স্বপ্নের নাসায় যাওয়া হলো না ওদের
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২০ জুলাই ২০১৯, ০৩:৩৩ PM , আপডেট: ২০ জুলাই ২০১৯, ০৪:১৮ PM
যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা আয়োজিত স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জে বিজয়ী হয়েও যেতে পারেননি শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের চার সদস্যর টিম ‘অলিক’। গত ফেব্রুয়ারি মাসে ‘বেস্ট ইউজ অব ডেটা’ বিভাগে টিম অলিকের তৈরি ‘লুনার ভিআর’ সারা বিশ্বের ১ হাজার ৩৯৫টি দলের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে বিজয়ী হয়। পরে নাসা থেকে সেখানে যাওয়ার আমন্ত্রণ পেয়েছিল চার সদস্যর টিম ‘অলিক’।
২১-২৩ জুলাই থেকে ফ্লোরিডার নাসা কেনেডি স্পেস সেন্টারে আয়োজিত হচ্ছে প্রতিযোগিতাটি। কিন্তু ভিসা না পাওয়ায় তারা সেখানে যেতে পারছেন না। এ কারণে তাঁদের ছাড়াই সেখানে তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাসহ আট সদস্যের প্রতিনিধিদল পোঁছে গেছে। অলিকের সহযোগী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠাতে তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের ছয় কর্মকর্তা, বেসিসের পাঁচজনসহ মোট ১৬ জনের একটি তালিকা করা হয়েছিল।
বিজয়ী টিম অলিকের সদস্যরা হলেন জিওগ্রাফি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট বিভাগের ছাত্র আবু সাবিক মাহদি ও কাজী মইনুল ইসলাম, একই বিভাগের সাব্বির হাসান, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের এস এম রাফি আদনান। নাসার ওই প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় থেকে প্রাথমিকভাবে ওই চার প্রতিযোগীসহ তালিকায় থাকা প্রতিনিধিদের জনপ্রতি ২ লাখ ৭৭ হাজার টাকা করে বাজেট দেওয়া হয়েছিল।
মাহদি জানান, গত ২৯ মে ও ১২ জুন দুটি আলাদা ই-মেইলের মাধ্যমে তাদের আমন্ত্রণ জানায় নাসা এবং ২১ জুন নাসা থেকে প্রত্যেক সদস্যের নাম উল্লেখ করে আমন্ত্রণপত্র পাঠিয়েছিল। কিন্তু তাঁরা কেন যেতে পারছেন না, তা বুঝতে পারছেন না।
মাহদি টিম অলিকের পেজে এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘৩০ মে বাংলাদেশ থেকে ১৩ জনের একটা দলের তালিকা কমিউনিটি ম্যানেজারকে পাঠানো হয়। এ সময় তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ থেকে জানানো হয়, আইসিটি ডিভিশন আমাদের সকল খরচ বহন করবে এবং একই সঙ্গে নাসাকে ধন্যবাদ দেওয়ার জন্য কয়েকজন সরকারি কর্মকর্তা আমাদের সঙ্গে যুক্ত হবেন। তাঁরা জানান, আমাদের মেন্টরের খরচ তাঁরা বহন করবেন না। পরবর্তী সময়ে মেন্টর ইউনিভার্সিটি এবং ইউজিসি থেকে খরচের ব্যবস্থা করেন। ২৭ জুন আইসিটি ডিভিশন থেকে ৬ জনসহ সর্বমোট ১৬ জনের নাম উল্লেখ করে একটি পত্র দেওয়া হয়, যাঁদের মধ্যে ১৩ জনের খরচ আইসিটি ডিভিশন বহন করবে।’
ভিসা না মেলায় তাঁরাসহ বিজয়ীদের কেউই যাওয়ার সুযোগ না পেলেও শুক্রবার রাতে নাসার অনুষ্ঠানে যোগ দিচ্ছেন আইসিটি মন্ত্রণালয়ের ডেপুটি সেক্রেটারি সালমা সিদ্দিকা মাহাতাব, মো. আবুল খায়ের, হাইটেক পার্কের ডেপুটি সেক্রেটারি মো. আবদুল হাই, আইডিয়া প্রোজেক্টের কাজী হোসনা আরা ও আইসিটি ডিভিশনের প্রতিমন্ত্রীর ব্যক্তিগত কর্মকর্তা একরামুল হক এবং বেসিসের পরিচালক দিদারুল আলম সানি, বাংলাদেশ ইনোভেশন ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা আরিফুল হাসান।
মাহদি বলেন, ‘শেষ পর্যন্ত আমরা ভিসার চেষ্টা করেছি। আমরা এই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারছি না। নাসার আমন্ত্রণ রক্ষা করতে হলে ২০ জুলাইয়ের মধ্যে তাদের নাসাতে উপস্থিত হতে হবে। সেখানে ২১, ২২ ও ২৩ জুলাই নাসার বিভিন্ন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে। ২১ জুলাই রকেট ফ্যালকন-৯-এর সিআরএস-১৮ মিশনের মহাকাশে উৎক্ষেপণ এবং ২২ ও ২৩ জুলাই অন্যান্য কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে।’
এ তালিকায় যাঁদের নাম পাঠানো হয়েছিল, তাঁরা হলেন টিম মেন্টর হিসেবে বিশ্বপ্রিয় চক্রবর্তী, প্রকল্প পরিচালক হিসেবে বেসিসের জনসংযোগ কর্মকর্তা ওয়াসেক সাজ্জাদ, প্রকল্প সচিব হিসেবে বেসিসের সচিব হাশিম আহমেদ, লজিস্টিক ব্যবস্থাপক হিসেবে বেসিসের ডেপুটি ব্যবস্থাপক মনিরুল হক। তাঁরা যেতে পারেননি।
নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ-২০১৮–এর আহ্বায়ক ও বেসিসের পরিচালক দিদারুল আলম সানি বলেন, ‘প্রতিযোগীদের ভিসা পাওয়ার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা চালানো হয়েছে। এরপরও ভিসা না পেয়ে প্রতিনিধি হিসেবে আমরা নাসাতে যাচ্ছি। ভিসা না হওয়ার বিষয়টি নাসাকে অবগত করা হয়েছে। বুধবার নাসা থেকে পাঠানো এক মেইলে প্রতিযোগী চার শিক্ষার্থীকে বাংলাদেশ থেকেই ভিডিও কনফারেন্সে যোগ দিতে বলা হয়েছে।’