বিভিন্ন জাতের পোনা অবমুক্তকরণ করা হয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব একাডেমিক ভবনের পূর্ব পাশে নবনির্মিত বিশ্ব মানের হ্যাচারি অ্যান্ড ওয়েট ল্যাব উদ্বোধন করেন যশোর-১ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব শেখ আফিল উদ্দীন।

বাংলাদেশের মৎস্য সম্পদের টেকসই উৎপাদনে কৌল তাত্ত্বিক গবেষণা, গুণগত মানের মাছের পোনা উৎপাদন, মা মাছের পুষ্টি ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা এবং একাডেমিক গবেষণাকে এগিয়ে নিতে এই হ্যাচারি ও ওয়েট ল্যাব প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।

এরপর বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্যালারিতে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উপলক্ষে আয়োজন করা হয় আলোচনা সভা। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে যশোর-১ আসনের সংসদ সদস্য হাজী শেখ আফিল উদ্দীন বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টিপাত হচ্ছে না। ফলে মাছ চাষের জন্য ভূগর্ভস্থ পানির উপর নির্ভর করতে হচ্ছে। কিন্তু সেই পানি শতভাগ বিশুদ্ধ নয়। ফলে মাছ চাষে নানা ধরনের বিঘ্নতার সম্মুখীন হতে হচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারীজ অ্যান্ড মেরিন বায়োসায়েন্স বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, মাছ চাষে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে হলে আমাদের আরও গবেষণার উপর জোর দিতে হবে। দেশীয় উপাদানসমূহ ও কাঁচামালের সহায়তায় মাছের খাদ্য উৎপাদন আরও কিভাবে বাড়ানো যায়, নতুন জাত উদ্ভাবন করা যায়, সে বিষয়ে আরও গবেষণা করতে হবে। এক্ষেত্রে আপনাদের বিভাগের প্রয়োজনে সব সময় আমাকে পাশে পাবেন।

বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেনকে উদ্দেশ্যে হাজী শেখ আফিল উদ্দীন বলেন, আপনার চিন্তা-চেতনা দিয়ে এ বিশ্ববিদ্যালয়কে যেভাবে একটি বিশ্ব মানের বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তরের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন, এ ক্ষেত্রে আমাকে সব সময় আপনার পাশে আমাকে পাবেন।

সভাপতির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং জেনোমিক রিসার্চই আগামী বিশ্বকে নেতৃত্ব দেবে। সুতরাং এ দুটি জিনিসকে যদি আমরা কাজে লাগাতে পারি, তাহলে বাংলাদেশকে যে পর্যায়ে দেখতে চাই, সেই পর্যায়ে চলে যাবে। দেশকে বাঁচাতে হলে, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে হলে গবেষণার মাধ্যমে নতুন নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবনের কোনো বিকল্প নেই।ৎ

তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের লক্ষ্য হলো আমরা চাকরি চাইবো না, চাকরি দেবো। সুতরাং ফিশারীজ অ্যান্ড মেরিন বায়োসায়েন্স বিভাগ থেকে যারা বের হচ্ছো; আশা করি, এক সময় তোমরা দেশের একেকজন নামকরা উদ্যোক্তা হবে। এ বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরবে।

আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. আনিছুর রহমান, জীববিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন কিশোর মজুমদার, ফিশারীজ অ্যান্ড মেরিন বায়োসায়েন্স বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. সিরাজুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. মো. আমিনুর রহমান, অধ্যাপক ড. সুব্রত মন্ডল, যশোর জেলা মৎস্য হ্যাচারি মালিক সমিতির সভাপতি আলহাজ্ব ফিরোজ খান, ফিশারীজ অ্যান্ড মেরিন বায়োসায়েন্স বিভাগের শিক্ষার্থী রেজোয়ান বিশ্বাস প্রমুখ। আলোচনা সভা পরিচালনা করেন ফিশারীজ অ্যান্ড মেরিন বায়োসায়েন্স বিভাগের শিক্ষার্থী হাবিবা ইসলাম ও টুটুল সাহা।


সর্বশেষ সংবাদ